Skip to main content

ব্যর্থ বাংলা-বন্ধ, বমকানো বাঙালি

“বোল্টুদার বাড়িতে ডাকাত পড়েছে”। হুড়ুম হল্লাব্যাপারটা অত সস্তা নয়বোল্টুদা আমার প্রতিবেশী এবং পাড়ার রক-স্টার মাস্তান।তোলা আদায় করতে, মড়া পোড়াতে, চোয়াল ভাঙ্গতে, চাঁদা তুলতে, রক্তগঙ্গা বইয়ে দিতে, রক্তদান শিবির আয়োজন করতে; বোল্টুদার কোনও জুড়ি নেই। লোকাল এম-এল-এয়ের ডান হাত। এক দিন নিজেই কাউন্সিলর হবেএমন লোকের বাড়িতে ডাকাত?

বেরিয়ে এসে দেখি, ডাকাত নয়; পাড়ার বিজুকাকু দমাদম লাথি কষাচ্ছেন বোল্টুদার বাড়ির দরজায় আর উদোম চিত্‍কার করে চলেছেনবিজুকাকু রাগে-উত্তেজনায় থর থর করে কাঁপচ্ছেন, বোঝা যাচ্ছে অফিস ফেরতা সোজা চলে এসেছেন বোল্টুদার বাড়িতেগায়ের হাফ-শার্ট ঘামে চপচপ, চুল উস্ক-খুস্ক আর একটানা গলা ফাটিয়ে চলেছেন : “বেরিয়ে আয় শালা বল্টে, আজ তোরই একদিন কী আমার, একটা এস্পার-ওস্পার না করে আমি হটছি না। কাম আউট শালা স্কাউন্ড্রেল”

বিজুকাকুর কাছে গিয়ে কী ঘটেছে জানতে চাওয়াতে কেস স্পষ্ট হলো ; 

“এই শালা বল্টে, একটা ইউজলেস রাস্কেল কোথাকার, এমন একটা দলের হয়ে লেজ নাড়ে যে যাদের মুরোদ নেই ডাল-ভাতের আর ঢেকুর তোলে বিরিয়ানিরশালা, কতদিন পরে একটা বন্ধ ডাকলোআমি ভাবলাম আপিস কেচে যাবেরাস্তা-ঘাট শুনসান থাকবে।কাল সন্ধ্যে বেলা খাসি নিয়ে এলাম কষিয়ে বন্ধের দুপুরে আমেজ করবো। আর এই আহাম্মকদের জন্যে সব গেলো রসাতলেআপিস শালা যথারীতি খোলা, বাঙালির ইজ্জত যে ধুলোয় লুটিল আজসেই ফাইলের নোংরা ঘাটা, সেই বসের চিত্‍কার, উল্টে যাতায়াতে বাসের বাড়তি ভীড়ে নাকালবন্ধের আশা জাগিয়ে এমন বিট্রে? শালারা দু-চারটে বাস জ্বালাতে পারলো না? দু একটা আপিস ভাঙ্গচুর করতে পারলো না? ন্যাকা-কুসুমের দল এসেছে রাজনীতি করতে? বন্ধ করতে পারে না, সরকার গড়বেআমার মুণ্ডু করবেআমি বল্টে আর বল্টের দলের বিরুদ্ধে কনজিউমার কোর্টে মামলা করবো এই কোয়ালিটি-লেস বন্ধ ডাকবার জন্যেএই বল্টে শুয়ার আসুক এবার চাঁদা চাইতে, ওর হাড় দিয়ে আমি থিম প্যান্ডেল বানিয়ে ছাড়বোসাধারণ মানুষকে অফিস-কামাইয়ের স্বপ্ন দেখিয়ে ধোকা? কাম আউট বল্টে, তোর নেতাগিরি ন্যাতা না করে আজ আমি ছাড়বো না”

সত্যি-মিথ্যা জানি না, তবে ফিসফাস শুনলাম যে বিজুদা এমন রন-মূর্তি দেখে বোল্টুদা নাকি পিছনের দরজা দিয়ে ভেগে হাপিস হয়ে গেছে। পুজোর আগে আর পাড়া-মুখো হচ্ছে না হয়তো।    

Comments

I'm prepared to go to the consumer court too, but Boltu and Bros/Siss are manipulating the clerk to sabotage the date. Give date/call bandh/ensure success. Is that fair, dear Topse?

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু