Thursday, September 20, 2012

নব্য বং প্রেম

রাত পৌনে এগারোটা বাজতেই বেবুলদা বৌদিকে ঘরে টেনে নিয়ে দরজায় খিল

-“একটা সারপ্রাইজ আছে সোনা”

বৌদি তো অবাক, “এই রাত্রে আবার কিসের সারপ্রাইজ ?”

বেবুলদা মিউ মিউ করে কইলে, “ একটা, মস্ত ব্যাপার বয়ে এনেছি”

-   “কী গো? লিলুয়া থেকে মেজপিসি বড়ি পাঠিয়েছে নাকি গো?”, বৌদি উত্‍সুক।

-   “দ্যুত, একটা রোমান্টিক ইয়ে তৈরি করছি, আর কোথা থেকে নিয়ে এলে লিলুয়া আর বড়ি”

-   “ঈ:, চল্লিশ বছর বয়সে নাগর হয়ে এলেন রোম্যান্স করতে, কবে থেকে বলছি রান্না ঘরে একটা নতুন চিমনী বসাতে,সে বেলা কোন খেয়াল নেই। আর আমার এদিকে তেলে-ঝুলে একাকার কান্ড”

-   “উফ্ফ, হবে হবে। লেট আস ফোকাস ওন দ্য নাইট সোনা”

-   “হটাত্‍ এত সোনা সোনা বাই কেনো? ওদিকে মানতাশা গড়িয়ে দেওয়ার বেলায় অমন নেকু-কান্না কাঁদাই বা কেনো?”

-   “ওরে বাবা, আহা শুনবে তো কী এনেছি...”

-   “কী জলদি বলো, আমার বাজে সময় নেই। মালতীর মাকে কাল আবার ভোর আসতে বলেছি”

-   “না মানে, তার আগে বলো, তোমার কী মনে হয় না যে আজকাল আমরা ইয়ে ব্যাপারটা একটু ইয়ে, কম ইয়েতে করছি?”

-   “ইয়ে?”

-   মানে, ইয়ে ফিজিক্যাল ব্যাপারটা....একটু গেজে যাচ্ছে না...”

-   “বয়স গাছ বেয়ে উঠছে, এখনো আবার অমন কচি ন্যাকামো কেনো?”

-   “আরে বয়স তো মনে, ইয়েতে আবার বয়েস কিসে?আসলে আমাদের ইয়ে টা ভারী এক ঘেয়ে হয়ে যাচ্ছিল, বুঝলে ডিয়ারএকটু বৈচিত্র আনতে হবেআরে বাবা সব বলই যদি গুড লেন্থ পড়ে তবে কী আর বোলারএর কোনও মান থাকে? দুটো শর্ট বল, একটা ইয়র্কার, একটা নিচু ফুলটস থাকবে; তবে না বোলার হ্যাডলি-সম

-   “তুমি যে কী বলো আমি ছাই কিছু বুঝি না, কী এনছো সেটা বলো”

-   “বলবো হানি, তবে তার আগে বলি; আজ তোমায় হাম আদর করেগাকিন্তু অন্য স্টাইলে”

-   “ফচকেমো হচ্ছে? যা করার তাড়াতাড়ি করো, বললাম না মালতীর মা কাল ভোরে আসবে? ম্যালা কাজ”

-   “দুত্তর মালতীর মাআজ এমন একটা ব্যাপার করব না, তোমার ইচ্ছে করবে যে তুমি আদর খেতে খেতে জাষ্ট ভেসে যাও...”

-   “কী এনেছো বলবে না কী কাল টিফিনে মুলো-সেদ্ধ আর রুটি দেবো?”

-   আহহ, রুকোএই দ্যাখো; চকলেট সিরাপ এনেছি”

-   “এ দিয়ে তো হট চকলেট বানায় শুনেছি”

-   “ঠিক, আর আজ এটা দিয়ে আমরা ইয়ে-ইয়ে করবো, আই মিন; হট-ইয়ে; মানে হট-লাভ করবো”

-   “এটা দিয়ে মানে?”

-   “মানে বিদেশী ছবিতে বুঝলে, নায়করা এই  চকলেট সিরাপ নায়িকার শরীরে জুড়ে ছড়িয়ে দেয়, তারপর তা আদর করে চেটে নেয়...”

-   “ইইউ, ম্যাগো, ছি:”

-   “ছি না সোনা, ছি না, সে ভারী প্রেম-ময়; আর ইয়ে; উত্তেজক। একবার প্লিজ...”

-   “মরে গেলেও না, ইসসস...”

-   “পুজোয় পুরী নিয়ে যাবো”

-   “না বললুম তো”

-   “জামদানী”

-   “না গো, এ তো খাওয়ার জিনিষ, ভারী চ্যাটচ্যাটে”

-   “মানতাসা

-   “তুমি বড় জ্বালাও...”

-   “হীরের নাক ছাবি”

-   “হীরের কানের দুল”

-   “রাজি”

-   “জলদি করো, কাল আবার মালতীর মা ভোর ভোর চলে আসবে...”

-   “ছিপি খুলি তাহলে এই সিরাপের বোতলের?”

-   “এই, খাটে নয়; সিরাপ ছড়িয়ে গড়াগড়ি হয়ে চাদর-তোষক নষ্ট হয়ে যাবে...”

-   তবে? ইয়ে, মেঝেতে মাদুর পেতে নেবো?”

-   “না না, মাদুর চটচট করবে”

-   “তবে মাদুর ছাড়া? ডাইরেক্ট মেঝেতে ?”

-   “না না, মেঝে তে পিপড়ে আসবে যে....”

-   “ যা: শালা, তবে.....তবে মেঝেতে যদি কাগজ পেতে নি?”

-   “মা সরস্বতীর ওপর? ছি:, মরণ হয় না গো!”

-   “হাউ ইজ নিউজ-প্রিন্ট সরস্বতী? ধুর! আচ্ছা, চেয়ারে; ড্রয়িংগ রুমে?”

-   “বা: রে, এই সেদিন নতুন পালিশ করলাম চেয়ার গুলো, আজ আবার ওতে সিরাপ লেগে একাকার হোক আর কী....”

-   “কী চিজ মাইরি তুমি, আচ্ছা বেশ, চলো বাথরুমে চলো”

-   “ওয়াক থু:, অমন নোংরা জাগায় গিয়ে? ছি:, ছি:, ওয়াক থু:”

বৌদিকে একটা কাল্পনিক ড্রিবল করে, বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো বেবুলদা। আহত সিংহের মত জানালে:

 “ নিকুচি করেছে চকলেট সিরাপ সহ ইয়ের, তোমার জন্যে ওই লিলুয়া আর বড়িই ভালো; এই রইলো চকলেট সিরাপের বোতল; কাল খোকাকে কমপ্ল্যানে মিশিয়ে খাইয়ে দিও। আমি তিব্বত চললাম

No comments: