Skip to main content

ইনভেস্টমেন্ট



- ইয়ে, তা এই শেয়ার মার্কেটের সিচুয়েশনটা কেমন বুঝছেন বিপিনবাবু?

- যারা ভেবেচিন্তে হিসেব কষে পা ফেলে, যাদের ডিসিপ্লিন আছে; তাদের জন্য শেয়ার মার্কেটে সবসময়ই রমরমা৷ 

- আপনার তা'হলে টুপাইস স্মুদলি আসছে বলুন৷

- আমি তো চুনোপুঁটি হে। সামান্য কয়েকটা টাকা এ শেয়ার থেকে ও শেয়ার খেলিয়ে চারাপোনার সাপ্লাইটা এনশিওর করে যাচ্ছি৷ 

- তা বিপিনবাবু, শেয়ারমার্কেটে যদি আমিও টাকা রাখতে চাই..।

- তাই বলো৷ এদ্দিন পর আমার শরীর-স্বাস্থ্যের খবর নিতে আসনি৷ এসেছ ধান্দা নিয়ে৷ 

- ধান্দা শব্দটা কেমন যেন ইয়ে৷

- স্পষ্ট কথাকে হামেশাই ওই ইয়েই মনে হয়।

- সহকর্মী হিসেবে আপনাকে আমরা কতটা রেস্পেক্ট করি বিপিনবাবু..। সে জন্যেই তো আজ..।

- প্রাক্তন সহকর্মী৷

- অফিস থেকে রিট্যায়ার করেছেন বলে কি আমরা আপনাকে ভুলে গেছি ভাবছেন? ছি ছি..। 

- ক্যাপিটাল কত?

- আজ্ঞে?

- মার্কেটে কত রাখতে চাও?

- কত রাখা উচিৎ বলুন তো? ফিক্সড ডিপোজিটই বলুন বা প্রভিডেন্ট ফান্ড, ইন্টারেস্ট তো নোজ-ডাইভ করছে। তাই ভাবছিলাম..লাখখানক টাকার শেয়ার কিনে যদি মাস ছয়েকের মধ্যে ডবল করা যায়..।

- মাস ছয়েকে টাকা ডাবল?

- আপনার মত দুঁদে কনসালট্যান্ট থাকতে..হে হে..।

- শেয়ার মার্কেটে অ্যালকেমির লজিক চলে না৷ তবে উপায় একটা আছে..।

- অপশনস? কল? পুট? ও'সব আমি বুঝব?

- না, না৷ ও'সব মামুলি এলাকায় পড়ে থাকলে তোমার চলবে না৷ তোমায় একটু অন্য স্কেলে যেতে হবে। 

- কী'রকম? 

- লটারির টিকিট কাটো৷ আর পাশাপাশি একের পর এক মানত করে যাও৷

- ঠাট্টা করছেন বিপিনবাবু?

- সিরিয়াস ভায়া। তবে মানতের লেভেলটা ক্রমশ বাড়িয়ে যেতে হবে৷ প্রথম শনিমন্দিরে পঞ্চাশটাকার সন্দেশ মানত করবে৷ তা'তে ফল না হলে কালীঘাটে পাঁঠা৷ তারপর কামাখ্যায় বালুচরী৷ তা'তেও শিকে না ছিঁড়লে তিরুপতিতে সোনার হার৷ বলা যায় না, কোটিটাকার সুটকেস কেউ বাড়ি পৌঁছে দিতে পারে৷ 

- আপনি আমার মক করছেন বিপিনবাবু৷

- অন দ্য কন্ট্রারি৷ শেয়ার মার্কেটে দু'মাসে টাকা ডবল করার চেয়ে স্ট্যাটিস্টিকালি সেফার অপশন সাজেস্ট করছি৷ ক্রিকেট বেটিং সাজেস্ট করতাম তবে বেআইনি কাজ উইক কলজে দিয়ে হবে না।

- ধুস।

- অন আ সিরিয়াস নোট৷ টাকা শিওর শট ডবল করতে যাওয়ার কয়েকটা উপায় আছে৷ এবং সে'টার জন্য দু'মাস অপেক্ষাও করতে হবে না৷ 

- সে'গুলোও শুনেই রাখি৷

- এক নম্বর, প্রয়োজনে মানুষের পাশে আলতো করে দাঁড়াও৷ মানিব্যাগ উপুড় করে দিতে হবে না, এই সামান্য কিছু। বিপদগ্রস্ত মানুষের হাতে দু'পয়সা গুঁজে দিয়ে জাস্ট সরে পড়ো৷ পিছু ফিরে তাকিও না। দু'নম্বর৷ ঘুরে বেড়ানোর প্ল্যান ছকে ফেলো। একবার সাহস করে, আখেরের চিন্তায় ঘাবড়ে না গিয়ে, বোনাসের টাকা আর একঝাঁক আর্ন্ড লীভ পাহাড়ে ঘুরে খরচ করে ফেলো৷ বুকের ভিতর হাইক্লাস ভালোবাসা জেনারেট হবে হে, আর তাতেই আখেরে মঙ্গল৷ এমন কোনও স্টক মার্কেটে নেই যা এই রিটার্ন ম্যাচ করতে পারে৷ কেমন?

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু