Sunday, January 24, 2021

অফিস ক্যান্টিনে


- এই যে, বিভূতি। অনেকদিন পর তোমায় এই অফিস ক্যান্টিনে দেখলাম। খবর কী ভায়া?
- সোমবারের অফিস। রিভিউ৷ বসের চাঁটি৷ খবর জিজ্ঞেস করে খোঁটা দেওয়ার কোনও মানে হয় মধুবাবু? এই কোনওরকমে মুখে কিছু দিয়ে ফের ছুটতে হবে৷
- ইয়ং-জেনের এই এক সমস্যা৷ সবসময় শুধু হন্যে হয়ে দৌড়ে বেড়াচ্ছ৷ আর রোক্কে রোক্কে৷ মাঝেমধ্যে কম্পিউটার বা ফাইল থেকে চোখ সরিয়ে একটু নিঃশ্বাস নাও। লেবুজল খাও। আকাশে মেঘ জমল কিনা খবর নাও।
- আকাশ ফ্যাকাসে মধুবাবু। মেঘে নেই, পলিউশন আছে। কাজের চাপে নাভিশ্বাস উঠছে আর লেবুজলের বদলে বড়বাবুর দাবড়ানির ঘোল খেতে হচ্ছে।
- চাপে রয়েছ যে হে।
- ঘেঁটে ঘ মধুবাবু৷ ঘেঁটে ঘ৷
- তোমার এক পেগ দরকার৷
- পেগ?
- এক পেগ৷ সোমরস। সোমবারের দুপুরে এ জিনিস সামান্য পেটে না পড়লে আমার হপ্তাটাই মাটি৷
- আমার আবার ও'সব চলে না৷ কিন্তু মধুবাবু, অফিসটাইমে অ্যালকোহল? কেউ জানতে পারলে যে তুলকালাম হবে।
- আহা৷ এ হল সোমরস আলট্রা৷ এ জিনিস অত মামুলি নয় হে৷ মামুলি নয়। তুমিও চেখে দেখ৷ বসের চাঁটি আর ফাইলের চাপ সমস্ত হজম হয়ে যাবে৷
- ব্যাপারটা কী?
- প্ররি রোববার দুপুরে পেল্লায় এক কড়াই মাংসের ঝোল রাঁধি, বুঝলে। সোমবারে মাংসের সেই বাসি ঝোল পড়ে থাকে, অথচ তা'তে মাংস আর থাকে না৷ সোমবারের ব্যস্ততায় সে ঝোল নষ্ট না করে অফিস বেরোনোর আগে তা'তে খানকয়েক ডিম দিয়ে সামান্য নেড়েচেড়ে নিই - তৈরি হয় মাসলোর পিরামিডের ডগায় বসানো সোমরস। আমি বলি সোমরস আলট্রা৷ ডিমটা স্রেফ চাখনা, আসল নেশা হল এই বাসি ঝোলের; কোথায় লাগে তোমাদের সিঙ্গল মল্ট৷
- প্রসাদ পাব নাকি মধুবাবু? এক পেগ?
- আরে সে জন্যেই তোমায় ডাকলাম হে৷ অমন শুকনো মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছ, এক পেগ সোমরস আল্ট্রা তোমার প্রাপ্য৷ বসো, বসো৷ আমি টিফিনবাক্সটা খুলি৷

No comments: