Skip to main content

বাজেটের ব্যাপারস্যাপার


- শোনো বউ!

- বলে ফেলো।

- শুনতেই হবে কিন্তু।

- কান তো আর বন্ধ করে রাখার উপায় নেই৷ 

- একটা প্রপোজাল ছিল।

- শুনি৷

- প্রপোজালটা এক্সেপ্ট করতেই হবে কিন্ত।

- ঈশ্বর তো নই যে ডিসপোজ করব।

- আজ তোমারও স্যালারি ঢুকল৷ আমারও। 

- তা'তে কী?

- মাইনে পাওয়ার দিন আমরা মাসকাবারি সেরে বাড়ি ফিরি৷ সে'টাই ট্র‍্যাডিশন৷ তাই না?

- বীটিং আরাউন্ড দ্য বুশ? বলো প্রপোজালটা কী।

- বলছিলাম যে, আজ মাসকাবারিটা ড্রপ করে যদি..।

- যদি?

- অমন টেঁটিয়া সুরে 'যদি' বললেই আমি নার্ভাস হয়ে যাই বউ৷ 

- মাসকাবারি ড্রপ করে? কী?

- একট ট্যাক্সি নিয়ে সোজা পার্ক স্ট্রিট৷ সে'খানে মোকাম্বোয় বসে কবজি ডুবিয়ে দেব৷ পাশাপাশি একটু গলা ভিজিয়ে নেওয়া, সামান্য ঢুলুঢুলু৷ বুঝছ তো।

- খুব বুঝছি৷ ডেভিলড ক্র‍্যাব৷ স্টেক৷ সিজলার৷ টুটিফ্রুটি। স্ক্রুড্রাইভার৷ মোহিতো।

- তোমার তুলনা নেই বউ। মেনুটা তা'হলে ফাইনাল৷ আর তারপর মোকাম্বো টু বাড়ি ফেরাও তা'হলে ট্যাক্সিতেই৷ 

- বেশ৷ দু'রাউন্ড ট্যাক্সি, হাইক্লাস খাবারদাবার, ককটেল। সব মিলে অন্তত তিন হাজার।

- তিন?

- মিনিমাম। এ'দিক এ'মাসে ইন্স্যুরেন্সের প্রিমিয়াম দিতে হবে।

- মাইল্ড কেলো।

- বাবার টেস্টগুলোও এ'মাসে না করালেই নয়..।

- স্লাইটলি মেজর কেলো।

- গত মাসে মাইক্রোওয়েভ কেনা হল৷ বাড়ল আর একটা ইএমআই।

- সিগনিফিক্যান্টলি মেজর কেলো৷

- অতএব?

- শালার বাজেট না তেলের বাঁশ৷ দু'পা রেভিনিউতে উঠি, সাত পা এক্সপেন্সে নামি৷ 

- তা বর, ট্যাক্সি ডাকি?

- ট্যাক্সি, মোকম্বো৷ তারপর বাজেট ডেফিসিটে অক্কা যাই আর কী৷

- অতএব? 

- ওই৷ আমাদের ডেস্টিনি৷ বাবুঘাট মিনি৷ তারপর লঞ্চ৷ তারপর ট্রেন৷ আর তারপর মুদীর দোকনে ফর্দ সাবমিশন। 

- শোনো৷ মাসকাবারি ফর্দে আজ কয়েকটা আইটেম যোগ করি বরং৷ তবে সে'সব আইটেম তুমি মুদীর দোকানে পাবে না৷

- কী জিনিস বউ?

- ভডকা। অরেঞ্জ জুস৷ ককটেল হম বানায়েগা। মুর্গিটা বরং তুমি ভেজো। আর টুটিফ্রুটির বদলে বাড়িতে পাটালি আছে৷ ফ্রেশ।

- ভডকা? আর এ মাসের বাজেট ডেফিসিট?

- ইকনমিক সার্ভে বলছে ভডকায় ঝিমুতে ঝিমুতে শীতের রাতে টোনাটুনির ঢলাঢলি করে ছাতে ওঠাটা হল জরুরী ইনসেন্টিভ প্যাকেজ৷

- তোমার তুলনা নেই বউ৷  

- বলছ?

- কলেজে আমার সঙ্গে প্রেম করে বখে না গেলে তুমি ধুরন্ধর পলিটিশিয়ান হতে৷ নির্ঘাৎ৷

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু