Skip to main content

মনের বাইসেপ, হৃদয়ের ট্রাইসেপ


“এই যে স্যার, হ্যাঁ, এই যে, আপনাকেই বলছি স্যার,গুড মর্নিং, এই যে ট্রেড-মিলে ঝড় তুলে আপনি বেদম দৌড়চ্ছেন, এ তে আপনার মেদ ঝড়ছে ঠিকই, কিন্তু মগজের জং সাফ হচ্ছে কই?হৃদয়ের ঝুল ঝাড়-পোছ হচ্ছে কই? কলজেতে হাওয়া খেলছে কই? চাবুক শরীরে খেন্তী-বুড়ির মন পুষে কী লাভ? মাল্টি-জিম ছেড়ে মনটি জিমে দিন। দৈন্য দূর করুন।

রোল-কাবাবের তেলে রক্ত ভরিয়ে নিতে কসুর করবেন না; জিহ্বা শাণিত হবে।
দুম-ফটাস হাসতে গিয়ে আটকে যাবেন না; হৃত্পিণ্ড অক্সিজেন পাবে।
জমাটি প্রেম করুন, বউ-প্রেম, বিয়ণ্ড বউ-ভালো লাগা জড়ো করুন; মনের শিকল আলগা হবে।
হুইস্কি খান; পাঁজড় কড়ক পাবে।
মাসে একবার গাঁজা টানুন; মগজে তিরিং যাবে।
খিস্তি করুন; ফুসফুস বল পাবে।
ফাইল-পত্তর মাঝে-সাঝে সাইড করে বেদম আড্ডা জমান; চোখে চমক আসবে।  
ঘুমের মধ্যে যাতে  ডাকাতে ভঙ্গিমায় নাক ডাকতে পারেন তার জন্যে সাধনা করুন; নির্মল শান্তি মালুম হবে

ভূড়ি ম্যানেজ করাটাই সব নয় স্যার! অন্তর-আত্মা কে মনন-খাদ্যে ভূড়ি-ভোজ করান, তবেই না উত্তরণ?”

এ কোন অমোঘ দৈব-বাণী আমার কানে বর্ষিত হলো? কোন মহাপুরুষ আমার কানে এই মহামন্ত্রের বীজ বপন করে গেলেন? টের পাওয়ার আগেই ঘুম গেলো চটকে বউএর কলার ধরে ঝাঁকুনিতে:
“ওঠো,ওঠো বলছি! থ্যাবড়া গোবর-গণেশ কোথাকার! খালি গিলবে আর ভূড়ি পুষবে! এত কষ্ট করে জিমে ভর্তি করালাম, আর জিমে এসে কী না তুমি টুলে বসে ঘুমোচ্ছো? ডিসগাস্টিং! ওয়েক আপ নাউ!”


Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু