Skip to main content

থিওরি অফ চলে যাওয়া

- আবার।
- আবার।
- উফ।
- ধুস।
- তবে তুই বড় হয়ে গেছিস। আর নাকেরজলে চোখের জলে এক হওয়া নেই।
- কোনওদিনও হইনি।
- আচ্ছা। বেশ। হোসনি।
- আমি তোর চেয়ে বড়। দু'দিনের।
- দিব্যি। ডেঁপো। ভিতরে ঘোড়ার ডিম।
- উফ। ফের মাতব্বরি।
- সাবধানে থাকিস বাবু।
- হুঁ। তুইও।
- চোখের আড়াল হলেই সাপের পাঁচ পা দেখিস না।
- হুঁ।
- আর কথা বলবি না?
- উঁহু।
- ট্রেন। ছাড়লো বলে।
- হুঁ।
- ক্যুইক। কিছু বল।
- উঁহু।
- চলে যাওয়াদের ভয় পেতে নেই। তাই না?
- হুঁ।
- জামার ওপরের বোতাম খুলে রেখেছিস কেন? লায়েক হয়েছিস?
- ভু..। ...লে।
- উফফ!
- সিগন্যাল। দিয়ে দিয়েছে।
- জানালা ছাড়।
- হুঁ।
- ছাড়। ট্রেন..।
- নড়ছে।
- লায়েক হাবভাব নিয়েই ঘোর, তোর আর বড় হওয়া হল না।
- ও কিছু না। শার্টের বোতাম খোলা ছিল। ঠাণ্ডাটা...আচমকা। বসে গেছে।
- আসি।
- আয়।

**
সদ্য নড়তে শুরু করা প্ল্যাটফর্মটা ঝুকুর ঝুকুর শব্দে ট্রেনটাকে ফেলে রেখে এগিয়ে গেলো। লিলুয়া পেরোলেই ঝুকুরঝুকুর ছেড়ে ঝমঝমে গতি ধরে প্ল্যাটফর্মগুলো।

**

এমন দড়াম করে ঘুম ভাঙাটা অ্যালবার্টের কাছে নতুন কিছু নয়। নতুন যে'টা সে'টা হচ্ছে ঘরের ডান দিকের জানালার সামনে রাখা ইজিচেয়ারে হেলান দিয়ে বসা ভদ্রলোক। জার্মান বা আমেরিকান নন, নির্ঘাত ভারতীয়। গায়ে কালো কোট, মাথায় টুপি, শার্ট আর প্যান্ট ধবদবে সাদা। ভদ্রলোকের মুখে একটা হতচকিত ভাব।

- হু আর ইউ?
- মী সাহেব? টিকিট চেকার। অন কালকা মেল। প্রবলেম ওয়াজ। রিকুয়েস্টেড আ ইয়ং গার্ল ফর টিকিট-শোয়িং। বাট শি সেড, ট্রেন নট মুভিং, প্ল্যাটফর্ম মুভিং, সো হোয়াই টিকিট? গেট ডাউন অ্যান্ড আস্ক টিকিট ফ্রম প্ল্যাটফর্মওলাস। আই ওয়াজ কনফিউজড। আই স্ক্র‍্যাচড মাই হেড। বাট সাডেনলি আই অ্যাম হিয়ার সাহেব। ইজ ইট আ স্বপ্ন স্যার?
- স্বপ্ন?
- ড্রীম? ইজ ইট আ ড্রীম?
- মে বি। হাউ ডু আই নো? ইউ কাম ফ্রম আ প্লেস হোয়্যার প্ল্যাটফর্মস মুভ বাট ট্রেনস ডোন্ট।
- কী ঝামেলা।
- ইউরেকা!
- সাহেব? কেয়া হুয়া? হোয়াট হ্যাপেন্ড?
- লুক ব্রাদার। ইফ দিস ইজ আ ড্রীম, আই বেটার ওয়েক আপ। আই হ্যাভ আ নিউ থিওরি টু এস্ট্যাব্লিশ। থিওরি অফ রিলেটিভিটি।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

ব্লগ-বাজ

আর চিন্তা নেই । বাঙালিকে আর রোখা যাবে না । আর সামান্য (সম্ভবত কিঞ্চিত গোলমেলে ) কবিতা ছাপাবার জন্যে সম্পাদক কে তোল্লাই দিতে হবে না । আর প্রেমে লটরপটর হয়ে ডায়েরি লিখে প্রাণপাত করতে হবে না। পলিটিক্স কে পাবলিক-জন্ডিস বলে গাল দেওয়ার জন্য আর “প্রিয় সম্পাদক” বলে আনন্দবাজারের ঠ্যাং ধরতে হবে না। কেন ?  হোয়াই? বাঙালি ব্লগিং শিখে গ্যাছে যে। ঘ্যাচাং ঘ্যাচাং করে শাণিত তলোয়ারের মত “ পোস্ট”-সমূহ জনতার ইন্টেলেক্ট এসপার-ওসপার করে দেবে ; হাতে-গরম গায়ে-কাঁটা। বাঙালি মননের নব্য জিস্পট ; ব্লগ-স্পট । কে বলে যে বাঙালি ব্রিগেডে বুক্তুনি দিয়ে আর ফুটবল মাঠে খেউড় করে খতম হয়ে গ্যাছে ? কে বলে যে বাঙালির ঘিলু কফি হাউসে ভাত ঘুমে মগ্ন ? বাঙালিকে একবার ব্লগখোর হতে দিন , সমস্ত অভিযোগ ভ্যানিশ হয়ে যাবে । পোপ থেকে পরশুরাম ; ডেঙ্গু থেকে মশাগ্রাম ; বং-ব্লগের দাপট রইবে সর্বত্র । বাঙালির সমস্ত আশা-ভরসা-জিজ্ঞাসা এইবারে ব্লগ মারফত্‍ পৌছে যাবে ট্যাংরা ট্যু টেক্সাস । তোপসে মাছের স্প্যানিশ ঝোলের রেসিপি কী ? বাঙাল-ঘটি মিল মহব্বত-হয়ে গেলে কি বাঙ্গালিয়ানা চটকে যাবে ? নেতাজী কি এখ

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু