Skip to main content

পুজোর আট - ২০১৪

-   মহালয়া কি ডাইরেক্ট ক্যাচ করবেন বলে ঠিক করেছেন মিত্রবাবু?
-   কেন ?
-   না মানে অফিস রয়েছে কি না, অত ভোরে উঠলে আবার গোটা দিন গা-ম্যাজম্যাজ...বেলা বাড়লে বরং...আজকাল তো মহালয়ার সিডি পাওয়া যাচ্ছে
-   শুনুন মশাই, বাসি মহালয়া ইজ লাইক চালানি কাতলার ট্যালট্যালে ঝোল অমৃত আমার রুচবে না ভদ্রবাবু কাক ভোরে মেরুদণ্ডে পালক বুলিয়ে দেবেন, তবেই না থ্রিল

-   পুজোয় আমার আবার একটু বেড়িয়ে না আসলে চলে না মনটা আঁকুপাঁকু করে পাহাড়, সমুদ্র বা জঙ্গল নিদেন পক্ষে বোলপুরে গিয়ে চার দিন তা না হলে আমার চলে না, বুঝলেন কী না আপনার বোধ হয় তেমন বাতিক নেই, তাই না?
-   আমি ? পুজোয় আমার সমুদ্দুর বলতে খিচুড়ির বালতি, পাহাড় বলতে দুপুরের জগদ্দল ঘুম আর জঙ্গল বলতে পাড়ার মণ্ডপের ভিড়

-   ভলেন্টিয়ার-দাদা, প্রসাদ পেলাম না যে...
-   আরে তো ডেমো প্রসাদ, না পেলে ক্ষতি কি?
-   ডেমো-প্রসাদ ? রিয়েল কোনটা ভাই ?
-   রিয়েল পুজো আড্ডায়, ডেমোটি মণ্ডপে ডেমো প্রসাদ মণ্ডপে আর রিয়েল প্রসাদ ? পিটার ক্যাট বা আরসালানে চাপ নেবেন না
 
-   ইয়ে, আমি অভ্র
-   আমি কি তোমার নাম জিজ্ঞেস করেছি ?
-   না মানে বলছি এমনি ফর জেনেরাল নলেজ
-   ছিঃ, তোমার নাম কি বলিভিয়ার ক্যাপিটাল না খাদ্যমন্ত্রী যে জানলে আমার জেনারেল নলেজ বাড়বে? আর তাছাড়া কথা নেই বার্তা নেই পুজো মণ্ডপের ভিড়ে, গায়ে পড়ে, একটা অচেনা মেয়ের নাম জিজ্ঞেস করতে লজ্জা করে না?
-   মা, অচেনা কোথায় আগে থেকেই চেনা তো আগেই আলাপ হয়েছে তো...আপনিও কথা বলেছেন আমার সাথে...
-   মানে ? কবে হল আলাপ ? আমি কবে কথা বললাম ?
-    বা রে গতকাল ম্যাডক্স স্কোয়ারে দেখা হল আপনি বললেনএক্সকিউজ মি, একটু সাইড দিনআর আমি বললামনিশ্চয়ই

-   মেজদা, মেজদা
-   তখন থেকে ক্যাঁকক্যাঁক করছিস কেন
-   জেলুসিল আছে? তিনটে ডাব্ চিকেন রোল বড্ড বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে গো পেটে-বুকে কেমন করছে...
-   জেলুসিল নেই তবে এক প্লেট বাড়তি কিমা ঘুগনি রয়েছে চলবে?
-   চলবে বিটনুন ছড়ানো রয়েছে তো?

-   আচ্ছা, পুজো ভ্রমণে আপনার মেইন ফোকাস কোথায় থাকে ? প্যান্ডেলে না প্রতিমায় ?
-   আমার ফোকাস ? মেনু কার্ডে

-   বিলু, তুই পড়তে বসেছিস?
-   স্কুলের হোমওয়ার্ক আছে বাবা
-   পুজোর ছুটিতে হোমওয়ার্ক ? তোর স্কুলকে আমি রাস্টিকেট করবো...
-   আরে কি পাগলামি হচ্ছে বাবা...
-   পাগলামি? ক্লাস সিক্সের পুচকে ছিঁচকে তুই আমায় পাগল বলিস? তুই পাগল তোর বাপ পাগল না হলে কেউ সপ্তমীর দিন দুপুরে পড়তে বসে ?
-   তাহলে সপ্তমীর দুপুরে কি করা উচিৎ?
-   বন্ধুদের সাথে ফালতু গল্প করবি ছাদে বসে গল্পের বই পড়বি মোট কথা বাড়িতে বসে থাকবি না কেন বাড়িতে বসে আছিস বল তো বিলু ?
-   মা বারণ করেছে তুমি কেন বাড়িতে বসে আছো বাবা ?
-   চুপ ডেঁপো ছেলে পড়া বাদ দিয়ে গল্প করা? মন দিয়ে পড়...আমি আসি...
-   বাবা প্লীজ বল না...তুমি বাড়িতে আছ কেন?
-   তোর ঠাকুমা আমার মা বারণ করেছে দুপুর রোদে বেরোতে প্লীজ কাউকে বলিস না বিলু

-   আপনার কি দশমীর সিদ্ধি টেস্ট করা আছে?
-   আছে
-   স্বাদ?
-   চাঁদের মত স্বপ্নালু
-   বলছেন?
-   ট্রাই করবেন নাকি ?
-   ছেলেবেলার স্বপ্ন মশাই, আর্মস্ট্রং হব এই সুযোগ
-   স্মল চুমুক ফর ইউ ম্যান...
-   জায়ান্ট স্টেপ ফর হৃদয়...

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু