Skip to main content

গুপীর জামাইষষ্ঠী



সতেরো দিন পুরনো আনন্দবাজারটা ঘেঁটে নতুন খবর বের করার চেষ্টা করছিলেন মন্মথ হালদার। অকারণে রোজ রোজ কাগজ কিনে টাকা জলে দেওয়ার লোক তিনি নন। একবার কাগজ কিনে সে'টাই ধীরেসুস্থে হপ্তাতিনেক পড়ে থাকেন তিনি। জরুরী খবরগুলো বারচারেক পড়তে হয় রপ্ত করতে। ক্রসওয়ার্ড পাজলের ক্লুগুলো দিনে তিনটের বেশি নয়, নয়ত মগজকে অকারণ চাপ দেওয়া হয়। এমন সময় বিপিন এসে কনসেনট্রেশন দিল নষ্ট করে। সেই একই বাতিক ছেলেটার; নেই। আজ চিনি নেই। কাল তেল নেই। পরশু কাপড় কাচার সাবান নেই। শুধু নেই নেই আর নেই। মহাখচ্চর একটা কাজের লোক জুটেছে কপালে। কিন্তু বিপিনকে ছাড়া গতিই বা কী। মন্মথ হালদারের বাড়িতে বিপিন ছাড়া কেউ কোনোদিন টিকবে না, সে কথা মন্মথবাবু নিজেও জানেন।

"টীব্যাগ শেষ", সদর্পে ঘোষণা করল বিপিন।

খবরের কাগজটা সরিয়ে রেখে পকেটে রাখা নোটবইটা বের করে খানিকক্ষণ পাতা উলটেপালটে দেখলেন। মনে মনে খানিকক্ষণ হিসেব কষলেন। ভুরু কুঁচকে গেল ভদ্রলোকের, "বিপনে, হিসেব মত টীব্যাগের স্টক আরও আট দিন চলার কথা। শেষ হল কী করে সাততাড়াতাড়ি"?

"দেখুন কাকা, ওই আপনার মত এক টীব্যাগ ডুবিয়ে দু'বার করে চা খেতে পারব না। এক কাপে একটা টীব্যাগ না হলে আমার চলবে না"। 

"ওরে আমার লাটসাহেব এলেন রে। চলবে না। অত যদি নবাবী থাকে তা'হলে দিনে দু'বারের বদলে এককাপ চা খাবিগে যা"। 

"ও'সব পারব না। দু'কাপ চা মাস্ট। নয়ত গা ম্যাজম্যাজ করে। আর সন্ধের পর এককাপ কফি। কড়া করে"। 

"শালা রাস্কেল। তুই আমার বাজার করার পয়সা মেরে কফি খাচ্ছিস"?

"বাজে কথা বলবেন না। পয়সা কতই বা আর দেন বাজার করার। ও'দিয়ে ঝরতিপড়তি মাল ছাড়া কিছু জোটে নাকি। নিজের স্যালারি থেকে নিজের কফি আনি"।

"কুকিং গ্যাসটা তো আমার যায় রে হতভাগা। উফ, এরা আমায় পথে বসিয়ে ছাড়বে"। 

"তিনকুলে তো কেউ নেই। যা মালকড়ি এরপর তো চোদ্দভূতে লুটে নেবে। এ'বার একটু ভোগটোগ করুন না কাকা"।

"দূর হ। তোর জ্ঞান আমার না শুনলেও চলবে। চায়ের ব্যাগ শেষ হয়ে গেছে যাক। নেক্সট লট কেনার ডিউ ডেট মাসের বাইশ তারিখে। এখনও ঢের দেরী। তদ্দিন এ'বাড়িতে চা বন্ধ"। 

"ভালো কথা, আমি তা'হলে নিজের চাপাতার ব্যবস্থা করে নি'গে। দেখবেন, তখন আবার আমার থেকে দিনে এককাপ ধার চাইবেন না"। 

"তুই আমায় চায়ের খোঁটা দিচ্ছিস রে ব্যাটা? জানিস আমার জ্যাঠামশাইয় এক গোরার দার্জিলিং টী-এস্টেট থেকে ডাইরেক্ট চা-পাতা আনাত"?

"এই এক রোগ দেখছি মাইরি আজকাল। পৃথ্বীরাজ দারুণ যুদ্ধ করতেন তাই আমি চাকরী না করে পাড়ার রকে বসে গুটখা খাব আর শিস্‌ দিয়ে বলব মেরা ভারত মহান। লে হালুয়া। আপনার জ্যাঠা দার্জিলিং থেকে চা আনাতেন আর আপনি সকালের এঁটো টীব্যাগ চুবিয়ে বিকেলের চা খান। এই দুয়ে কীসের তুলনা? ধুর"। 

"বেরিয়ে যা আমার সামনে থেকে। আমার টাকায় খাবি, আমার টাকায় পরবি। আর আমায় স্ক্যান্ডালাইজ করবি"? মন্মথ আর দু'কথা শোনাতে যাচ্ছিলেন। এমন সময় রিক্সার প্যাঁপোরপোঁ শুনে দু'জনেই ঘুরে গেটের দিকে তাকালে। 

রিক্সা থেকে যে নামলে তাকে দেখে মন্মথর মুখ আরও খানিকটা ভেটকে গেল। 

কিন্তু বিপিনের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল, সে চিৎকার করে উঠল, "আরে, গুপীদা"! এই বলে বিপিন ছুটে এগিয়ে গেল অতিথির দিকে। তার দু'হাতে ভারি দু'টো ব্যাগ আর পিঠে একটা ঢাউস ব্যাকপ্যাক। হাতের দু'টো ব্যাগ বিপিনের দিকে এগিয়ে দিল গুপী। 

"কদ্দিন পর এলে এ'বার গুপীদা", বিপিনের আনন্দ আর ধরছিল না। 

"কেমন আছিস বিপনে"? বিপিনের পিঠ চাপড়ে জিজ্ঞেস করলে গুপী। 

"কোনোক্রমে আছি। চাটনিতে বেশি চিনি দেওয়ার জন্য আমায় কৈফিয়ত দিতে হয়। আমার আবার থাকা"। 

তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন মন্মথ, "তুই কত বড় ট্রেটার রে বিপনে? একটা স্ট্রেঞ্জারের কাছে গেরস্তের নিন্দে করতে তো লজ্জা করে না"?

মন্মথর কথাটা না শোনার ভান করে বিপিন গুপীকে শুধল, "হ্যাঁ গো গুপীদা, কী কী আনলে এ'বার"?

বারান্দার মোড়ায় বসে জুতোর ফিতে খুলতে খুলতে গুপী বললে, "একটা ব্যাগে আছে পাঁঠার মাংস, পাবদা, মৌরলা, দেশী মুর্গী আর হাঁসের ডিম। বুঝলি। আর অন্যটায় হিমসাগর, লিচু, আর সন্দেশের বাক্স"। 

"দই আনোনি"? সাগ্রহে খোঁজ নিল বিপিন। 

"মিত্তিরের দোকানে দাঁড়িয়েছিলাম শুধু তোর দইপ্রেম মনে করে। দু'কিলো এনেছি। এককিলো তোকেই সাফ করতে হবে কিন্তু"। 

প্রায় লাফিয়ে উঠল বিপিন। তারপর জিজ্ঞেস করল, "গুপীদা, বাড়িতে চা নেই। কফি খাবে"?

"খাবো। তবে ব্ল্যাক"। 

"হোয়াইট চাইলেও জুটত না। এ বাড়িতে দুধ ঢোকে না। বড় খরচ কিনা তা'তে", একটু বাঁকা সুরেই জানান দিলে বিপিন। 

"এখুনি বেরো রাস্কেল, বেরো তুই হারামজাদা", টেবিল চাপড়ে চিৎকার শুরু করলেন মন্মথ। কিন্তু সে চিৎকার থামাতে হল। গুপী এসে ঢিপ করে প্রণাম করেছে। 

একটু বিরক্তির সুরেই মন্মথ বললেন, "এ'ভাবে না বলে কয়ে দুমদাম এসে পড়াটা আমি মোটেও পছন্দ করিনা"। 

গুপী এ'সবে নার্ভাস হয় না। সপাটে বললে, "দুম করে কী। আজ তো আসার কথাই ছিল"।

"আজ? আজ কী ব্যাপার? কই, আজ তো তোমার আসার কোনও কথা ছিল না"? 

"আপনার মাথাটাথা গেছে। আজকের দিনটা  ভুলে মেরে দিয়েছেন তো"? 

"আজ কী"?

"যাব্বাবা। আজ জামাইষষ্ঠী। এমন দিনে শ্বশুরবাড়ি ঢুঁ মারব না"?

"এ'টা মোটেও তোমার শ্বশুরবাড়ি নয়"। 

"নাহ্‌, আপনার মাথাটা সত্যিই গেছে। এই বিপনে, তিন কাপ কফি করিস। শ্বশুরমশাইয়ের মাথার ব্যালেন্স ভালো ঠেকছে না"। 

"তোমার এই গায়ে পড়া অসভ্যতা আমার বরদাস্ত হয় না গুপী"।

"যাকগে, শুনুন। আমার সময় নষ্ট করলে চলবে না। আড়াই ঘণ্টা ধরে বাজার করেছি। বিপনের হাতে ছেড়ে দিলে সেই দায়সারা ঝোলভাতই গিলতে হবে। আমি ওপরের বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে সোজা রান্নাঘরে যাচ্ছি। মৌরলার একটা নতুন রেসিপি শিখে এসেছি মেজপিসির থেকে। আপনাকে জাস্ট চমকে দেব শ্বশুরমশাই"। 

"দ্যাখো। এত বছর ধরে তোমায় বলে চলেছি। আজ আবারও বলছি। তুমি আমায় শ্বশুরমশাই ডাকবে না। গা জ্বলে যায়"। 

"ও হ্যাঁ, আপনার জন্য ভালো চা পাতা এনেছি। গোপালধারা। আপনার মাস দুয়েক চলে যাবে"। 

"আমার কোনও কথা কি তোমার কানে যাচ্ছে না গুপী"? 

"শুনুন, আমায় হেঁসেলে ঢুকতে হবে। দাঁড়িয়ে বকবক করলে চলবে না। ফ্রেশ হয়ে আসছি"। 


****

দুপুর দু'টো নাগাদ বিপিন মন্মথকে ডেকে খাওয়ার ঘরে নিয়ে গেল। গুপী খাবারদাবার বেড়ে রেডি রেখেছিল। ব্যাজারমুখেই চেয়ার টেনে নিয়েছিল মন্মথ। কিন্তু গুপীর রান্নার সামনে বসে মুখ ব্যাজার রাখা সম্ভব নয়। 

মিনিট দশেক চুপচাপ খাওয়াদাওয়ার পর মন্মথ জিজ্ঞেস করেই ফেলল, "বিকেলের ট্রেনেই ফিরছ তো"?

মাংসের হাড় চিবুতে চিবুতে সে প্রশ্নকে উড়িয়ে দিল গুপী, "রাতে হালকা রেখেছি ব্যাপারটাকে, বুঝলেন শ্বশুরমশাই। জামাইষষ্ঠীর লাঞ্চটা বেশ ভারী হল কিনা। ওই সোনামুগডাল, বেগুন ভাজা, আলু পোস্ত, ডিমের ডালনা, আর রাবড়ি। এ বয়সে দু'বেলাই নালেঝোলে খাওয়া আপনার চলবে না"। 

কথা না বাড়িয়ে খাওয়ায় মন দিলেন মন্মথ। গুপী গোঁয়ারগোবিন্দ হতে পারে, কিন্তু ওর রান্নার হাতটা সত্যিই বড় ভালো। 

***

রাত দু'টো নাগাদ ঘর থেকে বেরিয়ে ফ্রিজ খুলে একটা সন্দেশ মুখে দিয়েছিল গুপী। তখনই খেয়াল করল ব্যালকনিতে রাখা ইজিচেয়ারে মন্মথ বসে। 

"কী ব্যাপার শ্বশুরমশাই, ঘুমোননি"?

"ইনসমনিয়া ব্যাপারটা ইদানীং শুরু হয়েছে"। 

"ওহ্‌"। 

"তুমি ঘুমোওনি দেখছি"।

"ঘুমের মধ্যেই আমার মাঝেমধ্যে সন্দেশ পায়, তাই উঠতে হল"।

"এ'সব করে কী পাও গুপী"?

"কী'সব করে"? 

"কেন আস এ বাড়িতে বারবার"?

"আমার শ্বশুরবাড়ি। অবভিয়াস ক্লেম আছে"। 

"সুমিকে তুমি বিয়ে করনি"। 

"সুযোগটা পেলাম কই বলুন। তবে আমি কিন্তু ক্লাস টুয়েলভ থেকেই আপনাকে শ্বশুর বলেই চিনি। বিয়ের জন্য আটকে থাকতে হয়নি"। 

"কেন আস বারবার? কেন? সুমিই যখন থাকল না...তুমি কেন আস"?

"সুমির জন্যই আসি। ও না থাক, আমরা দু'জন তো আছি বলুন। আমরা যদ্দিন, তদ্দিন"। 

"তোমাদের বিয়ে হয়নি গুপী। আমার প্রতি তোমার কোনও দায় নেই"। 

"দায়? ও'সব ফালতু কথা ছাড়ুন। বিপনে ঠিকই বলে, আপনি মহাখিটকেল বুড়ো"।

"বিপনে আমার নামে এ'সব বলে"?

"আমি তো তাও অশ্রাব্য অংশগুলো চেপে গেলাম"।

"আমি কালই ওকে পুলিশে দেব"। 

"দেবেন'খন। শুধু দোহাই আপনাকে, এক টীব্যাগ দিয়ে দিনে দু'বার চা খেতে বলবেন না"। 

"ওহ্‌। ও তোমায় সে কম্পেলনও করেছে"।

"বিপিনের সঙ্গে আমার রোজ কথা হয়। ফোনে"। 

"সে আমার অজানা নেই"। 

"শ্বশুরমশাই, কিছু বলবেন"?

"তোমার ওই এনজিও আর ইস্কুলটা কেমন চলছে"? 

"মন্দ না"। 

"গুপী"। 

"বলুন।  

"গতমাসে সমর এসেছিল"।

"ওই, সুমির উকিলকাকু"?

"হ্যাঁ। আমার টাকাপয়সা যে'টুকু আছে, আর এই বাড়িটা। তোমার ওই এনজিওর নামে উইল করে দেওয়া গেছে। ভেবো না তোমায় এক পয়সাও দিয়েছি। শুধু সুমির নামে যদি একটা স্কলারশিপ আর একটা হোম তৈরি করা যায়...আমার তার ক'দিন"। 

"সে হবে নিশ্চয়ই"। 

"তুমি ঠিকই পারবে। সে নিয়ে আমার দুশ্চিন্তা নেই। তবে আমার একটা রিকুয়েস্ট ছিল"। 

"এনিথিং। বলুন না"। 

"আমি না থাকলে তুমি বিপনেটাকে দেখো কিন্তু। ও তোমায় খুব রেস্পেক্ট করে। আর ওর মুখেই বড় বড় কথা। আমি না থাকলে ওর ভেসে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে"। 

"ন্যাওটা কিন্তু আপনারও"।

"তাও ঠিক। নয়ত কি আর এঁটো টীব্যাগ হজম করে পড়ে থাকে"?

"সন্দেশ খাবেন শ্বশুরমশাই? লাঞ্চে তো রিফিউজ করলেন। এখন আনি দু'পিস? হাইকোয়ালিটি কিন্তু। আমি অ্যাসিওর করছি"। 

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

ব্লগ-বাজ

আর চিন্তা নেই । বাঙালিকে আর রোখা যাবে না । আর সামান্য (সম্ভবত কিঞ্চিত গোলমেলে ) কবিতা ছাপাবার জন্যে সম্পাদক কে তোল্লাই দিতে হবে না । আর প্রেমে লটরপটর হয়ে ডায়েরি লিখে প্রাণপাত করতে হবে না। পলিটিক্স কে পাবলিক-জন্ডিস বলে গাল দেওয়ার জন্য আর “প্রিয় সম্পাদক” বলে আনন্দবাজারের ঠ্যাং ধরতে হবে না। কেন ?  হোয়াই? বাঙালি ব্লগিং শিখে গ্যাছে যে। ঘ্যাচাং ঘ্যাচাং করে শাণিত তলোয়ারের মত “ পোস্ট”-সমূহ জনতার ইন্টেলেক্ট এসপার-ওসপার করে দেবে ; হাতে-গরম গায়ে-কাঁটা। বাঙালি মননের নব্য জিস্পট ; ব্লগ-স্পট । কে বলে যে বাঙালি ব্রিগেডে বুক্তুনি দিয়ে আর ফুটবল মাঠে খেউড় করে খতম হয়ে গ্যাছে ? কে বলে যে বাঙালির ঘিলু কফি হাউসে ভাত ঘুমে মগ্ন ? বাঙালিকে একবার ব্লগখোর হতে দিন , সমস্ত অভিযোগ ভ্যানিশ হয়ে যাবে । পোপ থেকে পরশুরাম ; ডেঙ্গু থেকে মশাগ্রাম ; বং-ব্লগের দাপট রইবে সর্বত্র । বাঙালির সমস্ত আশা-ভরসা-জিজ্ঞাসা এইবারে ব্লগ মারফত্‍ পৌছে যাবে ট্যাংরা ট্যু টেক্সাস । তোপসে মাছের স্প্যানিশ ঝোলের রেসিপি কী ? বাঙাল-ঘটি মিল মহব্বত-হয়ে গেলে কি বাঙ্গালিয়ানা চটকে যাবে ? নেতাজী কি এখ

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু