Skip to main content

শালা


শালা খিস্তি নয়। অশালীন নয়। বরং যথেষ্ট ছিমছাম। কখনও আদুরেও বটে।

সত্যজিৎ বলে যাননি, তবে নিশ্চিত ভাবে ফেলুদাও হয়তো মাঝেসাঝে ককিয়ে উঠতেন, “হয় এর বদলা নেব, নয়তো শালা গোয়েন্দাগিরি ছেড়ে দেব”।
বিবেকানন্দও হয়তো আদতে বলেছিলেন “জীবে প্রেম না করে শালা ঈশ্বরের সেবা হবে কী করে?”
গুরুদেব হয়তো নিখাদ ক্ষেদ নিয়ে বলতে চেয়েছিলেন “যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে শালা একলাই চলো”।
হাঁদা হয়তো মাঝে মাঝেই ভোঁদার ওপর রাগ করে বলে ফেলে “মাথা মোটা শালা”।
এক্সপেরিমেন্ট বিগড়ে গেলে নিশ্চয়ই প্রফেসর শঙ্কু খিচড়ে যাওয়া মেজাজে বলে উঠতেন “ধুর শালা”।
কুন্তী দ্রৌপদিকে পাঁচ ভাগ করতে বলায় অর্জুন কি একবারের জন্যেও মনে মনে “যা: শালা” বলেননি?
উদয়ন পণ্ডিত দড়ি টানতে টানতে একবারও গর্জে উঠে স্লোগান এডিট করে বলেননি “দড়ি ধরে মারো টান, শালার রাজা হবে খানখান?”
সুমন মন থেকে হয়তো যেটা বলতে চেয়েছিলেন সেটা হল “শালা এই ফাটকাবাজির দেশে স্বপ্নের পাখিগুলো বেঁচে নেই”। নেহাত ছন্দের খাতিরে সে শালা বাদ গেল।
স্টীভ ও বাঙালি হলে গিব্‌সকে নিশ্চয়ই বলতেন “ফেললি শালা কাপ ফেললি”।
ডিকেন্স বাঙালি হলে হলফ করে বলতেন “শালা সময়টায় যতটা পৌষের সুবাস ছিল, ততটাই ছিল পেছনে বাঁশ দেওয়ার বোটকা গন্ধ ”

“শালা” সম্বোধনে যে রগরগে আগুন রয়েছে সেটা নজরান্দাজ করলে চলবে কেন? কৃষ্টির অন্তরে রয়েছে আবেগ আর আবেগের নিউক্লিয়াসে রয়েছে “শালা” বলতে পারার নির্ভীকতা। রিয়েল সেন্টিমেন্টে ঝাড়া বুলিতে দু’ এক পিস শালা এদিক ওদিক ছড়িয়ে থাকতেই পারে; ঠিক যেমন ট্যাঙরা মাছের জোরদার ঝোলের বাটিতে দু চার পিস বড়ি – আহা:।

বেণী মাধব শীলের ফুল পঞ্জিকায় শ্যালক সম্বোধনের উপকারিতা সম্বন্ধীয় একটি পাতা যোগ হলে ভালো হয়; ফ্রম দি নেক্সট এডিশন। হিপোক্রিসি জলাঞ্জলি দেওয়ার সময় এসেছে।  

চালিয়ে যান। পাবলিক শালা সব খায়।       

Comments

যা বলেছো। একদম সত্যি কথা, শালা!!

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু