Skip to main content

বংপেনের জ্যেঠু




- তুমি লেখালিখি করো?

- (উজ্জ্বল মুখে) ইয়ে জ্যেঠু, আমার একটা ব্লগ আছে৷ বংপেন৷ 

- ওহ্৷ আমি ভাবলাম লেখোটেখো বোধ হয়৷

- (পালিশ করা বিনয় বাগিয়ে) ওই ব্লগে সামান্য দু'চার লাইন..। কখনও সখনও..।

- ভেরি গুড। ভেরি গুড৷ খুব খুশি হলাম শুনে৷ এ'বার আস্তে আস্তে লেখার চেষ্টা করো৷ 

- (সামান্য থমকে) ওই, বেসিকালি লেখাই তো৷ ব্লগে৷ ফেসবুকে৷ ট্যুইটারে।

- ব্লগ। ফেসবুক। ট্যুইটার। ভেরি গুড। এই তো চাই৷ নীড অফ দ্য আওয়ার যাকে বলে৷ গুড। 

-  হ্যাঁ৷ তাতেই সামান্য...অপর্যাপ্ত আর কী...লেখালিখি।

- জানি তো৷ দেখেছি৷ অল্প পড়েছি। শোনো, আমি বেশ টেক স্যাভি কিন্তু৷ 

- ( হাঁফ ছেড়ে) ওহ, হ্যাঁ! সেটাই বলছিলাম৷

- আমিও তাই বলছিলাম৷ এ'বারে তা'হলে লেখালিখির চেষ্টা শুরু করলেই হয়। শেখার কোনও বয়স তো নেই৷

- (এ'বার দমে যেতেই হল) না মানে...ওগুলোও তো..মানে..।

- ওগুলো কী? 

- (মরিয়া) লেখা৷ 

- সে কী!

- (হাহাকার) লেখা নয়?

- সকালবেলা কেউ কাগজ পড়তে চাইলে তুমি তার দিকে চপের তেল চুপচুপে ঠোঙা এগিয়ে দেবে?

- (থতমত) সে কী!

- এগজ্যাক্টলি।

- (মরিয়া) কিন্তু ব্লগে...জ্যেঠু মানে...আফটার অল..প্রসেসটা তো লেখালিখির৷ আউটপুট যাই হোক..।

- অফিসের মেমো বানাতে গেলেও প্রসেসটা লেখারই৷ জানালার বাইরে আকাশ দেখলে, রবীন্দ্রসঙ্গীত গুনগুন করলে, তারপর লিখলে 'দিস ইজ টু ব্রিং টু ইওর কাইন্ড অ্যাটেনশন'..ইত্যাদি৷ সে'টাও দিব্যি লেখা৷ বাট নট টু বি ক্যাটেগরাইজড অ্যাজ লেখালিখি।

- (মিইয়ে যাওয়া সুরে) হচ্ছে না বলছেন? মিডিয়াম চেঞ্জ করতে হবে?

- লেখালিখি তো প্ল্যানচেট নয়৷ যে ভূতের ব্যাটাবেটি রেস্পন্ড করছে না বলে মিডিয়াম চেঞ্জ করবে। 

- (রুমালের মা, বারুইপুরের আইফেল) ইয়ে৷ তাও বটে৷ কিন্তু, একদু'বার ছাপাও হয়েছে কিন্তু, আমার লেখা৷ 

- ভেরি গুড৷ ভেরি গুড৷ ছাপা হয়েছে৷ ব্লগ আছে৷ ফেসবুক আছে৷ তা'হলে লেখালিখির চেষ্টা করতে ক্ষতি কী?

- ক্ষতি নেই৷ না?

- ইউ মাস্ট৷ তবে আই মাস্ট সে, তোমার ব্লগটা দিব্যি জমজমাট। ক্রিস্প৷ তরতরে৷ 

- এ'বার আসি জ্যেঠু৷

- আর তোমার ট্যুইটগুলোও ভালো হচ্ছে৷ 

- আসি জ্যেঠু৷

- গুড গোয়িং৷ চালিয়ে যাও৷ ব্রাভো!

- আসি। 

- এসো। আর লেখালিখির ব্যাপারটাও চেষ্টা করে দেখো, কেমন?

Comments

Unknown said…
অনবদ্য ।
Unknown said…
অনবদ্য ।

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু