Skip to main content

মিস চ্যাটার্জীর চোখে



- এইত্তো! মিস চ্যাটার্জি!
- আরে, মিস চ্যাটার্জি যে৷ সো গুড টু সি ইউ৷ অনেকদিন পর। তাই না?
- অনেক, অনেকদিন পর।
- ঘুমটা তা'হলে ভালোই জমেছে, তাই না?
- ফার্স্টক্লাস৷ আচ্ছা, মিস চ্যাটার্জি, জাস্ট টু কনফার্ম। এ'টা স্বপ্নই তো?
- স্পষ্ট টেবিলের এ'পাশ থেকে এই আমি টেবিলের ও'পাশে বসা আমির সঙ্গে কথা বলছি৷ স্বপ্ন না হয় যায় কোথায়৷
- তাও ঠিক৷ তবু, স্বপ্নের মধ্যে স্বপ্নকে স্বপ্ন বলে টের পাওয়াটা বেশ অস্বস্তিকর।
- হতে পারে। তবে আপনার সঙ্গটা মন্দ লাগেনা৷
- সেম হিয়ার৷ আচ্ছা মিস চ্যাটার্জি, ঠিক কী সিচুয়েশনে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, সে'টা মনে আছে?
- নাহ্৷ তা কী আর ট্রেস করা যায় স্বপ্নের মধ্যে। হয়ত অরিন্দমের কাঁধে মাথা রেখে। বা হয়ত, অফিস থেকে ফেরার পথে ট্রেনে ঢুলছি। অথবা হয়ত, ছুটির দুপুর৷ অরিন্দম তাসের আড্ডায়৷ আমি..থুড়ি..আমরা..একাই ঘুমিয়ে৷ আসল ব্যাপারটা ঘুম ভাঙলেই টের পাব।
- হুম৷ স্বপ্নের এই একটা সমস্যা৷ কী জানেন মিস চ্যাটার্জি, খুব ইচ্ছে হয় যে স্বপ্নের মধ্যে একদিন হিসেব কষে বের করব যে আমরা ঠিক কী'ভাবে আর কোথায় ঘুমিয়ে আছি৷
- হিসেব? মানে, তদন্ত?
- মন্দ কী মিস চ্যাটার্জি? আপনাকে দেখে তো বেশ স্মার্টই মনে হয়। ঠিক পারবেন এর একটা হিল্লে করতে।
- হা হা..মিস চ্যাটার্জি! আপনার সেন্স অফ হিউমরও বেশ সরেস৷
- তা, আপনার কী মনে হয়? আমরা এখন অরিন্দমের পাশেই শুয়ে? খুব রোমান্টিকালি? বা হয়ত সোফায় ওর পাশে বসে সিনেমা দেখতে দেখতে, ওর কাঁধে মাথা রেখেই..। নাকি ডাউন বর্ধমান লোকালে আজ বসার জায়গা পেয়ে ঝিমুনি চলে এসেছে?
- কোয়াইট পসিবল৷ কোয়াইট৷ কিন্ত..।
- একটা কথা বলি মিস চ্যাটার্জি?
- অবশ্যই বলবেন৷ এই তো একটা স্পেস, যা খুশি, যেমনভাবে খুশি বলা যায়..লেট আস ইউজ ইট!
- আপনার মুখে বহুদিন পর লেশমাত্র ক্লান্তি দেখছি না..। কতদিন কতদিন কতদিন পর..। একদম ঝকঝকে..।
- তাই? আরে তাই তো! আপনার মুখে সত্যিই কোনও ক্লান্তি নেই৷ ওই চাপা অন্ধকারটা একদম গায়েব..। ঠিক যেন ম্যাজিক!
- তা'হলে তো এ ঘুম অফিস ফেরতাও নয়, সংসারের ঘষামাজারও নয়৷
- যাহ্৷ তার বাইরে আর রইলটা কী মিস চ্যাটার্জি?
- মিস চ্যাটার্জি..একটা..একটা জিনিস..।
- হঠাৎ আপনাকে এত নার্ভাস লাগছে কেন? কী হল?
- মিস চ্যাটার্জি, আপনি কি এখনও খেয়াল করেননি?
- কী বলুন তো?
- কাজল! আপনার চোখে৷ আপনি কাজল পরেছেন!
- তাই তো৷ আপনি কাজল পরেছেন মিস চ্যাটার্জি!
- কাজল!
- কাজল তো শুধুই শুধুই...
- বাপ্পার জন্য, তাই না? সেই সে কত বছর আগে শেষ পরা, ওরই জন্য..। ইয়ে, কাজল ব্যাপারটা আপনাকে দিব্যি মানায় কিন্তু..।
- আপনাকে ভীষণ মানায় মিস চ্যাটার্জি! ভীষণ।
- আপনি কোথায় মিস চ্যাটার্জি? আপনি কি মন্দ হলেন? কোথায় আপনি?
- আপনার চোখে কাজল কেন মিস চ্যাটার্জি?
- আপনার চোখে জল কেন মিস চ্যাটার্জি?

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

ব্লগ-বাজ

আর চিন্তা নেই । বাঙালিকে আর রোখা যাবে না । আর সামান্য (সম্ভবত কিঞ্চিত গোলমেলে ) কবিতা ছাপাবার জন্যে সম্পাদক কে তোল্লাই দিতে হবে না । আর প্রেমে লটরপটর হয়ে ডায়েরি লিখে প্রাণপাত করতে হবে না। পলিটিক্স কে পাবলিক-জন্ডিস বলে গাল দেওয়ার জন্য আর “প্রিয় সম্পাদক” বলে আনন্দবাজারের ঠ্যাং ধরতে হবে না। কেন ?  হোয়াই? বাঙালি ব্লগিং শিখে গ্যাছে যে। ঘ্যাচাং ঘ্যাচাং করে শাণিত তলোয়ারের মত “ পোস্ট”-সমূহ জনতার ইন্টেলেক্ট এসপার-ওসপার করে দেবে ; হাতে-গরম গায়ে-কাঁটা। বাঙালি মননের নব্য জিস্পট ; ব্লগ-স্পট । কে বলে যে বাঙালি ব্রিগেডে বুক্তুনি দিয়ে আর ফুটবল মাঠে খেউড় করে খতম হয়ে গ্যাছে ? কে বলে যে বাঙালির ঘিলু কফি হাউসে ভাত ঘুমে মগ্ন ? বাঙালিকে একবার ব্লগখোর হতে দিন , সমস্ত অভিযোগ ভ্যানিশ হয়ে যাবে । পোপ থেকে পরশুরাম ; ডেঙ্গু থেকে মশাগ্রাম ; বং-ব্লগের দাপট রইবে সর্বত্র । বাঙালির সমস্ত আশা-ভরসা-জিজ্ঞাসা এইবারে ব্লগ মারফত্‍ পৌছে যাবে ট্যাংরা ট্যু টেক্সাস । তোপসে মাছের স্প্যানিশ ঝোলের রেসিপি কী ? বাঙাল-ঘটি মিল মহব্বত-হয়ে গেলে কি বাঙ্গালিয়ানা চটকে যাবে ? নেতাজী কি এখ

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু