Skip to main content

পলিটিক্স ইজ ইন আওয়ার ব্লাড


পলিটিক্স ইজ ইন আওয়ার ব্লাড। শুধু গোল্ডফ্লেক্‌ ফুঁকে আর লিট্‌ল ম্যাগ ঘেঁটে ইন্টেলেকচুয়াল বনে থাকা যায় না। পলিটিক্স বুঝতে হবে এবং টেবিল চাপড়ে বোঝাতে হবে। ব্রাজিলে যদি সবাই ফুটবল-বিদগ্ধ হন, তবে কলকাতাইয়া মাত্রই রাজনীতিজ্ঞ এবং রীতিমত থুঁতনি চুলকনো সেফলজিস্ট। অবিশ্যি আমাদের রাজনীতিতে ডান-বাম তেমন কিছু নেই। উইং বলতে দুটিই ; অতি-বাম এবং প্রবল-বাম। বুর্জোয়া রাজনীতি এবং পনীরের ঝোলের পরোয়া বাংলাই কোনোদিন করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না।


কলেজে ভালো ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করেন, গবেটরা গায়ে হাওয়া লাগিয়ে নবাবী করেন আর বুদ্ধিমানেরা রাজনীতি করেন। উপযুক্ত দাদা-দিদিদের চিনে নেওয়া, মিছিল-টিছিলে র্যাীম্প ওয়াক, ইউনিয়ন রুমে দেদার ফ্রি চা-বিস্কুট, ব্রিগেড মিটিং’য়ের দিনে পার্টি ব্যাজ আর বিরিয়ানির বাক্স এবং সর্বোপরি; এলেম থাকলে কচি নেতা’র উপাধি – এইসব মিলে ছাত্র রাজনীতি।

ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয় হাতেখড়ি না হলেও ক্ষতি নেই। সক্রিয় বলে অবিশ্যি কিছুই হয় না; আদতে সবই ইন-ডাইরেক্ট ; অন্যের মাথায় কাঁঠাল ক্র্যাক করে দুনিয়া চলছে।
বাঙ্গালির কাছে রাজনীতির ডিস্ট্যান্স লার্নিং কোর্স হিসেবে রয়েছে জলখাবারের পাতে আলু ভাজার হলুদ মাখা খবরের কাগজ। অথবা পাড়ার অমুক-দা বা ছোটকাকার পলিটিকাল এনালিসিস ও টিপ্পনী। রাজনীতির যাবতীয় জ্ঞান কুলকুল করে অনবরত মগজে চালান হয়ে চলেছে।

যৌবনের রঙ দেহে সঠিক ভাবে লাগবার আগেই মনে লাগে পার্টির রঙ। পাড়ার নেতা তখন দেবতা, আখের তখন পার্টি ম্যানিফেস্টো। এর সাথে যোগ হয় গোঁয়ার্তুমি; এই ব্যাপারটি সমুচিত পরিমাণে না থাকলে চায়ের দোকান কি কফি হাউসের পলিটিকাল তর্কে জমি পাওয়া অসম্ভব। আস্তিনে যদি কিছু জাঁদরেল খিস্তি গুঁজে নেওয়া যায় তবে অতি জম্পেশ।

বাঙালি মননে রাজনীতির আলোচনা বলে কিছু হয় না, হয় শুধু তর্ক ও ঝগড়া। এট দি হাইয়েস্ট ফর্ম- হাতাহাতিও চলতে পারে। আমি যা বলছি; চমৎকার বলছি আর আমার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই সে ব্যাটা ক্যাপিটালিস্ট রাস্কেল। আমি চাই উন্নয়ন আর আমার বিরোধী মানেই পুকুর-ডাকাত। আমি হচ্ছি লিবারেল আর যে উল্টো কথা বলে সে হিটলারের চুমু খাওয়া বান্দা। আমার মতবাদ তুলসি পাতা আর অন্য মতবাদ চোলাই।

বেশির ভাগ বাঙ্গালির জন্যে রাজনীতির আড্ডা এক ধরনের সুস্বাদু ও অব্যর্থ ইসবগুল বিশেষ।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু