অনলাইন কেতাব খরিদের সুবিধে আমাদের জীবনে এক দৈবিক আশীর্বাদ। ফ্লিপকার্ট এক দেবদূত। শুধু বই কেন? যাবতীয় খুচরো বিকিকিনি এখন কী মায়াময় ভাবে সহজ। একটা ক্লিক আর ফিক হাসি, দিব্যি কাজ হাসিল। বই, ব্যাগ, গানের সিডি বসন্তের আনন্দ বয়ে দরজায়
হাজির। টেকনোলজির কাঁধে হাত রেখে বলতে ইচ্ছে
করে,
“সাবাস তোপসে”
।
।
নিজে কেনো, অন্যকে উপহার দাও। সহজিয়া ইজ দ্য ওয়ার্ড। শুধু কী ঘরে বসে খরিদ্দারী? যেমন ভাবে খুশি দাম মেটানো; নগদে, ক্রেডিট কার্ডে, এমনকি রয়েছে ক্যাশ-অন-ডেলিভারির হিমালয়
মাফিক সুবিধে
।
।
এইত্তো সেদিন, ছেলেবেলার বন্ধু
দোলুকে জন্মদিনে একটা জমাট বই উপহার হিসেবে পাঠালাম; অনিক বর্ধনের
রহস্য-গপ্প সংকলন “অসহ্য সাসপেন্স”। বইটির মলাট এমন চমত্কার ভাবে রোমহর্ষক মনে হলো যে
নিজের জন্যেও এক কপি আনিয়ে নিলাম। ক্রেডিট কার্ড ঘষে
দোলুর বইটি ওর দিল্লীর ঠিকানায় পাঠিয়ে দিলাম গিফ্ট-মোড়কে মুরে; “হ্যাপি বার্থডে দোলু” মেসেজ সহ আর নিজেরটা
আনিয়ে নিলাম ক্যাশ অন ডেলিভারিরতে; টেকনোলজির এমন মনহারিণী আশ্বাস
যে আমার অর্ডার দেওয়া বই কেউ ঘরে বয়ে পৌছে দিয়ে যাবে এবং আপন-সামান হাতে পেয়ে তবে আমি
টাকা দেব। প্রযুক্তির জবাব নেই।
আজ সকালে পেলাম, আমার “অসহ্য
সাসপেন্সের’’ কপিটি পেলাম। অবাক কান্ড,
ডেলিভারি দিতে আসা ছোকড়াটি বলে নাকি ‘পেমেণ্ট’ করা আছে। ভুরু সবে ওপরে তুলছি এমন সময় মোবাইলে দোলুর ফোন, “থ্যাঙ্ক ইউ ফর দ্য নাইস গিফ্ট পচা, কিন্তু তুই এখনো
সেই হাড়-কেপ্পন’ই রয়ে গেলি। একটা বার্থ-ডে গিফ্টও নিজে কিনে পাঠাতে পারলি না? লজ্জা করে না শালা উপহার ক্যাশ অন
ডেলিভারিতে পাঠাতে? নিজের নামের উপহার নিজেই টাকা দিয়ে ছাড়াতে
হলো; বউ বলেছে এবার থেকে আর যেন তুই দিল্লী এলে তোকে গাণ্ড-পিণ্ডে
গিলিয়ে এন্টারটেইন না করি”
মাউস ক্লিকিও, রক্তাত্ব; ভ্রান্তি-বিলাস।
Comments