Skip to main content

মোক্ষম অস্ত্র



- এই যে ম্যাডাম! এ'বার ফিরতে বড় দেরী করলে যে..। তোমার মত সিনিয়র অপ্সরাও যদি এদ্দিন ডুব দিয়ে থাকে..।

- আরে বলেন কেন দেবরাজ...। মর্তে এ'বার সে কী বিশ্রী রকমের হ্যারাসমেন্টটাই না হল।

- হ্যারাসমেন্ট? পলিউশনের জন্য বলছ? ও একটু অ্যাডজাস্ট করে নিও। মাঝেমধ্যে একটু পচন না ধরালে জমবে কেন। পার্ট অফ দ্য প্ল্যান৷

- আরে না না। মর্তের পলিউশন আর আপনার বাতেলা এদ্দিনে আমার সয়ে গিয়েছে..। ও আমি মাইন্ড করিনা।

- তবে কীসের হ্যারাসমেন্ট?

- সে এক মারাত্মক লেভেলের হয়রানি দেবরাজ। যা বুঝছি, এ'বার মানে মানে আমার রিটায়ারমেন্ট নিয়ে নেওয়াই উচিৎ হবে৷ যে'টুকু যা ফিক্সড করে রেখেছি, তা দিয়ে দিব্যি কেটে যাবে।

- ও মা! কচি মেয়ে বলে কিনা রিটায়ার করবে, ধুর ধুর।

- মেঘেমেঘে বেলা তো কম হলনা। গত অগ্রহায়ণে সাড়ে বারো বিলিয়ন কম্পলিট করলাম। যৌবন তো পড়তির দিকে। স্নো-পাউডার দিয়ে আর কদ্দিন চালাবো..।

- তুমি ভারি হাফ-গ্লাস-এম্পটি গোছের মানুষ কিন্তু। আরে তোমার রূপের ধারে আকচার কত দেব-দেবতাই যে মনে মনে কচুকাটা হয়ে পড়ে থাকছে; তা তুমি টেরই পাওনা। হে হে হে...।

- থামুন মশাই। আপনাদের মত বুড়োভামদের চোখেই এখন আমার জেল্লা৷ এ'দিকে মর্তের মডার্ন তপস্বীদেরকে ঘায়েল করতে গিয়ে আজকাল ডাহা ফেল করতে হচ্ছে..ছি ছি...কী ইনসাল্ট..।

- ও। তাই বুঝি ফিরতে দেরী হল এ'বার...তা কে এমন নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরালে?

- আর বলেন কেন। একজন ডেটা অ্যানালিস্ট সাধকের এমএস-এক্সেল তপস্যাভঙ্গ করতে চেয়ে তিনঘণ্টা জান লড়িতে দিলাম৷ ক্লাসিকাল, কউন পরদেশী মেরা দিল লে গয়া, কাঁটা লাগা, নাগিন নাগিন; কিছুই বাকি রাখলাম না। কিন্তু কাকার ভি-লুকআপ সাধনাভঙ্গ হলনা কিছুতেই৷ বা ধরুন, গতকাল গেছিলাম এক ক্রিকেট ভক্তের ঢ্যাঁটা চেল্লামেল্লি থামাতে। ও মা, আমি যতই বলি 'পিয়া তু অব তো আ যা', সে চিল্লিয়ে যায় "আর দিদিভাই টিভিটা গার্ড করে দাঁড়াচ্ছেন কেন"। কী মেজাজ, উফ, শিউরে উঠতে হয়। যাই বলুন দেবরাজ, ওই ব্রিটিশ আমলের বিশ্বামিত্র টাইপ মুনিঋষিদের এই স্ট্যামিনা ছিল না। এদের তপস্যা ভঙ্গ করা ইমপসিবল!

- ওহহোহোহো..তাই বুঝি? ও নিয়ে তুমি ভেবোনা। আধুনিক ঋষিদের টলানোর রাস্তা আমার জানা আছে।

- জানা আছে?

- আছে।

- সে'টা কী?

- এখুনি ব্যবস্থা করে দিচ্ছি৷ ওরে, কে আছিস, মর্তে ভালো দেখে একটা আমাজন আর ফ্লিপকার্টের সেল ছাড়ার ব্যবস্থা কর তো দেখি...!

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু