Skip to main content

সেল্‌স

**প্রথমত**

- হ্যালো টিএসএম নম্বর ওয়ান!
- হ্যালো বস্‌। ইয়ে, কতবার বলেছি আমায় টিএসএম বলে না ডাকতে?  প্রেসিডেন্ট বলুন। সক্কলে আমায় প্রেসিডেন্ট বলে ডাকে।
- উফ। এই ডেসিগনেশন ডেসিগনেশন করেই গেলে তোমরা। বলি এদিকে সেল্‌স ফিগার তো অল ডাউন সাউথ!
- না মানে ইয়ে..., বস...মানে...ইয়ে...। 
- ইয়ে মানে কী হে? ইয়ে মানে কী? স্টকের অবস্থা দেখা আছে? গোডাউন ভরাট, এক ইঞ্চি জায়গা নেই। সেল্‌স ফিগার প্রতি মাসে ওয়ান ওয়ে বাঞ্জি জাম্প দিচ্ছে। 
- না মানে ইয়ে...।
- বোঝ! আবার ইয়ে!।  শোন। ইনভেন্টরি কস্ট কোথায় গিয়ে ঠেকছে কোন আইডিয়া আছে?
- ইয়ে...।
- আর একবার ইয়ে বললে কোতল করব! 
- ইয়ে...সরি। 
- মনে দিয়ে শোন টিএসএম ওয়ান...। 
- প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্ট বলে ডাকুন না। 
- ধেত্তেরি ছাই। প্রেসিডেন্ট! মনে দিয়ে শোন। হাজার হাজার বোমায় ঘুণ, জং, ধুলো পড়ছে। বোমা ফ্যাক্টরিতে স্টকলস আমি বরদাস্ত করবো না। নেক্সট কোয়ার্টারের মধ্যে সেল্‌স ফিগার ইম্প্রুভ না করলে...চাকরী নট্‌ করতে হেসিটেট করব না কিন্তু। ডিয়ার প্রেসিডেন্ট...। মনে থাকে যেন!  
- অমন কথায় কথায় থ্রেট কেন স্যার! 
- থ্রেটের এ আর কী দেখলে! ব্যাটাচ্ছেলে প্রেসিডেন্ট, বলি নতুন মার্কেটগুলোয় ডেমোক্রেসি ছড়িয়ে দেওয়ায় দিকে তোমার মন নেই কেন? কতলোক হাহাকার করছে চাদ্দিকে; থোড়া ডেমোক্রেসি লাও, দো বুঁদ ডেমোক্রেসি লাও! ডেমোক্রেসির এত ডিম্যান্ড, তবুও আমার বোমা ফ্যাক্টরি স্টক তুমি ক্লিয়ার করতে পারছ না প্রেসিডেন্ট? 
- এই কোয়ার্টারে আপনাকে ডিজ্যাপয়েন্ট করছি না স্যার। একটু সবুর করুন না। পাইপলাইনে ডেমোক্রেসি গিজগিজ করছে। মার্কেট ইজ অল সেট। 
- বলছো?
- কমিট করছি। স্টক লস ফস নিয়ে ভাবা বন্ধ করুন তো। ক্যাচলাইন তো আছেই; ফেলো বোমা, মাখো ডেমোক্রেসি। 

**দ্বিতীয়ত**

- হ্যালো টিএসএম নম্বর টু!
- হ্যালো বস্‌। ইয়ে, কতবার বলেছি আমায় টিএসএম বলে না ডাকতে?  গুরু। সক্কলে আমায় গুরু বলে ডাকে।
- এই এক রোগ! গাধা কে গাধা বলা যাবে না! আর ধেত্তেরি! বলি আমার বন্দুক কোম্পানি যে লাটে উঠতে চললো! গত দুই কোয়ার্টারের সেল্‌স অ্যাট অল টাইম লো! গুদামঘর উপচে পড়ছে। বন্দুকে জং, কার্তুজের খোলে আরশোলা জমছে। বলি ধর্ম-টর্মর এত অবাধ মার্কেট, চাদ্দিকে এত হাহাকার কয়েক লিটার ধর্মের জন্য! অথচ এই তামাম মার্কেট থাকতেও আমার বন্দুক কারখানায় স্টক লস! গুরু, এ আমি বরদাস্ত করব না। কিছুতেই না। 
- এই কোয়ার্টারে আপনাকে ডিজ্যাপয়েন্ট করছি না স্যার। একটু সবুর করুন না। পাইপলাইনে ধর্ম উথলে উঠছে। মার্কেট ইজ অল সেট। 

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু