Tuesday, November 7, 2017

জালিম খাঁ


কয়েক হাজার বছর আগের কথা। ভাগ্যিস নিউমোদক স্যুইটসের ফুলকপি-শিঙাড়ার তেলে ল্যাপ্টানো আঙুলে হিস্ট্রি বইয়ের পাতা ওল্টাতে গিয়ে সেই গোপন চ্যাপ্টারটার পৌঁছনো গেছিল। ভাগ্যিস।
নয়ত কুমার জালিম খাঁর খবরাখবর পাওয়া হত না।

চারদিকে রক্তারক্তি অবস্থা। দুশমনিস্তানের বিরুদ্ধে শত্রুপুরের এন্তার খুনোখুনি চলছে দেড়শো বছর জুড়ে।   যুদ্ধের ইন্ট্রারভ্যালে কুমার জালিম খাঁ এক বাটি চানাচুর নিয়ে বসেছিলেন  যুদ্ধক্ষেত্রের এক নিরিবিলি কোণে। বাতাসে বারুদ, বালি আর লেবুপাতা ঘষা সুবাস। জালিম খাঁ মনে মনে সুরে ধরেছিলেন;
"মহব্বত মে নহি হ্যায় ফর্ক জিনে অউর মরনে কা, উসি কো দেখকে জিতে হ্যায় জিস কাফির মে দম নিকলে, হজারো খোয়াইশে অ্যাইসি কি হর খোয়াইশ মে দম নিকলে"। গানের কথা তো আর তলোয়ার নয় আর সুরও বল্লম নয় যে জালিম খাঁর হুকুমে তাদের নড়নচড়ন। চানাচুর মুখে বেশ নাস্তানাবুদ হচ্ছিলেন ভদ্রলোক।
ঠিক তখনই ভসভসে স্টোভ জ্বালানোর গন্ধে খাঁ সাহেবের গান থামল। ডিমের মুণ্ডুপাত করে যে যেন চাটুতে ঢেলেছে।  কুচো পেঁয়াজের অভাবেই স্পষ্ট; শত্রুপুরের খুনে দৃষ্টির থেকে এত সহজে রেহাই মিলবে না।
স্যান্ডো গেঞ্জির বর্মেও ভয় ঠেকাতে পারলেন না বাহাদুর জালিম খাঁ।
- সুর ঠিকঠাক লাগেনি, তাই না গো?
- আমার কান বেয়ে রক্ত ঝরছে, তা'তে তোমার কী?
- আসলে দু'দিন আগে বাথরুমে সুরটা অবিকল খাপে খাপ বসে গেছিল। গড প্রমিস। আজ তোমার সামনে একটু নার্ভাস হয়ে..।
- আমি তোমায় নার্ভাস করি?
- ইন আ ভেরি স্যুইট ওয়ে অফ কোর্স।
- বটে? বেশ। নোটেড।
কুমার জালিম খাঁর নোটেড গাছটি সে'খানেই মুড়িয়েছিল কিনা, সে বিষয়ে খোলাখুলি কিছু না বলে দেখা যাচ্ছে ইতিহাস মুখে কুলুপ এঁটে বালিশে মুখ গুঁজে উপুড় হয়ে শুয়ে রয়েছে। ইতিহাসের চোখ ছলছল, আঁচল দুরমুশ, হাতের মুঠোয় ঝগড়াহত সিনেমার জোড়া টিকিট।
জালিম খাঁয়ের মুখে চানাচুর আর লে হালুয়া।

No comments: