Skip to main content

রিপোর্টনগরী



- সান্যাল, ক্যুইক৷ একটা ছোট রিপোর্ট চাই৷ অন দ্য মার্কেট প্রস্পেক্টস অফ আওয়ার নিউ প্রডাক্ট৷
- ওকে স্যর৷ ইয়ে, কত ছোট রিপোর্ট?
- নট মোর দ্যান আ পেজ৷ এক পাতার বেশি কেউ আজকাল পড়তে পারে না৷ হাফ পাতা হলে আরও ভালো।
- বেশ বেশ৷ তা কবে চাই?
- কবে কী৷ আজই৷ আধ ঘণ্টার মধ্যে৷
- বেশ৷ তা, প্রডাক্ট সম্বন্ধে কিছু ইনপুট যদি পাওয়া যেত স্যর..।
- অফকোর্স। এই ফাইলে সব আছে।
- এই ফাইলে?
- এই ফাইলে।
- এই ফাইলে অন্তত পাঁচশো পাতা রয়েছে তো।
- ছ'শো এগারো৷
- আধ পাতা লেখার জন্য ছ'শো পাতার ইনপুট? আধ ঘণ্টায়?
- কুড়ি মিনিটে হলে ভালো হয়।
- কিন্তু..।
- ব্রাইট ইয়ং চ্যাপদের মুখে কিন্তু শব্দটা বড্ড বেমানান সান্যাল।
- কিন্তু স্যর..।
- ক্যুইক৷ ক্যুইক। গেট গোয়িং৷ জানো তো সাইমন সাইনেক কী বলেছেন?
- কর্পোরেট কোটেশনে মোটিভেশন সইবে না স্যর৷ আমি রিপোর্টটা বানিয়ে আনছি।
- বাহ্। সাইমন সাইনেকের নামে বেশ কালীর মানতের স্ট্রেন্থ আছে দেখছি। কেমন হাতে গরম মোটিভেশন পেলে বলো..।
**
- সান্যাল, রিপোর্ট তো দিব্যি হয়েছে৷ কিন্তু এইসব প্রজেকশন আর নম্বর তো গুল। রিপোর্টে এত গুল দেওয়া কি ঠিক হল?
- গুল?
- ডাহা গুল৷ এক্কেবারে নির্জলা গুল। টেনিদাকেও লজ্জায় ফেললে দেখছি৷ এই সব নম্বরগুলো পেলে কোথা থেকে?
- কেন? আপনার দেওয়া ওইসব ইনপুট থেকে।
- আমার দেওয়া ইনপুট?
- ওই যে৷ ছ'শো পাতার ফাইল৷
- ও'তে এইসব সংখ্যা দেওয়া আছে?
- আলবাত৷ পেজ তিনশো বাইশ রেফার করে দেখুন..।
- সর্বনাশ! ওই ফাইলে এইসব নম্বর রয়েছে?
- আপনি জানতেন না?
- তোমায় কী বলেছিলাম সান্যাল? আজকাল মানুষের হাতে অত বাজে সময় নেই যে একপাতার বেশি পড়বে৷ আমি কি বোকা যে ওই ছ'শো পাতা পড়ে দেখব? আর তোমাকেও বলিহারি, এই ফাইল পুরো পড়তে গেলে?
- ও মা, আপনি তো ইনপুট হিসেবে দিলেন, কয়েক পাতা পড়ে দেখব না?
- তুমিও চাইলে আমিও দিলাম৷ প্রটোকল৷ স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্র্যাক্টিস৷ কিন্তু দিলাম বলেই পড়তে হবে? তোমার লাজলজ্জা নেই ভাই সান্যাল? এই অ্যাটিচিউড নিয়ে তোমার কেরিয়ার এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে ভেবেছ?

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু