Skip to main content

আরও ভালো

বই ভালো, তবে বইয়ের চেয়েও ভালো বই বুকে সোফা-ঝিমুনি।

বেগুনি ভালো, তবে বেগুনির চেয়েও ভালো হল ঠোঙ্গার তলানিতে নুন মাখা বেসনের খসে পড়া ঝুড়ি।

ছাদে বৃষ্টিতে কাক ভেজা ভালো, তবে আরও মিঠে হল ব্যালকনিতে বৃষ্টির ছাঁটে ফতুয়া আধ-ভিজিয়ে ফেলা।

প্রেম ভালো, স্কুল-কলেজ প্রেম তো বেশ জমাটি। তবে তার চেয়েও বেশি জম্পেশ ছিল “প্রেম হচ্ছে না, প্রেম হচ্ছে না” বলে মিউচুয়াল হা-হুতাশ। তা আরও মধুময়।

কবিতা পড়ে আনমনা হয়ে যাওয়া ভালো। তবে ঢের ভালো হচ্ছে কাব্যি না বুঝে ভেবড়ে যাওয়া।

চা ভালো, টা অবভিয়াসলি বেটার। চায়ের জন্যে টা হচ্ছে কোদালে অ্যাটিচিউড। টায়ের জন্য চা হচ্ছে পিকাসো-পন্থী ভাবনা।

চুমু ভালো। বেশ ভালো। তবে আরও গভীর জলের কেস হচ্ছে কানের লতি ছুঁয়ে যাওয়া অপ্রয়োজনীয় ফিসফিস।

বন্ধুদের কাছে দিল উজাড় করে গল্প করে যাওয়ার যে কী সুখ। তবে পিতৃদেবের সামনে দামড়া বয়েসে “ভুল হয়ে গেছে বাবা” বলতে পারার যে তৃপ্তি, তা রবীন্দ্রনাথ হতে পারাতেও নেই।

বেহালা-ওয়ালার কভার ড্রাইভ অনাবিল। ভগবানের ড্রাইভ; দ্রাবিড়ের ঠ্যাঁটা-পনা; লক্ষণবাবুর কব্জি; সমস্তই অনাবিল। তবে আরও মায়াবী হয়তো ছিল কুম্বলেবাবুর চোয়াল। শুধু চোখে পড়ে না সহজে। মায়া কী না।

“আমি তোমায় ভালোবাসি” ভালো। “ইয়ে, আমি বোধ হয় তোমায় একটু ইয়ে টাইপ করি”- আরও ভালো, আরও কংক্রিট। মেলোডি আছে।    

ফেলুদা ভালো, ফেলুদার প্রতি নিষ্পাপ স্মৃতিময় ভালোবাসা ও ভক্তিভাব; ভালো। তবে আর ভালো হল নিভৃতে ফিসফিস করে বলতে পারা “বেশ কয়েক জায়গায় ও আরও একটু শার্প হত পারতো”।     

Comments

Upolobdhi kora bhalo. Tobe aaro bhalo hochchhe, shwikar korte para. Darun just! :)
Kuntala said…
"কবিতা পড়ে আনমনা হয়ে যাওয়া ভালো। তবে ঢের ভালো হচ্ছে কাব্যি না বুঝে ভেবড়ে যাওয়া।" হাই ফাইভ।
Anonymous said…
Osadharon

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু