Sunday, September 16, 2018

কফি

- বৃষ্টিটা কেমন হঠাৎ নামল দেখেছেন?

- যা গুমোট ভাব ছিল সন্ধে থেকে, সারপ্রাইজড হইনি।

- আপনিও কি ঝাঁঝা?

- ওই ট্রেনের জন্যেই বসে। তবে আমি কিউলে নামব।

- দেশলাই আছে? শেড পর্যন্ত ছুটে আসতে আসতে এক্কেবারে ভিজে কাক। পকেটের দেশলাইটা এক্কেরে ল্যাতপ্যাত করছে।

- আসুন। এই যে। শেষ কাঠি আছে। সাবধানে।

- থ্যাঙ্কস। কী বিশ্রী একটা স্টেশন বলুন দেখি। একটাও বাতি নেই। একটা চায়ের দোকান অন্তত পেলে...।

- হাতিদায় নতুন বুঝি?

- আসানসোল থেকে এসেছি। ব্যবসাপত্তরের কাজে যে কোথায় কোথায় ঘুরতে হয়। তবে এমন ধ্যাধ্ধেড়ে রেল জংশন মশায় আগে দেখিনি।

- ফ্লাস্কের কফি চলবে? যদি অচেনা অজানা লোকের ফ্লাস্ক থেকে কফি খেয়ে অজ্ঞান হয়ে বাক্সপ্যাঁটরা খোয়া যাওয়ার ভয় না পান তবেই...।

- ভেজাগায়ে কফির অফার পায়ে ঠেলতে নেই। এই জনহীন প্ল্যাটফর্ম, তার ওপর অন্ধকার আর তার ওপরে এই বৃষ্টি। ও কফি ফেরালে পাপ হবে।

***

- বলেন কী? লোকে ট্রেনে-প্ল্যাটফর্মে চা-কফি খাইয়ে অজ্ঞান করে মালপত্তর হাপিস করেছে শুনেছি। আপনি কফি খাওয়াতে গিয়ে অজ্ঞান হলেন?

- হব না? আরে কঙ্কালের হাত! ধবধবে ফ্লুরোসেন্ট সাদা হাড়! বরফের মত ঠাণ্ডা! তাই বলে ভূতে যে সুটকেস চুরি করে পালাবে সে'টা ভাবতে কেমন অদ্ভুত লাগছে বুঝলেন।

***

- মামা গো! একটু পায়ের ধুলো দাও মামা। পকেটমারির চেষ্টা করে হন্যে হয়ে যাচ্ছি আর এ'দিকে তুমি টপাটপ সুটকেস সরিয়ে দিচ্ছ। হাতিদা স্টেশনে যা মাল সমেত বাক্স হাতালে তা দিয়ে দেখছি মাসখানেক কেটে যাবে।

- বোমা বাঁধতে গিয়ে হাত উড়ে যাওয়াটা একপ্রকার আশীর্বাদই হল, তাই না রে ভাগ্নে? অবিশ্যি ফলস কঙ্কালের হাত ফিট করতে ঝক্কি কম নয়, রীতিমত অধ্যাবসায় দরকার। ব্যবহারে ফোকাস দরকার। আর প্র‍্যাক্টিস। তবে হাতিদায় ভদ্রলোককে কাবু করতে বড় বেগ পেতে হয়েছিল রে। ব্যাটা দেশলাই দেওয়ার সময় আমার হাতের দিকে তাকালোই না। স্ট্রেঞ্জ। ভাগ্যিস ভদ্রলোক কফি অফার করেছিলেন। যাক গে...কফিটা বড় ভালো ছিল রে, ভিজেগায়ে কাঁপতে কাঁপতে সে উষ্ণ চুমুক ভোলার নয়।

No comments: