Skip to main content

নিউজ চ্যানেল



- খোকা! স্যাট স্যাট করে টিভির সামনে এসে না পড়লেই নয়?

- আহ! টিভি না পেরিয়ে ফ্রিজ পর্যন্ত পৌঁছব কী করে? আর ফ্রিজেই তো ছানার জিলিপির বাক্স।

- ছানার জিলিপি? দেশ গোল্লায় যাচ্ছে আর উনি ছানার জিলিপির জন্য আমার কনসেন্ট্রেশনে ফিনাইল ঢালছেন।

- দেখছ তো নিউজ চ্যানেল, তার আবার কনসেন্ট্রেশন কীসে।

- দেশের পলিটিকাল ক্রাইসিস সম্বন্ধে খবর রাখার প্রয়োজন বোধ করিস?

- ক্রাইসিস? ও তোমার এই খবরের চ্যানেলগুলোর বাড়াবাড়ি।

- বাড়াবাড়ি? বটে? অ্যাডাম স্মিথ সামান্য দু'পাতা উলটে দেখলে বুঝতিস। দেশের পলিটিকাল হিস্ট্রি একটু দরদ দিয়ে পড়লে টের পেতিস যে কী ভোলাটাইল সিচুয়েশনে আমরা বাস করছি। য়ুরোপের ইতিহাস ঘেঁটে দেখলেই জানতে পারবি যে...।

- মাইরি বাবা। দেখছ তো নিউজচ্যানেলের গাঁজা চিৎকার চ্যাঁচামেচি, এ'দিকে কোট করবে মার্ক্স স্মিথ অরবিন্দ। এক পিস জিলিপি খাবে?

- একটা গোটা জেনারেশন নেরোর মত জিলিপির বেহালা হাতে সং সেজে দাঁড়িয়ে আছে। তোদের দেখে খুব চিন্তা হয় রে খোকা।

- দু'টো জিলিপিই পড়ে আছে বোধ হয়।

- ফের জিলিপি? এ'দিকে দেশের মধ্যে ক্রাইসিস...ফের যদি টিভির সামনে এসেছিস...।

- এর চেয়ে সিরিয়াল দেখো বাবা, কানে ও মনে পলিউশন কমবে।

- পলিটিকাল ডিবেট শোনা মানে মনকে পলিউট করা?

- আলবাত! এ'গুলো ডিবেট কই, এ তো ইটপাটকেল ছুঁড়ছে।

- শোন, এ'সব টিভি ডিবেটের দুধে জল মিশবেই...আমাদের কাজ হচ্ছে জল সাইড করে দুধটুকু সাবাড় করা।

- জল বাদ দিয়ে দুধ?

- ইয়েস।  আর তার জন্য লাগে অ্যাওয়ারনেস, দরকার পড়াশোনা। শুধু নেটফ্লিক্স নেটফ্লিক্স করে বাঁদুরর লাফ লাফালে কাঁচকলা হবে।

- বটে? তা গত দু'ঘণ্টা ধরে যে দ্রাবিড়ের কনসেন্ট্রেশনে এ'সব নিউজ চ্যানেলের ডিবেট শুনলে, তা'তে তুমি জল বাদ দিয়ে কোন জ্ঞান গ্রিপ করেছ? কী'ভাবে এনরিচড হয়েছ?

- রীতিমতো এনরিচড হয়েছি।

- রিয়েলি?

- হান্ড্রেড পার্সেন্ট।

- বেশ, বলো তা'হলে এই চিৎকার আর গোলমাল থেকে তুমি কী জ্ঞানলাভ করেছ।

- তোকে বলতে যাব কেন?

- বলবে নাই বা কেন?

- শোন তবে, এতক্ষণে কী বুঝেছি।

- বলো। শুনি। কী বুঝেছ।

- আমি বুঝেছি যে শেষ ছানার জিলিপির জোড়াটা আমার বড্ড দরকার। একটা প্লেটে করে দিয়ে যাবি বাবু? আর রিমোটটা দিয়ে যা বুঝলি, দেখি কোনো ভালো সিনেমাটিনেমা চলছে কিনা।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু