Skip to main content

কিছু দাবিময় ডাক-নাম

কিছু ডাকনাম যে কেন তেমন ভাবে চলে না। ভেবে মন খারাপ হয় যায়। ছোটমামা হামেশাই বলে যে পোটেনশিয়াল নষ্ট করেই এ দেশ গোল্লায় গেল। হক কথা। কত ফোনেটিক বাহার যে কেতা-দুরুস্ত হতে গিয়ে মূর্ছা গেল তার ইয়ত্তা নেই। এই যেমন নিমকি ; কি অপূর্ব নাম খানি। নিমকি মা’কে বল জলখাবার দিতে, নিমকি পড়তে বস, নিমকি বাঁদরামো করিসনে – কি ব্যাঞ্জনাময় সমস্ত ব্যাবহার।

অথবা ধরা যাক বম্বে। শহর হিসেবে নয়; ডাকনাম হিসেবে। বুম্বা-টুম্বা ফালতু; ওসব ভারি সিনেম্যাটিক। বম্বে – বেশ নাদুস-নুদুস আদুরে নাম।অমন শুনেই মনে হয় কাছে ডেকে নি – কাম হিয়ার বম্বে। একটা আলতো গ্ল্যামার আছে।

ডাকনামের কথাই যখন উঠলো তখন বলি; ভেল্কি নামটির প্রতি আমার বেশ গুচ্ছ দুর্বলতা আছে। ডাক-নামেদের মধ্যে এমন তরুন-তুর্কী নাম পাওয়া দুস্কর।
নামের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে একশন।

বোঁদে শব্দ’টার মধ্যে ডাক-নামিও সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু ছন্দ-মিল সম্ভাবনা গুলো জরীপ করে দেখা গেল যে ব্যাপারটা বেজায় চাপের হতে পারে; সেইটে বাদ।

আমি আন্তরিক ভাবে একটা ডাকনামে খুব স্নেহ ভরে বিশ্বাস করি ; হাম্বা। ভারি দাবিময়। হাম্বা অঙ্কে ফেল করলি রে ? হাম্বা ফের গোলমাল করছিস ব্যাটাচ্ছেলে ? হাম্বা তুমি সাপের পাঁচ পা দেখেছো না কি ? দিল খুলে ওই নামে ডেকে ভারি সুখ হবে বলেই আমার বিশ্বাস।

মনে রাখা ভালো যে কর্তার ইচ্ছেয় কর্ম হতে পারে, ভালোনাম হতে পারে; কিন্তু ডাকনাম হবে স্রেফ ডাকিয়ের ইচ্ছেয়। দু চার খানা পেলব ডাকনাম শুধু ছাড়লাম এই খানে; সমগ্র লিস্টি করতে হলে আমায় বাল্মিকি হতে হবে। বাঙালি বাবাই-পাপাই-বাবু-তপু’র ফাঁদ থেকে যত তুরন্ত বেরিয়ে আসতে পারে ততই মঙ্গল।
  

Comments

Speak Your Mind said…
আরও কিছু উদাহরণ বাঙ্গালীকে সত্যি সত্যি এই নামকরণ বিপ্লবে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্ভুদ্ধ করতে পারত। শেষ নামটার প্রেমে পরে গেছি, এমনকি যাদের পিতৃদত্ত ডাকনাম আমার মুখস্থ তাদেরো হাম্বা বলে ডাকতে ইছছে করছে।
Speak Your Mind said…
আরও কিছু উদাহরণ বাঙ্গালীকে সত্যি সত্যি এই নামকরণ বিপ্লবে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্ভুদ্ধ করতে পারত। শেষ নামটার প্রেমে পরে গেছি, এমনকি যাদের পিতৃদত্ত ডাকনাম আমার মুখস্থ তাদেরো হাম্বা বলে ডাকতে ইছছে করছে।

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু