Skip to main content

বিটকেল ছাত্রের দল

শিক্ষা এবং তারুণ্যর মিশেল বড় বিরক্তিকর। ইতিহাস নির্মমভাবে বারবার প্রমাণ করেছে যে ধান্দাবাজির স্বর্ণযুগে বারবার আলকাতরা হয়ে ঝরে পড়েছে এই আপদ ছাত্ররা। যুগে যুগে ধান্দাশ্রেষ্ঠদের অনাবিল স্বপ্নে রাক্ষসের মত ধেয়ে এসেছে এই বিটকেল ছাত্ররা। রাক্ষুসে এই ছাত্রছাত্রীগুলোর নখের ডগায় যুক্তির বিষ আর তাদের দাঁতে প্রশ্নের ধার ; এরা মেগা-ডেঞ্জারাস। অদরকারী মানুষজনের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে নির্ভীক ভাজা-মাছ-উল্টোতে-না-পারা ধান্দাবাবুরা দু'দণ্ড আয়েশ করবেন, রাক্ষসগুলোর জ্বালায় তারও কি ছাই উপায় আছে?

ছাত্ররা টপাটপ পাশ দেবে আর চটাপট চাকরীতে ঢুকবে; এই সামান্য ডিসিপ্লিনটুকু থাকলেই ল্যাঠা চুকেবুকে যেত। তা না, এরা প্রশ্ন করে। 

প্রশ্ন করে। 

আরে বাবা পিকনিক কর, ফেস্টে ব্রেকডান্স কর, ক্যান্টিনে গান  কর...কিন্তু প্রশ্ন করবি কেন? 

প্রশ্ন; কী বিতিকিচ্ছিরি ব্যাপারটা। আর প্রশ্ন করছিস কর, তার আবার জবাবও দিতে হবে? মেধা আছে যখন; তা দিয়ে সওদাগরি অফিসে লেজার লিখলেই হয়, তাই বলে ধান্দাধর্মে ব্যাঘাত? 

ছাত্রদের এই বজ্জাত প্রশ্নগুলোকে জুতোর তলে না রাখতে পারলে ধান্দা-দুনিয়া অন্ধকার আর সে দমবন্ধ করা অন্ধকারে ধান্দা-প্রাণ ভালোমানুষদের অহেতুক হয়রানি৷ 

তবে এই রাক্ষুসে ছাত্রদের বিষাক্ত প্রশ্নের ঝরে যে আমরা বয়ে যাইনি, এ'টা ভাবতে ভালো লাগছে। আর গর্ব লাগছে এই ভেবে যে ইতিহাসের থেকে আমরা আদত শিক্ষাটুকু গ্রহণ করতে পেরেছি;

ধান্দাবাজির কাছে যদি প্রতিবাদের অধিকারটুকুকে নতিস্বীকার করানো না যায়, তাহলেই অকারণ খরচ বাড়ে।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু