Skip to main content

বেমতলব

দুনিয়াটাই শালা বেমতলবে চলে।

বেমতলবে গুলতে হওয়ার সময়ই গুলতের মা সটকে যায়। বেমতলবে গুলতের বাবা রোজ চুল্লু খেত আর মালের সাথে চাখনা হিসেবে পুচকে গুলতে’কে আড়ং ক্যালাতো। বেমতলবেই গুলতের বাবাটাও অকালে চুল্লু শহীদ বনে গেল। বিনা কিসি মতলব কা গুলতে খিদের জ্বালায় আস্তাকুঁড়ে পড়ে থাকা পচা ভাত আর সিগেরেটের পোড়া ফিল্টার একসাথে চটকে খেত; রুতি-তরকারি গেলা বড় বাপের বাচ্চারা মালুমই পাবেনা সে মণ্ডের কি অপরূপ সোয়াদ।
বেমতলবে চড়তি-জওয়ানির হাতে আঁকা সাদা-লাল পোষ্টারটার দিকে নজর গেলে গুলতের ভালোও লাগতো, লজ্জাও লাগতো, অস্বস্তিও লাগতো। বেমতলবে গুলতেকে বিশে-দা পকেট কাটা শেখালো, বোতল-দা ছোরা চালাতে শেখালো, হিরা শেখালো গাঁজা টানতে আর মিনু শেখালো মেয়েদের ঘাটতে। বেমতলব, এম-এল-এ দিবাকর বাগচি’র ডান হাত কানা-ভোলার পাল্লায় পড়ে বোমা বাঁধতে শিখলো উনিশের গুলতে।

বেমতলবে হাতের বাঁধা বোমা ফস্কে দড়াম ফেটে গেল। বেমতলব আওয়াজ, হল্লা, আগুন, পুলিস, হাসপাতাল- মাঝখান থেকে মিনুর বুক-মাথা-পেট এক সাথে দলা পাকিয়ে গেল আর গুলতের ডান হাত, পিঠ-বুকের এক খাবলা মাংস আর ডান ঠ্যাংখানা গায়েব হয়ে গেল।

বেমতলবে কালীঘাটের চড়া রোদ গুলতের খাবলানো পিঠে ঘামাচি ও পুঁজ ছড়িয়ে দেয়, বেমতলব গুলতের ভিক্ষার এলুমিনিয়ামের বাটিতে হিসি করে যায় কুকুর-ছানা। বেমতলব গুলতের আচমকা রক্ত বমি দেখে মাথা ঘুরে যায় মারুতি থেকে নামা সুগন্ধি বউদি’র।

বেমতলব হারামজাদারা সরকারি মর্গের খরচ বাড়ায়।    

Comments

Sauranshu said…
Eta ki likhle boss. Two thumbs Up
Sauranshu said…
Eta ki likhle boss... Two thumbs up

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু