Tuesday, April 24, 2018

মিস্টার স্মিথ



বড় হওয়ার প্রসেসে একটা জব্বর 'বাগ' রয়েছে। মাঝেমধ্যেই মনে হয় 'অ্যাই যে, এইবারে বেশ দাঁড়িয়ে গেছি। দেওয়াল ঘড়ির ব্যাটারি পাল্টাবো। চালানি কাতলা চিনে ফেলে নাক সিঁটকবো। খোকাটি পেয়ে শুকনো বাঁধাকপি গছিয়ে দেবে, তেমন বান্দা আর কেউ থাকবে না চারপাশে'। তখন মনে হয় বুড়োদের মাথায় হাত বুলিয়ে বলি; 'আরে আমি থাকতে তোমার সাতপাঁচ ভাবার আছেটা কী'? 

ঠিক তখুনি দুম করে একটা 'ভুল' ঢুকে পড়বে; আর সমস্ত গুবলেট, গোটা ইকুইলিব্রিয়াম জলে। পায়ের তলার মাটি ঝুরঝুরে হয়ে পড়বে, চেনা মানুষগুলোর গা থেকে পাওয়া যাবে অন্য গ্যালাক্সির গন্ধ। কিছু হাত নরম 'আছি তো'র সুরে পিঠে নেমে আসে, কিন্তু তবু ধুকপুকানি বাড়তে থাকে। সমস্ত মাটি করে ফেলার অপরাধবোধ গলা টিপে ধরে।

তখন এই দামড়ামোর খোলস ছেড়ে বেরোনো জন্য যে কী প্রাণান্তকর আইঢাই। আর এই দুর্বিষহ বয়স আর পাপ ঝেড়ে ফেলার একটাই জায়গা আছে বোধ হয়; মা-বাবা। ভুল স্বীকারের এমন নিশ্চিন্ত আশ্রয় আর নেই। কাঁধে বাপের হাতের মত সৎসাহস আর হয় না। 

র‍্যান্ডি পশ্ বলেছিলে সরি বলার তিনটে ভাগ আছে;
- দুঃখপ্রকাশ।
- দোষ নিজের কাঁধে তুলে নেওয়া।
- দোষগুলো শুধরে নেওয়ার জন্য সমস্ত কিছু করতে চাওয়া।

স্মিথের 'সরি' সে অর্থে 'কপিবুক'। আর সবচেয়ে বড় কথা;  স্মিথ ভেঙে পড়েছিলেন বুড়ো বাপের জন্য; লজ্জায়, দুঃখে, অনুশোচনায়। খোকার পাশে পাহাড় হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বাবা; যদ্দিন তিনি দাঁড়িয়ে আছেন, তদ্দিন ঈশ্বরেরও ক্ষমতা নেই খোকার শৈশব কেড়ে নেওয়ার।

তবু। কোথাও কারুর হত মনে হবে গিমিক, সাজানো। জানি না। তবে আত্মসমর্পণের অন্ধকারে খোকার পাশে আলো হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বাবা, আমার বাবা-বিশ্বাসী চোখে সে'টুকুই আশ্বাস। 
শাস্তিটুকু থাক, আর শাস্তির ও'পাশে থাকুক ভালোবাসায় মজবুত খোকা। 

ফিরে আসুন স্টিভ। ফর ইওর ওল্ড ম্যান। আমরা অপেক্ষায়।

No comments: