Skip to main content

পুজোর ছুটি ঘটিত


দত্ত: মে আই কাম ইন স্যার?
বস: দস্তুরের ফাইলটা কমপ্লিট করেছো?
দত্ত: ইয়ে স্যার ,ওই আর ঘন্টা-খানেকে হয়ে যাবে স্যার
বস: তাহলে ইয়ে দত্ত, তুমিও ঘন্টা-খানেক পরেই এসো
দত্ত: ভারী আর্জেণ্ট স্যার!
বস: দস্তুরের ফাইলের চেয়েও বেশি?
দত্ত: ইয়েস স্যার!
বস: প্রমোশোন নিয়ে ন্যাকা কান্না জুড়বে না তো?
দত্ত: না স্যার
বস: কাম ইন
দত্ত: থ্যাঙ্ক ইউ স্যার
বস: কী ব্যাপার? দস্তুরের ফাইলটা এখনো কমপ্লিট হলো না?
দত্ত: ওই যে বললাম, আর ঘন্টা খানেক...
বস: তবে তার আগে এসেছো কেনো?
দত্ত: ইয়ে স্যার, ভারী জরুরি ব্যাপার!
বস: জলদি বলে ফেলো, টাইম ইস মানি এন্ড মানি ইজ ইন দস্তুরস পকেট
, ফাইল না শেষ করে গতি নেই
দত্ত: ইয়ে, বসবো?
বস: না, বসবে কেনো? আড্ডা মারতে এসেছো নাকি? দস্তুরের ফাইল শেষ করে এনে তবে বসবে, জলদি বলো কী ব্যাপার!
দত্ত: হে: , স্যার, ওই যে কথাটা বলা ছিলো, পুজোয় ছুটির কথা, আপ টু দ্বাদশী, সিক্স ডেইজ, সিক্কিম ভাবছি ঘুরেই আসি।
বস: সে কী? এই শুনলাম বুকিং নেই কোনও ট্রেনের জলপাইগুড়ি পর্যন্ত? সেই জন্যে তুমি তুমি ছুটির এপ্লিকেশন ক্যানসেল করলে, বললে ডিসেম্বরে ছুটি নেবে, আবার সিক্কিমের প্ল্যান করছো যে?
দত্ত: ইয়ে স্যার, একটা পুজো স্পেশাল ট্রেন দিয়েছে ফ্রম হাওড়া টু নিউ-জলপাইগুড়ি, অনলি অন সপ্তমি মর্নিং। আচমকা খবর পেলামএইমাত্র ইন্টারনেটে চেক করলাম খান তিন-চারেক মাত্র পড়ে আছে, আপনি কনফার্ম করলে, এখনই টিকিট কেটে ফেলি, বউয়ের খুব ইচ্ছে স্যার; এবার পুজোয় পাহাড়ের হাওয়া খেয়ে হেঁসেল ভুলবে
বস: সপ্তমীর দিন সকালে? জলপাইগুড়ির স্পেশাল ট্রেন? সরি। সপ্তমীর দিন ছুটি হবে নাঅষ্টমী থেকে নিতে পারো, নট ফ্রম সপ্তমী!
দত্ত: কিন্তু স্যার, সপ্তমী তো রোব্বার?
বস: ইয়ে, তো কী হয়েছে? ওই দিন একটা বিশেষ ব্যাপার হতে পারে
দত্ত: কী বিশেষ ব্যাপার স্যার?
বস: সে ভারী একটা ইয়ে ব্যাপার আছে, ওই দিন রবিবার হলেও তোমায় একটি বারের জন্যে অন্তত অফিস আসতেই হবে, একটা হিউজ ব্যাপার আছে, তোমায় পরে বলে দেবো কী ব্যাপার। শুধু তুমি সপ্তমীর দিন রওনা হতে পারবে না
দত্ত: কিন্তু স্যার, সপ্তমীর দিন না বেরতে পারলে তো আর কোনও ট্রেনে টিকিট নেই! সিক্কিম তো আর যাওয়াই হবে না!
বস: সিক্কিম সিক্কিম করে নেচো না তো! হ্যাভ ইউ বিন টু অযোধ্যা পাহাড় দত্ত? বাংলার মধ্যে যে কী বিউটিফুল সব স্পটস আছে, সেগুলো এক্সপ্লোর করো আগে! যাও বরং অযোধ্যা পাহাড়ে দু-দিন কাটিয়ে এসো।
দত্ত: সপ্তমীর দিন তাহলে ছাড়ছেন না?
বস: বললুম তো! না!
দত্ত: তাহলে ওই ডিসেম্বরেই ছুটি নেবো, অযোধ্যা পাহাড়ে গিয়ে কাজ নেই।
বস: সেই ভালো, অযোধ্যায় গিয়ে কাজ নেই, তুমি বরং মন দিয়ে দস্তুরের ফাইল তা দ্যাখো, কেমন?
দত্ত: হুম! চলি স্যার।
বস: ইয়েস!

( দত্তর বসয়ের চেম্বার থেকে প্রস্থান। বস মিনিট দুয়েক অপেক্ষা করেই ফোন লাগালেন স্ব-গৃহে)
ফোনে বস: “গিন্নী, কেল্লা ফতে! তুমি পুজোয় সিক্কিম যেতে চাইছিলে না? ট্রেনের টিকিট না পেয়ে ও ফ্লাইটের বাজেট না থাকায় আমাদের ক্যানসেল করতে হলো প্ল্যান! রেল থেকে একটা পুজো স্পেশ্যাল ট্রেন দিয়েছে, সপ্তমীর সকালে হাওড়া থেকে ছাড়ছে; আপটু নিউ-জলপাইগুড়িসেখান থেকে গাড়িতে সিক্কিম এক্কেবারে মেগা ব্যাপার গিন্নীশুধু মাত্র তিন-চারটে টিকিট পড়ে আছে, একটা কম্পিটিটর কে কচু-কাটা করে দিয়েছি, এবার বাকিদের আগে আমার কেটে ফেলতে হবে; এই IRCTC’য়ের সাইটে ঢুকছি!জয় তারা!”
ফোনে বসের গিন্নী: “আই লাভ ইউ সোনা, ইউ আর দ্য বেস্ট”
ফোনে বস: “আই লাভ ইউ টু হানি, ইয়েস, আই এম দ্য বেস্ট”


Comments

Does your wife love you more for that? Chhee chhih, bechara Dattake jobai korle shesh mesh!
Bongpen said…
@Aniruddha Sen : Oh no Sir! Am not on that "Jobai Koro" side of the table. Am rather being Datt'ed every now and then.

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু