Skip to main content

অশ্বিন ও ভদ্দরলোকের ক্রিকেট - অনুবাদ




আরে! আজ নাকি #WorldTranslationDay!

অতএব, রইল অনুবাদ।

***'ভদ্দরলোকের ক্রিকেট'***

- রবিচন্দ্র অশ্বিন।


১। ফিল্ডার বল ছুঁড়েছে দেখেই আমি রান নেওয়ার জন্য ছুটেছিলাম। ঋষভের গায়ে যে বল লেগেছে, সে'টা আমি দেখতে পাইনি৷

২৷ যদি সে'টা আমার দৃষ্টিগোচর হত, তা'হলেও কি আমি রান নিতাম?
আলবাত নিতাম৷ কারণ সে'টা বেআইনি নয়।

৩। মর্গান আমার ব্যবহারকে লজ্জাজনক বলেছেন৷ তাই কি?

আলবাত নয়।

৪। আমি কি ঝগড়া করছিলাম?

না৷ সোজাসাপটা কথাগুলো মাথা উঁচু করে নিজের হয়ে নিজেকেই বলতে হয়। নিজের বাপ-মা আর বড়দের থেকে আমি অন্তত সে শিক্ষাই পেয়েছি৷ আর পারলে নিজের ছেলেমেয়েদেরও সে'টাই শেখান, তা'তেই মঙ্গল। মর্গ্যান বা সাউদির কাল্পনিক ক্রিকেট জগতের ভালোমন্দ নিয়ে আমার বলার কিছুই নেই। কিন্তু তাই বলে তারা অকারণ কলার টেনে জ্ঞান দেবেন বা খিস্তি করবেন, সে'টা ঠিক হজম করা যায় না৷ আরও অবাক হই,  যখন দেখি এই সাদামাটা ঘটনার মধ্যেও মানুষজন ভালোমানুষ বা ভিলেন খুঁজে হদ্দ হচ্ছেন৷

যাক গে, 'ক্রিকেট ভদ্দরলোকের খেলা' বলে যাঁরা গলা ফাটাচ্ছেন, তাঁদের বলি; অসংখ্য ক্রিকেটার প্রতিদিন ক্রিকেট মাঠে জান লড়িয়ে দিচ্ছে, কেরিয়ার তৈরি করতে চাইছে৷ পারলে আদত সত্যিটা তাদের শেখান; একটা বাজে থ্রো থেকে পড়ে পাওয়া বাড়তি একটা রান দিব্যি গোটা কেরিয়ার দাঁড় করিয়ে দিতে পারে। আবার কোনও এক ননস্ট্রাইকার এক গজের বেআইনি সুবিধে আদায় করে নিয়ে তার কেরিয়ার খতমও করে দিতে পারে। ভালোমানুষির লোভ দেখিয়ে তাদের ক্রিকেট-বুদ্ধিটুকু গুলিয়ে দেবেন না৷ ন্যায্য রান না নিয়ে বা ননস্ট্রাইকারকে আউট না করে ক্রিকেটে এগোতে চেয়ে লাভ নেই, আর তা'তে ভালোমানুষিও নেই।  এই সব ঠুনকো ভালোমন্দের জ্ঞান দেওয়া মানুষগুলো কিন্তু নিজেদের আখের গুছিয়ে দিব্যি সরে পড়েছেন।

খেলার মাঠে জান লড়িয়ে দেওয়া ছাড়া গতি নেই, এবং সে'টা করতে হবে খেলার সমস্ত আইনকানুন মেনেই৷ আর খেলা শেষ হলে বিপক্ষের সঙ্গে 'হ্যান্ডশেক' সেরে নিয়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে আসা।
ব্যাস!

'স্পিরিট অফ দ্য গেম' বলতে আমি অন্তত সে'টুকুই বুঝি৷

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু