Skip to main content

মর্নিং ওয়াক

মর্নিং ওয়াক ইস নেসেসারীইয়েস স্যার, ফিটনেস ছাড়া বাঙালি এগোতে পারবে নারিয়েল পরিবর্তন চাইলে রাইটার্সএর আগে নিজের ভূড়িটাকে কন্ট্রোল করতে শিখতে হবেআর শরীরটাকে চাবুক-চনমনে করতে হলে সবার আগে কী চাই?
না, ইসবগুল নয়, গুলবাজ বাঙালির দিন শেষসবার আগে দরকার মর্নিং ওয়াকনেকু হাঁটা নয়, দ্রুত গতির মিলিটারি হাঁটাভোর ছটা থেকে সোয়া-সাতটা, নন-স্টপইকনমিক এবং এফেকটিভ জিম
২০১২ থেকে আমি পাল্টে যাব, আমার ঘুম ভাঙ্গা পাল্টে যাবে, ভূড়ি-বাদ নীতিতে নিজেকে আমূল বদলে স্মার্ট বাঙালি করে ফেলবোপ্ল্যান-মাফিক কাজ শুরুমর্নিং ওয়াক হলো গিয়ে সায়েবি ব্যাপার, হাভাতের মত পায়জমা গলিয়ে তো আর মেদ-বিরোধী হণ্টনে নাম যায় না
তার জন্যে প্রয়োজন সরঞ্জামগত প্রস্তুতি। ১লা জানুয়ারী থেকে যে ভোরমুখী মেটামরফোসিস ঘটবে তার জন্যে ৩১শে ডিসেম্বর লিষ্টি হাতে বেরোলুম শপিংয়ে।
- জম্পেস একটি স্পোর্টস শু, না দৌড়বো এমন আহাম্মক আমি নই, তবে হাঁটতে হলে;-স্টাইল লাগে
- তিনটে গল্ফ টি-শার্ট গদাই-লস্করি ফতুয়া পরে হাঁটলে কী আর হাঁটায় সাহেবী দুলুনি আসে নাকি?
- স্টপ ওয়াচ ঘড়ি-ফড়ি ফালতু চিজ, হাঁটার গতি যদি মাইক্রোসেকেণ্ডে মাঁপতেই না পারি, তাহলে নিজের উন্নতি ট্র্যাক করব কী ভাবে
- সিপার যুক্ত জলের বোতল। গেলাসে চুমুক দিয়ে কিনা হাঁটতে বেরোবো? আহাম্মক নাকি আমি?
- আই-পড শাফল। কানে নচিকেতা না ঢুকলে, পাঁয়ে দুলুনি আসবে কী করে ?
- এল্যার্ম ঘড়ি: একটা বিরাশী-সিক্কার এল্যার্ম ঘড়ি যাতে স্নুজ করবার কোনও উপায় নেই। মোবাইলে এল্যার্ম-ট্যালার্ম চলবে না। ডেডিকেটেড এল্যার্ম ঘড়ি ছাড়া বাঙালির ভোরের ডেডিকেটেড ঘুম কিছুতেই ভাঙ্গবে না।
- দেড় কিলো ছোলা।এক কিলো গুড়জলে ভিজিয়ে এক মুঠো খেয়ে নাও রোজ সকালেতন্দরুস্তি আর কাহাকে বলে?
রাজকীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হতেই মনে হল আমার তলপেটের মেদ যেন সামান্য টান-টান হয়ে উঠেছেতোফাএবার বাকি ছিল শুধু ১লা জানুয়ারী থেকে শরীর-যুদ্ধে ঝাঁপ
****
আজ ১৯য়ে জানুয়ারীএকটানা ১৮টি মর্নিং-এল্যার্মকে একক প্রচেষ্টায় ব্যর্থ করেচ্ছি। না। এখনো আমার মর্নিং ওয়াকে বের হওয়া হয়নিযাবতীয় প্রচেষ্টা সত্বেও বেলা পৌনে-আটটার আগে একদিনও উঠতে পারিনি আমিতবে নতুন এল্যার্ম ঘড়িটির আওয়াজ নাকি এতটাই দাপুটে যে আমার স্ত্রী প্রতিদিন সাড়ে-পাঁচটায় তরাং করে উঠে পড়ছেন। এবং আমার প্রবল মনোবলের কাঁধে ভর দিয়ে আমার স্ত্রী অত্যন্ত সফল ভাবে গত দুই সপ্তাহ ধরে নিয়মিত প্রাত:ভ্রমণে বেরোচ্ছেনক্রিকেটিও ভাষায়, এ তো আমারই মরাল ভিক্টোরি

Comments

Anirban Halder said…
Enjoyed the post a lot. The legendary Bengali lethargy and fitness unconsciousness :)!
মর্নিং ওয়াক সকালে না করে বিকেলে করা যায় না? তাহলে এলার্মের ঝামেলা কম, ভুঁড়িহ্রাসের বদলে নিভৃত পার্কে বসে মশলা মুড়ি দিয়ে বৃদ্ধি এবং ভুঁড়িবৃদ্ধি করা যায়!
Gablu said…
কোনও অন্যায় কর নাই,
ইহাই 100% স্বাভাবিক,
ল্যাদ আমাদের জন্মগত,
কিছু কুক্ষিগত করিতে বললে,"Sick".
Dibyojyoti said…
Darun post dada! You and me = Same! :-D

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু