Skip to main content

কলকাতা বিরিয়ানি সিরিজ

( ছবিটি এখান থেকে নেওয়া - www.missionsharingknowledge.wordpress.com)

গল্প ১  

ঈশ্বর – ভক্ত। তোমার তপস্যায় আমি অতি খুশি। বর দিতে চাইছি।

ভক্ত  – থ্যাঙ্ক ইউ স্যার।হে হে হে হে...

ঈশ্বর - হয় তুমি জীবনভর পাবে ফ্রি বিরিয়ানি। দৈনিক এক প্লেট; সিরাজের হেঁসেল থেকে। নয়তো রম্ভা ও উর্বশী তোমায় দিনে একটি করে চুমু খাবে। জীবনভর। বিরয়ানী না চুমু ? যে কোন একটি বেছে নিতে হবে তোমায় বাপু।

ভক্ত  - মাউথ-ফ্রেশনার আর লিপ্‌-বাম’য়ের পিছনে এক গাদা খরচ করবার কোনও মানেই হয় না স্যার।

গল্প ২  

এক প্লেট স্পেশাল-মাটন-বিরিয়ানি অর্ডার দিয়ে চেয়ারে গা এলিয়ে দিলেন পরিতোষ। আরসালান আর ঠাকুরদালান’য়ের মধ্যে যে আন-ক্যানি ছন্দ মিল রয়েছে, সেটা ভাবতেই পরিতোষের মনের সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে গেল।

গল্প ৩

এভারেস্টের চুড়োয় পা রাখতেই বুকের ভেতর আনচান করে উঠলো শুভেন্দুর। কত দিনের স্বপ্ন। কত দিনের স্ট্রাগ্‌ল। কত দিনের সাধনা। স্বপ্ন স্পর্শের গন্ধ কি সুন্দর। শুভেন্দুর নিজেকে কল্কাতাইয়া বিরিয়ানির আলুর সঙ্গে তুলনা করতে ইচ্ছে হল।  

গল্প ৪

পুত্র – এই লাপসি খিচুড়ি খেতে আর ইচ্ছে করে না বাবা।  আমার শরীর কি কোনও দিনও ঠিক হবে না ? আমি কি কোনও দিনও অভিক, রাহুলদের মত বিরিয়ানি খেতে পারবো না ?

পিতা – আলবাত তোর শরীর ভালো হয়ে যাবে। ডাক্তার-কাকু কি বললেন ভুলে গেলি ব্যাটা ? ফাইট করতে হবে। পারবি না? আফটার অল, তোর পুল শটগুলো কিন্তু অবিকল যুবরাজের মত। আর বিরিয়ানি ? শোন সন্তু, বিরিয়ানি ইজ এ স্টেট অফ মাইন্ড। বুঝলি! তুই যদি খুব কনসেন্ট্রেট করিস, এই গোবিন্দভোগ চালের খিচুড়ি থেকেও মুঘলাই বিরয়ানীর ফ্লেভার পাবি। ইট্‌স অল ইন দ্য মাইন্ড গুরু। বিরিয়ানিতে যেমন আলু থাকে, খেয়াল করে দেখিস এই খিচুড়িতেও আমি সেরকম শেপেই আলু দিয়েছি। আর এই ঢ্যাঁড়শ ভাজার সঙ্গে কি তুই সত্যির পাঁঠার টুকরোর কোনও মিল খুঁজে পাস না সন্তু ? আমায় ছুঁয়ে বল!

পুত্র – আমার অবশ্য পাঁঠার স্বাদ মনে নেই। কিন্তু বাবা, আমার মনে হয় আমি একটু একটু বিরিয়ানি গন্ধ পাচ্ছি...উমমমম্‌...আর এক চামচ বিরিয়ানি দাও প্লিজ

গল্প ৫

রবীন্দ্রনাথ – আমি কোলকাতাকে জোড়াসাঁকো দিয়েছি, গান দিয়েছি, সদন দিয়েছি, ইন্টেলেক্ট দিয়েছি, শান্তিনিকেতনি ঝোলার কেত দিয়েছি, কবিতা দিয়েছি, শেষের কবিতায় প্রেমের ম্যানুয়াল দিয়েছি...তুমি কি দিয়েছ, ভায়া ?

** দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা, শিরদাঁড়া কনকনানো সাসপেন্স **

ওয়াজিদ আলি শা – আমি কোলকাতাকে বিরিয়ানি দিয়েছি।

** তুমুল হাততালি, “জিও পাগলা” ধ্বনি **



Comments

“ দণ্ডিতের সাথে
দণ্ডদাতা কাঁদে যদি দেখে তারে পাতে...
সর্বশ্রেষ্ঠ সে বিরিয়ানি।"
Anonymous said…
মাসাআল্লাহ
অবি-ভূত (বানান ভুল করি নাই, হর্ষে আর্ষ প্রয়োগ করিলাম)
অবি-ভূত (বানান ভুল হইয়া থাকিলে ইচ্ছাকৃত নহে, হর্ষে আর্ষ প্রয়োগ হইয়া গিয়াছে) :-D
কোনো কথা হবে না বস্‌, পুরো জিভে জল কেস। :)
'বিরিয়ানি ইজ এ স্টেট অফ মাইন্ড' - চুরি যাওয়া নোবেল'টা আমার কাছে থাকলে শিওর আপনাকে দিয়ে দিতাম।
Anonymous said…
বিরিয়ানি গল্প মনে পরিয়ে দিল কলকাতার পার্ক সারকাসে বসে আড্ডার দিন - সে জিনিস ভলার নয়। আপনার ব্লগ ভাল লাগল।

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু