Thursday, January 10, 2013

বুদ্বুদ চিকিত্‍সা পদ্ধতি

সকল সাতটা। বাড়ির জানলা দিয়ে স্পষ্ট দেখা যায় বাস-স্টপ।সেইখানে একটি বছর পাঁচেকের ছেলেধবধবে সাদা স্কুলের জামায়। এক হাতে একটি ছোট্ট ক্যামেরা রোলের ডিব্বা; যাতে ভর্তি সাবান জল। অন্য হাতে তারের সরু কাঠি যার ডগাটা গোল করে পাকানো। ছেলেটি একটি মশগুল বুদ্বুদ কারখানা। লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে বাস স্টপ ওলট-পালট। চারিদিকের হই-হল্লা, গাড়ির হর্ন, হাওয়ার ধুলো, রাস্তার স্বল্প কাদা, কোনও কিছুই তাকে স্পর্শ করছে না।

বুদ্বুদের নেশায় বুঁদ। গড়ে, প্রতি আড়াই সেকণ্ডে একটি সুডৌল বুদ্বুদ। আমি অন্তত শ-দেড়েক স্পষ্ট বুদ্বুদ গুণে ফেললাম। অনেকটা ঘুম আনতে ভেড়া গোনার মত কাজ দিলো পুরো ব্যাপারটা।
হাজার চিন্তা মাথায় ছিলো;  অফিসে অনেক ফাইল জমে আছে, বউকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে, গাড়ি ইঞ্জিনে গড়বড়-গ্যারেজে দিতেই হবে, অমৃতেন্দু কাল বেফসকা বসের সামনে ইনসাল্ট করে বসলে- বদলা নিতে হবে, বেকার জ্যাঠতুতো ভাইটা মাঝে মাঝেই বিশ-পঞ্চাশ ধার নিয়ে যাচ্ছে-সেটা বন্ধ করতে হবে, এ শনিবার রাম না হুইস্কি-সেটা নিশ্চিত করতে হবে; এমন কত চিন্তা শয়ে শয়ে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো, এই বুদ্বুদ গুনতে গিয়ে সব হাওয়া। কী জবরদস্ত থেরাপি। আমি নিশ্চিত, আর শ-দুয়েক বুদ্বুদ গুনতে পারলেই অফিসের পাঁকা-চন্দ্র দিবাকরকে খিস্তি মারার ইচ্ছেটা বেশ কমে যাবে। দশ-হাজার বুদ্বুদ গুনতে পারলে কী কোলেস্টেরল কমতে পারে ?

এমন সময় এক জনৈক মহিলার কাঁধ থেকে একটা স্কুল ব্যাগ নেমে এসে চাপলো ছেলেটার কাঁধেআর ঠিক সেই সময়ই একটা বিকট বাস এসে ছেলেটাকে তুলে নিয়ে হাওয়া হয়ে গ্যালো

নিম-চেবানো তেতো নেমে এলে আমার গলা বেয়ে। ফের স্নানে যেতে দেরি হয়ে গ্যালো। ফের বসের দাঁত খিচুনিফেড আপ।  

No comments: