"মিউজিক"।
একটা শব্দে বৃদ্ধ নুয়ে পড়েন। অনুপ সে'টা ভালো মতই জানে। রহিস বুড়োকে দেখভালের জন্য অবশ্য লোকের অভাব নেই। আয়া, পরিচারিকা, নার্স মিলে জনা চারেক সেবিকা চব্বিশঘণ্টা তাঁর সেবাশুশ্রূষায় মগ্ন। অনুপের কাজটা অবশ্য অন্য। তাঁকে সঙ্গ দেওয়া। বই পড়ে শোনানো। খবরের কাগজ পড়ে শোনানো। চিঠিপত্রের উত্তর দেওয়া। হুইলচেয়ারের সাথে সাথে বাগানে হাঁটতে বেরনো। ইত্যাদি। তবে অনুপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে "মিউজিক"।
বৃদ্ধ আরথ্রাইটিসের ব্যথায় ককিয়ে ওঠেন মাঝেমাঝেই। সে কী অসহ্য যন্ত্রণা আর বৃদ্ধের সে কী আর্তি। যন্ত্রণা গাঢ় হলেই বৃদ্ধ কাঁপা ঠোঁটে ফরমায়েশ করেন "মিউজিক"। অনুপ তখন রকমারি গান চালিয়ে বৃদ্ধের ব্যথা শান্ত করে।
সঙ্গীত। মেঘ মেঘ, নীল নীল, তুলো তুলো স্বপ্নের মত। গলায় বুকে কানে দানা দানা তুষার কুচির মত আদর জমে থাকে; তা'তে যাবতীয় ব্যথা জব্দ হয়। ঝর্ণার ঝুরঝুরের মত শীতল হয়ে ওঠে বুকের ভিতরটা।
অনুপ জানে। বৃদ্ধ সঙ্গীতে বেঁচে।
**
- খোকা!
- বলো বাবা।
- বলছিলাম, অনুপকে কি হসপিটাল থেকে আজ রিলীজ করবে?
- অনুপ? হসপিটাল?
- অনুপ। আমার সেক্রেটারি।
- উফ। তোমায় স্মার্টফোন কিনে দিয়ে যে কী বিপদজনক ভীমরতি ধরিয়েছি। ফোনের নাম অনুপ? কোনও মানে হয়? মাদার বোর্ডে প্রবলেম,সার্ভিস সেন্টার থেকে বলেছে দিন দুয়েক লাগবে আরও।
- আহ, সার্ভিস সেন্টার কেন বলিস! হসপিট্যাল বল। অনুপকে বড্ড মিস করছি। বড্ড।
Comments