Skip to main content

নেশাভাং

- হ্যালো!
- হুঁ।
- বাবু, শুভ বিজয়া।
- হুঁ?
- শুভ। বিজয়া।
- শু..শুভ।
- এ'বারেও মন্টুদারা সিদ্ধিতে তামা ঘষে দিয়েছে?
- আমি ভাবলাম তোর সঙ্গে কথা বলতে নেই।
- নেই তো।
- তাহলে...ফোন করলি কেন?
- এমনি।
- আমি ফোন করব? কাল?
- না?
- কেন?
- তোর ফোন করতে নেই।
- ওহ। কিন্তু তুই ফোন করতে পারিস?
- পারি। সবসময় নয়। এই যেমন আজ, তোর জ্ঞানগম্যি যখন গুলিয়ে গেছে।
- ভাবছি...।
- তুই ভাবিস? বাবু?
- ওহ,  ভাবতে নেই?
- ভাবলে কেরিয়ারের কথা আর একটু মন দিয়ে ভাবতিস। অন্তত মায়ের কথা ভাবতিস। সে যাক, এখন কী ভাবছিলিস?
- সিদ্ধির জন্য বিজয়াদশমী পর্যন্ত ওয়েট না করে যদি মাঝেমধ্যেই...।
- মাঝেমধ্যেই আমাদের কথা বলতে নেই।
- ওউক্কে। আন্টিল নেক্সট বিজয়া দশমী দেন।
- কেন এমন করিস?
- যাস না।
- আমি নেই তো। যাব কই?
- ট্রু। সরি। শুভ বিজয়া।
- সাবধানে থাকিস। কেমন?
- যাস না।
- আবার?
- সরি।
- সামনের বিজয়ার সিদ্ধির আগে আর কোনও নেশাভাঙ নয়, কেমন?
- তোর শশীকাকাকে মনে আছে?
- স্কুলের বিহারী দারোয়ান? তুই যার সঙ্গে লুকিয়ে তাস খেলতিস?
- হুঁ।
- তাঁর কী হয়েছে?
- অষ্টমীর দিন মারা গেছেন। ওর বডি নিয়ে ছপড়া এসেছি ওর তিনজন দেশোয়ালির সঙ্গে। নবমী থেকে এখানেই। এ'টা ঠিক সিদ্ধি নয়, জানিস? ভাংয়ের গুলি।
- তুই এখন কোথায় বাবু?
- শ্মশান। পাশে গঙ্গা। চাঁদ, নীলচে কালো আকাশ। শীত শীত হাওয়া। শশীকাকাকে এ পুজোয় একটা ফতুয়া কিনে দিয়েছিলাম। আই জিঙ্কসড হিম। না রে?
- ধুর বোকা।
- কী ভয় রে। কী ভয়। ভূতের নয়।
- জানি।
- আই জিঙ্কস এভ্রিওয়ান।
- একটা চড় মারব।
- হেহ্।
- বাড়ি কবে ফিরছিস?
- যবে, তবে।
- তোর সর্দি লেগেছে?
- আমায় ফোন করিস না আর।
- ছিঃ বাবু।
- করিস না।
- আচ্ছা।
- জানিস, নতুন ফতুয়াটাও চিতায় চড়িয়ে এসেছি। বড় ভালো হনুমানের গান গাইত শশীকাকা। বড় দরাজ গলা। ভাব আসলে চোখ বেয়ে অঝোরে জল পড়ত। ট্রু সেন্ট। জুয়া না খেললে চুরি করত না।
- আমিও খুব ভালো হনুমানের গান গাইতে পারি। তোর ল্যাজটা থাকলে বেশ টের পেতিস।
- হেহ্। তোকে সেই যে একবার একটা শাড়ি দিলাম...। জিঙ্কস সে'খানেই হল।
- ক্যাটক্যাটে লাল! জিঙ্কস হওয়াই ভালো। এখন রাখি। কেমন?
- আয়। শুভ বিজয়া।
- শুভ। শ্মশান থেকে ফিরে স্নান করিস। আর এ'দিক ও'দিক হুটহাট চলে যাওয়ার আগে মায়ের কথাটা একটু ভাবিস। কেমন?

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু