Skip to main content

লেনিনের মাদুলি



- আচ্ছা শ্যামলদা, আফগানিস্তান নিউজিল্যান্ড ম্যাচটার ব্যাপারে আপনার গ্রহ-নক্ষত্র কী বলছে?

- সে কী হে লেনিনকুমার! শেষে আমার জ্যোতিষবিদ্যের ওপর রিলাই করতে হচ্ছে?

- বাজে কথা বলবেন না৷ জাস্ট চেক করছি আপনার হিসেবটিসেব কোনদিকে ফ্লো করছে৷ আফগানিস্তান একটা মিরাকল কিছু করতে পারবে কিনা..।

- বেস্পতিটার ট্র‍্যাজেক্টরি চিন্তায় রেখেছে ব্রাদার৷

- অবভিয়াসলি ও'সব গাঁজাখুরিতে আমার বিশ্বাস নেই৷ ফলাফল যা হবে সে'টা খেলার মাঠেই হবে৷ স্কিল দিয়ে, ঘাম ঝরিয়ে৷ নিউজিল্যান্ড জিতবে, সে'টাই তো স্বাভাবিক৷ আপনি কি ভেবেছেন, আমি আপনার বৃহস্পতির মুভমেন্টের ভরসায় ম্যাচ দেখব?

- মিরাকল ছাড়া গতি নেই হে লেনিনকুমার৷ 

- মিরাকলই তো! নবি রাশিদকে এনক্যাশ করে উইলিয়ামসনদের ঠেকানো? আকাশের চাঁদ আঁকশি দিয়ে নামাতে চাওয়ার মত ব্যাপার। 

- তা বটে৷ তাই বলছিলাম৷ বেস্পতির কলারটা যদি টেনে ধরা যেত..।

- যত্তসব ডার্কএজের ব্যাপারস্যাপার..ইউ শুড বি অ্যাশেমড অফ ইওরসেল্ফ শ্যামলদা।

- একটা ছোটখাটো যজ্ঞ বুঝলে ভাই লেনিন৷ শ'পাঁচেক টাকার মত খরচ৷ মাত্র। 

- তার চেয়ে টাকাটা জলে ভাসিয়ে দিলেই হয়৷

- আর তারপর একটা মাদুলি ধারণ করে ম্যাচটা দেখতে হবে৷ তার জন্য দরকার আরও ওই শ'তিনেক৷  

- আউটরেজাস কথাবার্তা৷ ছিঃ শ্যামলদা৷ 

- তবে তুমি মার্ক্স কোট করা মানুষ ভায়া। মাদুলি বাঁধলে জাত যেতে পারে৷ আমি বরং ও মাদুলি মায়ের পায়ের জবা ছুঁইয়ে এক্সট্রা পাওয়ারফুল করে নেব'খন৷ সে মাদুলি না পরে স্রেফ পকেটে রেখে খেলা দেখলেই বেস্পতিকে কন্ট্রোল করতে পারবে৷ 

- নাহ্৷ এ'সব গুল সহ্য করা যায় না৷ আমি চললাম৷ মাদুলি নয়৷ আমার ভরসা কোহলিতেই৷ 

- বেশ বেশ৷ তা এসো'খন৷ তবে ইয়ে লেনিনভায়া, আমার পেটিএমে হুট করে আটশো টাকা ট্রান্সফার করতে গেলে কেন?

- ও কিছু নয়৷ আপনি গুরুজন৷ বিজয়ার প্রণামী অফার করলাম৷ 

- থ্যাঙ্কিউ ভায়া৷ থ্যাঙ্কিউ৷ 

- শ্যামলদা, একটা মিরাকেল যদি ঘটানো যায়..।

- মাদুলিটা পৌঁছে দেব, তুমি শুধু তিনবার গায়ত্রী মন্ত্রটা জপে নিয়ে পকেটে রেখে ম্যাচ দেখতে বসো'খন৷ আরে মার্ক্সকাকা কিছু মনে করবেন না৷ বেস্পতিকে একটু টাইট দিতে পারলেই..।

- বেশি কথা আবার কেন৷ আসি আমি।

- সেই ভালো লেনিনভায়া৷ এ'বার এসো৷ আমি ব্যবস্থা করছি৷

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু