Skip to main content

বং প্যাকিং -(দ্বিতীয় কিস্তি)

বাঙালির  দিগ্বিজয়ে বেরোতে এমন কোনও তোপ-প্রস্তুতি লাগে নাঅতি সহজ কয়টি সরঞ্জাম জুটে গেলেই বাঙালি অতি সহজে বিশ্ব-ভ্রমণ করে আসতে পারেন। সেগুলো কী?

(আগাম বলে রাখা : লিষ্টিটি ঘোরতর পুরুষ-রুচি ভিত্ত্বিক )

১। জেলুসিল এবং ইসবগুল। কম্যুনিজ্ম এবং ক্যাপিটালিজ্ম; দুটো দিকয়েই সামাল দেওয়ার সঠিক প্রস্তুতি তো চাই।

২। টর্চ। অন্ধকারে হেল্পলেস হয়ে ল্যাজে-গোবরে হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। নেকু পুচকে মাল নয়; চার কী পাঁচ সেলের মিনি গদা মার্কা টর্চ; আলোর আলো, অস্ত্রর অস্ত্র।
 

৩। মাঙ্কি-টুপি। অজানার উদ্দেশ্যে সটাক করে বেরিয়ে পড়া; দার্জিলিং বা নরওয়ে পৌছে যাওয়া অবাস্তব কিছু নয়। এমনকি শিমুলতলার শীতেও বেশ একটা কামড় আছে। গলা বা কানে একবার ঠান্ডা লেগে গেলেই চিত্তির। সঙ্গে ছোট্ট এক শিশি সর্ষের তেল কাছে রাখলে সুবিধে; ঠান্ডা লাগলেই আঙ্গুলের ডগায় নিয়ে নাকে সুরুত্‍ করে একটু আর পায়ের তলায় রগড়ে ঘসে নেওয়া; ব্যাস।

৪। ব্রিটানিয়া থিন এরারুট বিস্কুট। ফর ফুড এমারজেন্সিস। রাত-বিরেতে ক্ষীদের পসিবিলিটি উড়িয়ে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

৫। গামছা। সাহেবী তোয়ালে মোক্ষম নয়। সহজ সরল আট-পৌরে গামছা।

৬। আমলকির হজমি-কাম-মুখ শুদ্ধি।

৭। দু চার কপি না পড়া ম্যাগাজিন, এবং অবশ্যই বহু পড়া ফেলুদার দু চারটে এডভেঞ্চার বা টেনি-সমগ্র।

৮। ট্রেনের অল ইন্ডিয়া টাইম টেবিল; ইউরোপে গেলেও; ইন্ডিয়ান রেলের টাইম টেবিল পকেটে থাকলে বেশ একটা নিশ্চিন্দি ভাব আসে।

৯। ফতুয়া সংকলন। এমন আরামদায়ক অথচ এলিগ্যান্ট পোশাক যথেষ্ট বয়ে নেওয়া উচিত।

১০। পছন্দের চায়ের পাতা; রনে বনে জঙ্গলে; সব চলতে পারে, কিন্তু বেস্বাদ চা কভি নহি।

১১। এবং সব চেয়ে জরুরি বস্তুতি হল একটি মন্দার বোসস-সম হৃদয়; আফ্রিকার নেকড়েরও যেখানে সহজ যাতায়াত।  

( বং প্যাকিং আগের কিস্তিটি লেখা হয়েছিলো ছোটমামার সিক্কিম যাওয়ার আগে, এইটে লিখলাম আমার সিক্কিম যাওয়ার আগে প্যাকিঙ্গের সময়)

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু