Skip to main content

মদ্য পঞ্চ-প্রদীপ





মাতালের মদ্যপান নিতান্তই অকারণ, তাই সে মাতালকিন্তু আমরা Connoisseur, সুরা-উপভোগী, মদ্দ্যপ বেল্লিক-পনা আমাদের নয়আমাদের কারণ-সেবনে অতিশয় কারণ মিশে থাকে; তাই আমাদের মদ্য-স্পর্শে স্বয়ং ঈশ্বরের অমৃতরস প্রাপ্তি ঘটে।


কোন কারণ-গুলি স্পর্শ করে আমাদের গেলাসে ডুব?




১। বৃষ্টি : এ দেহ মৃত্তিকাবত, মাটিতে একদিন মিশে গিয়েই মুক্তিবর্ষা নেমে যখন মাটি ভিজিয়ে প্রকৃতিতে নরম স্পর্শ টেনে আনে, এ মেটে-শরীর তখন সুধা-মগ্ন হতে চায়অই, হূইস্কি, আইসো ব্রাদার, এ পচা কন্ঠ বাইয়া আনন্দ-বর্ষা হইয়া নামিয়া আইসো পঞ্জর জুড়িয়াবৃষ্টি নামলেই মশাই আমার হৃদয় এক মরণ-thirst জুড়ে বসে


২। শনিবার রাত: Weekend আমায় Weak করে তোলে বন্ধু।

হপ্তা-ভোরের খাটুনি ভেস্তিয়ে
, এ হার-পাঁজড় একটু লুব্রীকেশন চায় সখা; খোলো খোলো ছিপি / আমি পেগ মাপি/ রেখো না পেয়াসা বসায়ে



৩। পুরনো বন্ধু: বহুদিন পর দ্যাখা বন্ধু, গলায় ঝুলে বেসামাল হয়ে যদি তুই ছাড়া আমার কেউ নেই রে পঞ্চাই না বলতে পারি, তো সেই বন্ধুত্বের মরচে কাটবে কি করে দোস্ত? পুরুষেরা যে অকারণে এক অপরকে জড়িয়ে ধরে বন্ধু-সোহাগ জানাতে পারে না! On The Rocks ছাড়া সম্পর্কের পাথর যে গলে না।


৪। প্রিয় গান: শুনি, সাকি তোমার কাছে, আ আআ আআ, ব্যথা ভরা আআ আআ, দারু আছেঅহহ নজরুলহৃদয় কি এমন ভাবে পেনিট্রেট করতে আছে? কোলাহল তো বারণ হল, এবার কথা গানে গানে..উফ্ফ, মাই লর্ড, মদ না থাকলে একদিন গানের হাতে খুন হয়ে যেতে হত


৫। কবিতা: কবিতা পড়া একটি ক্রাইম স্যার, জেনে রাখুন। হূইস্কির ভ্যাক্সিন ছাড়া এ ধাক্কা কোনও ভদ্রজনে কেমনে সামলায়? আর কবিতা লেখা? মদ-বিনে? হ্যাঁ? পাগল নাকি? রবীন্দ্রনাথ মদ্যপান করেননি, কিন্তু তিনি তো Perfection’এর দেবতা, কবিতা-কারখানা, কবি কই? Imperfection বাদ দিয়ে কবিতা হতে পারে, কবি হয় না; মাইকেল কবি ছিলেন, শক্তি ছিলেন, এদের বুকে কবিতা ছিল, হাতে ছিল গেলাস




এই পঞ্চ-প্রদীপিও পাঁচটি সলতে থাকতে, ভদ্র বঙ্গ সন্তান অমৃত-আগুনে পুড়বে না, তা কি করে হয়?






Comments

Suhel Banerjee said…
Half the blogging battle is won with bullet points. Half is lost by posting during non-working hours for your target audience. Well played.
Gablu said…
গল্প আজকের নয়,পঞ্চ প্রদীপ এর সলতে তো আজ থেকে জ্বলছে না। "যদি জগাই মাধাই না থাকতো তবে নিমাই কে কি চিনত লোক এ??" এর থেকে বড় সত্যি আর হয় না।

কি গ্যারান্টি আছে যে লঙ্কা পৌঁছে রাম দেখেনি,সীতা রাবনের সাথে চুটিয়ে প্রেম করছে আর তখন রাম দু পেগ মারেনি।

আরে দাদা, PNPC করার থেকে শত গুনে ভালো শনিবার বৃষ্টির রাতে পুরনো বন্ধুর সাথে প্রিয় গান আর কবিতা আলোচনা করা (পাঁচ সলতে একসাথে জ্বালিয়ে দিলাম)।

শক্তি বাবু ওনার জন্মদিনে বাড়িতে "বাংলা" র যে পার্টি দিতেন, তাতেই হয়ত কত কবিতা বেরিয়ে এসেছে। তবে সেই খালাসিতলা ও নেই, সেই শক্তি ও নেই।

তবে, "যখন কেউ আমাকে মাতাল বলে, তার প্রতিবাদ করি আমি, যখন তুমি আমায় মাতাল বল ধন্য যে হয় সেই মাতলামি"- এটা frustu কথা। বরং তার থেকে ভালো কথা,"chulene do najuk hotho ko, kuch aur nahi jaam hai ye". মদ্যপান অবশ্যই পঞ্চ প্রদীপ অনুযায়ী মনের উল্লাসে আনন্দে উপভোগ করা উচিত। "দেবদাস" একটা scoundrel। আজকের যুগে যাদের একটুও দেবদাস হওয়ার chance আছে, তাদের বলি, মদ্যপানের সময় mobile phone দূরে সরিয়ে রাখো বা বন্ধ রাখো। একটু বিপ্লবী (অন্যরকম) হোয়ে ওঠার chance থাকে।

শেষে একটি কথা বলি, তন্ময় বাবুর সাথে আমার ওই whisky হাতেই twitter এ আলাপ আর একটা সুন্দর বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। আমি দুঃখিত, এই মন্ত্যব্য আমি সুস্থ অবস্থায় লিখলাম। :)

লোকে আমাকে দয়া করে পাঁড় মাতাল ভাববেন না ;p
সুন্দর হয়েছে. তারাপপ্দ রায় হয়ে যাবার ভয়ে থাকে যে কোনো মাতাল সম্বন্ধীয় লেখায়ে | কিন্তু সেইটা খুব ভালো এড়ানো হয়েছে. কিন্তু একটা ষষ্ট কারণ যোগ করা যেতে পারে না? চন্দ্রবিন্দুর ভাষায়ে "বিয়ের আগেই surrender আর প্রেমের আগেই লেঙ্গি"? ~ সুব্রত

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু