Skip to main content

গানের দাওয়াই


- এই যে৷ স্যার! শুনেছেন কী? ওরা গান গাইছে৷

- বাহ্৷ বাহ্৷ কদ্দিন গজল-টজল শুনিনা ভাই সেক্রেটারি৷

- আরে! আপনার এগেইন্সটে গান গাইছে৷ সং অফ প্রটেস্ট!

- তা'তে কী?

- আপনার লেগপুল করে গান গাইছে যে!

- তা'তেই বা কী? 

- আরে! আরে আপনাকে ইনসাল্ট করে গান বেঁধেছে!

- এই সেরেছে! তুমি কি নিশ্চিত সেক্রেটারি?  ও গানে আমায় ইনসাল্ট করা হচ্ছে?

- রীতিমতো জুতো মারা হচ্ছে৷ এর একটা বিহিত না করলে আপনার নাকের ডগায় ফোস্কা পড়বে৷ 

- আরে সামান্য গানই তো গেয়েছে৷ সৈন্যসামন্ত তো জড়ো করেনি৷ তুমি বড় খামোখা চিন্তা করো সেক্রেটারি। 

- দেখুন স্যার৷ বন্দুক চালালে কামান দাগা যায়৷ তর্ক জুড়লে খিস্তি করা যায়৷  কুস্তি করলে লেঙ্গি মারা যায়৷ কিন্তু গান গাইলে মহামুশকিল মাল্টিপ্লাইড বাই কেলোর কীর্তি৷ কলার টেনে মানুষের পিলে চমকানো যায়, সুর ভোলানো মুশকিল৷ 

- গান কী ডেঞ্জারাস ভাই সেক্রেটারি! 

- টোটাল বিষ!

- তবে? উপায়? কানটান মুলেটুলে যদি...?

- এ কী ক্লাস-পালানো ছেলেছোকরা পেয়েছেন? 

- ছেলেপিলে লেলিয়ে ওদের হারমোনিয়াম সরিয়ে নেওয়া যায় যদি? 

- কাঁচকলা হবে৷ একজনের হারমোনিয়াম কাড়লে দশজন বাক্স বাজিয়ে গান জুড়বে৷ শেষে পাড়ার জলসা রুখতে গিয়ে ডোভারলেন বসে যাবে৷ 

- টেরিফিক ক্যালামিটি৷ তা'হলে কী হবে হে? মগজধোলাই যন্ত্র?

- ধ্যাত্তেরি৷ ও'সব মান্ধাতা আমলের জিনিস আপনার গ্রেট-গ্রেট-গেট গ্র‍্যান্ডফাদারের আমলে চলত স্যার৷ ও'সব প্রিহিস্টরিক কন্সেপ্ট শুনে লোকে ফিকফিক করে হাসবে৷  

- তা'হলে কি কোনও উপায়ই নেই ভাই সেক্রেটারি?

- উপায়? উপায় আছে৷ 

- আছে? মাইরি?

- আলবাত আছে৷ ওরা নতুন নতুন গান বাঁধবে, আর আমরা নিত্যনতুন নিউজচ্যানেল খুলব! 

- নিউজচ্যানেল?

- ওদের তৈরি গানের ভাইরাসকে কাবু করার একমাত্র ভ্যাক্সিন - আমাদের তৈরি নিউজ৷ পারমিশন দিন স্যার, একটা নতুন নিউজচ্যানেল আর চারটে নতুন নিউজপোর্টাল শুরু করি৷

- এইত্তো চাই৷ এতেই তো ইকনমিক প্রগ্রেস ভাই সেক্রেটারি! সাবাশ! সাবাশ!

- থ্যাঙ্কিউ স্যার৷ থ্যাঙ্কিউ। 

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু