Skip to main content

আসছে শতাব্দীতে



"আসছে শতাব্দীতে"। সন্ধ্যার কণ্ঠ আর সুমনের কথা, সুর; এ'রা নেহাতই সহশিল্পীর দলে। মঞ্চ আলো করে দাঁড়িয়ে একজন অগোছালো কিশোর। যার কণ্ঠে সুর নেই, কবিতায় দখল নেই; কিন্তু গানের প্রতি ভালোবাসা আছে৷
সে কিশোর শ্রোতা, অথচ সমস্ত লাইমলাইট তারই ওপরে৷ কারণ সেই একমাত্র শ্রোতা, মায়েস্ট্রো সেই। সুমন আর সন্ধ্যায় ভর দিয়ে একশো বছর তফাতে থাকা একজন কেউ সেই ভ্যাবলাটে কিশোরের কাছে বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। না না, গানের কথাটুকু ক্যামোফ্লাজ, সেই অন্য-সময় থেকে পাঠানো মেসেজ কোড করে রাখা আছে সুরে৷ সন্ধ্যা-সুমন আপ্রাণ চেষ্টা করছেন সে সুর সেই কিশোরের মনের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে, পারলে রক্তে চালান করে দিতে।
কিশোরের ছটফট বেড়ে চলে৷
মনের ভিতর সে কী বিশ্রী অথচ ভালোলাগা আনচান৷
এ সুর এত চেনা কেন?
এত ভালোবাসা কেন এই গানে?
কে ডাকছে?
সে ডাক এত মায়ার কেন?
আহ, সে যে কী অপার্থিব স্নেহ। কী টান।
***
- বুঝুলে ভাই আওদব্দভ্বহ৷ আশা একটা আছে৷
- আশা আছে বলছ আবাভ্ব ?
- আছে।
- গোটা ভ্যাকিওসমসে কেউ যদি পারে তুমিই পারবে৷ কিন্তু উপায়টা কি? কত হাজার বছর ধরে চেষ্টা করেও তো আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি৷ আজ হঠাৎ কী ফন্দি আঁটলে?
- গ্রহটা তো আর পাশের পাড়াতেই নেই৷ ঢের দূরে৷ তাছাড়া তাদের রকমসকমও আমাদের ধারার নয়৷ কাজেই সময় লাগাটা স্বাভাবিক৷ তবে এদ্দিনে সত্যিই একটা সলিউশন পেয়েছে আওদব্দভ্বহ।
- ইয়াইয়াজ ওয়েভের মাধ্যমে কিছু?
- খানিকট তাই। তবে সে গ্রহের বাসিন্দারা ইয়াইয়াজ সোজাসুজি আঁচ করতে পারবে না। অন্যপথে তাদের কাছে পৌঁছতে হবে৷
- তবে? কোন পথে?
- তাদের ররকমসকম আমাদের চেয়ে একদমই আলাদা৷ যোগাযোগের প্রসেসটা তাই এত খটমটে। তবে একটা মোক্ষম মিল পাওয়া গেছে।
- কী মিল?
- ও'খানেও সুরের ব্যবহার চলে।
- বটে? ওরা সুরের ব্যবহার যানে?
- জানে। তবে আমাদের মত সুর দিয়ে যন্ত্রপাতি চালাতে পারেনা তার৷ সুর ব্যাপারটা তাদের কাছে শৌখিন ব্যাপার৷ এ'বার আমাদের পাঠানো ওয়েভ তাদের কোনও একটা সুরে মিশিয়ে দিতে পারলেই কেল্লাফতে।
- বলো কী আবাভ্ব! সে'টা সম্ভব?
- নয়ত আর বলছি কেন? অলরেডি একটা ট্রায়াল ওয়েভ ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু সমস্যা একটাই৷ হিসেব কষে দেখলাম, আমার পাঠানো ওয়েভ সে গ্রহের হিসেবে একশো বছর পর তাদের কোনও সুরে গিয়ে মিশবে।
- সে'টা আমাদের হিসেবে কতক্ষণ?
- আমাদের গ্রহের একবেলা৷ বড়জোর৷
- তবে আর কী৷ খিচুড়ি ডিমভাজা চাপিয়ে দিয়ে অপেক্ষা শুরু করি। দেখা যাক তোমার ওয়েভ তাদের সুরের আড়াল পেরিয়ে সে গ্রহের কাউকে ঘায়েল করতে পারে কিনা৷ কিছু ইন্টারগ্যালাক্টিক প্রতিবেশী না পেলে আর সত্যিই চলছে না।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

ব্লগ-বাজ

আর চিন্তা নেই । বাঙালিকে আর রোখা যাবে না । আর সামান্য (সম্ভবত কিঞ্চিত গোলমেলে ) কবিতা ছাপাবার জন্যে সম্পাদক কে তোল্লাই দিতে হবে না । আর প্রেমে লটরপটর হয়ে ডায়েরি লিখে প্রাণপাত করতে হবে না। পলিটিক্স কে পাবলিক-জন্ডিস বলে গাল দেওয়ার জন্য আর “প্রিয় সম্পাদক” বলে আনন্দবাজারের ঠ্যাং ধরতে হবে না। কেন ?  হোয়াই? বাঙালি ব্লগিং শিখে গ্যাছে যে। ঘ্যাচাং ঘ্যাচাং করে শাণিত তলোয়ারের মত “ পোস্ট”-সমূহ জনতার ইন্টেলেক্ট এসপার-ওসপার করে দেবে ; হাতে-গরম গায়ে-কাঁটা। বাঙালি মননের নব্য জিস্পট ; ব্লগ-স্পট । কে বলে যে বাঙালি ব্রিগেডে বুক্তুনি দিয়ে আর ফুটবল মাঠে খেউড় করে খতম হয়ে গ্যাছে ? কে বলে যে বাঙালির ঘিলু কফি হাউসে ভাত ঘুমে মগ্ন ? বাঙালিকে একবার ব্লগখোর হতে দিন , সমস্ত অভিযোগ ভ্যানিশ হয়ে যাবে । পোপ থেকে পরশুরাম ; ডেঙ্গু থেকে মশাগ্রাম ; বং-ব্লগের দাপট রইবে সর্বত্র । বাঙালির সমস্ত আশা-ভরসা-জিজ্ঞাসা এইবারে ব্লগ মারফত্‍ পৌছে যাবে ট্যাংরা ট্যু টেক্সাস । তোপসে মাছের স্প্যানিশ ঝোলের রেসিপি কী ? বাঙাল-ঘটি মিল মহব্বত-হয়ে গেলে কি বাঙ্গালিয়ানা চটকে যাবে ? নেতাজী কি এখ

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু