Skip to main content

ছাতু আর ফলিডল

- বিট্টা! অ্যাই বিট্টা!
- আমায় ডাকছ বাবা?
- ন্যাকাউদ্দিন বুরবক্! এ বাড়িতে ক'টা বিট্টা আছে?
- হয়েছেটা কী?
- তোর লজ্জা করে না জিজ্ঞেস করতে? ব্যাটা রাস্কেল।
- পার্ট ওয়ানে কম নম্বর? সে'টা হঠাৎ মনে পড়ল? তবে মাসখানেক আগে বেরোনো রেজাল্ট নিয়ে এখন আবার...।
- শাট আপ। দ্য গ্রেট হারু ডাকাতের রক্ত রয়েছে আমার  মধ্যে, আমি কি মার্কশিটকে ডরাই?
- বাজারে করে না হয় বাইশ টাকা সরিয়েছি, তার জন্য এই রাতদুপুরে এত তোলপাড়?
- চোপ ব্যাটাচ্ছেলে। বাসমতির কাঁকর তুই। এগরোলের কুমড়ো সস। তোকে দেখলেই গা রিরি করছে। ইশ, তোকে বেদম জুতোলে যদি শান্তি পাই।
- আরে! তোমার ব্যাঙ্কের কাজ আজ করিনি, একটা ভালো বই পড়ছিলাম। কাল করে দেব। এত ঝ্যামেলার কী আছে।
- টাকা রাবড়ি, রাবড়ি টাকা। ব্যাঙ্কফ্যাঙ্ক নিয়ে আমি ভাবিনা। তবে তোর মত এমন হাড়বজ্জাত আমি আগে দেখিনি।
- আরে আমি করেছিটা কী?
- কী করেছিস? এরপরেও জিজ্ঞেস করতে সাহস পাচ্ছিস? কী করেছিস?
- মাইরি, কিছুতেই ধরতে পারছি না।
- তা কী করে ধরতে পারবে; গবেটেন্দ্র গাম্বাট বাহাদুর। আমার কপালেই জুটেছে এমন আপদ।
- বলবে কী হয়েছে?
- আজকের দিনটার কথা খেয়াল আছে?
- আজ? সোমবার!
- তারিখটা কত? সে'টা খেয়াল আছে?
- ষোলোই। জুলাই। তা'তে কী?
- তা'তে কী? মুখ ভেঙে দেব ইডিয়ট।
- ষোলোই...ষোলোই...ওহ হো! আজ তো..আজ তো তোমাদের বিবাহবার্ষিকী! বলা হয়নি তোমায়; কঙ্গ্র‍্যাচুলেশনস পিতা!
- তোর শুভেচ্ছাকে দলা পাকিয়ে থুতু মাখিয়ে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেল।
- আরে...হয়েছেটা কী?
- কুলাঙ্গার!  হয়েছেটা কী? লজ্জা করে না? তোর উচিৎ ছিল না আমায় সময় থাকতে রিমাইন্ড করা?
- আমার উচিৎ ছিল?
- হ্যাঁ হ্যাঁ তোর! বাপের পয়সায় মিতার সঙ্গে বসে মিত্র কেবিনের কবিরাজি সাঁটাতে পারো, আর এটুকু মনে করাতে পারো না?
- মিতা নয়, স্মিতা। আর বিবাহবার্ষিকীর কথা তোমার বুঝি এই মনে পড়ল?
- জাস্ট! সকাল থেকে তোর মায়ের মেজাজটা গোলমেলে ছিল, ঠিক গ্রিপ করতে পারিনি..এই জাস্ট কিছুক্ষণ আগে...।
- কিছুক্ষণ আগে?
- কার্পেট বম্বিং।
- অতএব?
- ড্রয়িং রুমে শুতে যাচ্ছি। ডিনারে ছাতুর সরবত।
- এহহে। তবে মিতা মাকে উইশ করেছে। সকালেই। রিলেশনশিপ বিল্ডিং।
- মিতা? স্মিতা নয়?
- এহহে, মানে ইয়ে...স্লিপ অফ টাং। স্মিতা।
- আমার না হয় ছাতু জুটেছে, তোর কপালে বোধ হয় ফলিডল নাচছে রে।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু