Skip to main content

পঞ্চার এন্ট্রান্স পরীক্ষা

- কী রে পঞ্চা, নার্ভাস?
- না..ইয়ে..মানে বলাইদা, এত বড় এন্ট্রান্স...।
- এগজামিনেশনেই এত ভয়? এরপর গ্রুপ ডিসকাশন, ভাইবা। তখন তা'হলে কী করবি?  রিল্যাক্স।
- খুব খেটেছি বলাইদা, তুমিই তো কোচিং করালে। জানোই তো।
- সে জন্যেই বলছি। তোর প্রিপারেশন চমৎকার হয়েছে। স্পট-হিউমরের অব্জেক্টিভ টাইপ কোশ্চেনগুলো একটু মাথা ঠাণ্ডা রেখে হ্যান্ডেল করিস। কেমন?
- প্রচুর ক্যান্ডিডেট, তাই না বলাইদা?
- প্রতি বছর মড়ার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। মেডিকাল সায়েন্সের প্রগ্রেসেও মহামারী যুদ্ধ আটকাচ্ছে না। আর মড়াদের ইন্টেলিজেন্সও বাড়ছে। আমার কোচিং সেন্টারেই দেখ না, পাঁচ বছর আগে দেড়শো মড়া নিয়ে শুরু করেছিলাম। এখন হাজার দুই, তিরিশটা ব্যাচ।
- একবার যদি লাগিয়ে দিতে পারি...।
- তাহলে একটা হিল্লে হলো আর কী! এস-ও-বি এন্ট্রান্স ক্লীয়ার করা ! এর মানে স্ট্রেট অফ ফেমে চলে যাওয়া। প্রতি বছর কয়েক লাখ ভূত এই পরীক্ষার জন্য মেহেনত করে। কোয়ালিফাই করে জনা দশেক। এস-ও কোয়ালিফায়েড ভূত চাঁদু, শুধু ভূতেরা নয়; মানুষও তেনাদের হিংসে করে।
- বলাইদা এস-ও কোয়ালিফাইড ভূতেরা নাকি রবি ঘোষের ডায়লগের মত? নতুন ছুরির মত ধারাল অথচ গুপ্তিপাড়ার মাখা সন্দেশের মত নরম?
- নিশ্চয়ই এ'সব বাজে এক্সপ্রেশন আঁশবাজার পত্রিকায় পড়েছিস? পত্রিকাটা কী ছিল আর কী হল! যাক গে, তবে এস-ও-বি'রাই শ্রেষ্ঠ। পূর্ণেন্দুবাবুর পোয়েট্রির চেয়েও লিরিকাল তেনারা, লক্ষণের ব্যাটের পেটির মত শানানো।  তোর মধ্যে এস-ও-বি এন্ট্রান্স ক্লীয়ার করার সমস্ত কোয়ালিটি আছে।
- জীবদ্দশায় সে ভদ্রলোকের স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী চোর হতে পারলাম না। সে দুঃখ যাওয়ার নয়। বলাইদা, আশীর্বাদ কর মড়া হয়ে  অন্তত যেন শীর্ষেন্দু-অদ্ভুতুড়ে-ভূত এন্ট্রান্স ক্লীয়ার করে সেল্ফ অ্যাকচুয়ালাইজেশন স্পর্শ করতে পারি।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু