Skip to main content

জিলিপিস্তান


- দেখেছেন? দেখেছেন জিলিপিটার সাহস? আমায় ভ্যাঙাচ্ছে ব্যাটচ্ছেলে! বদমাইসের গাছ।

- কোনটা?

- ওই যে। ওইটে।

- জিলিপি জিভ বের করে ভ্যাঙাচ্ছে?

- জিলিপির জিভ হয়? সে ব্যাটা গামলা থেকে মুণ্ডু বের করে নাচিয়ে আমায় অপমান করছে।

- কই দেখি।

- মন দিয়ে দেখুন। ওই যে। বাঁদিকে যেখানে ফোকাসটা এসে পড়ছে। ওই ব্যাটা হারামি জিলিপ। আমায় হ্যাটা করছে।

- ঠিক। ঠিক। স্পষ্ট দেখছি। আপনার প্রতি একটা ডিস্টিঙ্ক্ট অবজ্ঞা ওর চোখে মুখে ফুটে উঠছে। আপনি ইনসাল্টেড ফিল করছেন না?

- করছি না আবার! গা রি রি করছে।

- আমারও! রক্ত টগবগ করে ফুটছে। আপনার অপমান মানে আমার অপমান।

- নেহাত আমার সুগারটা বেড়েছে তাই।

- তা বলে অপমান টলারেট করবেন? ও ব্যাটা জিলিপির বাচ্চা কন্সট্যান্ট হাবেভাবে আপনাকে বলছে 'ধক থাকে তো খেয়ে দেখা"।

- ধক নিয়ে কথা বলছে। আমারও তাই মনে হচ্ছে। যদিও আমার সুগারটা বেড়েছে।

- রাজপুতেরা সম্মানের জন্য কচাকচ নিজেদের গলা কাটত জানেন?

- রাজপুতেরা নিজেদের গলা কাটত। আর আমি সামান্য সুগারের ভয়ে অপমান হজম করব?

- কভি নহি। আপনি সহ্য করলে আপনি আমার চোখে নেমে যাবেন।

- ঠিক হ্যায়। অ্যাই ব্যাটা, জিলিপি দে দেখি এক পিস। এইটা নয়। ওই ফোকাসে নিচে যেটে দাঁত কিড়মিড় করে পড়ে আছে, উসকো লাও।

- শ্যামবাবু।

- ইয়েস অমিয়বাবু।

- আই অ্যাম প্রাউড অফ ইউ। জিলিপি ব্যাটাকে যোগ্য ঠ্যাঙানি দিয়েছেন।

- থ্যাঙ্ক ইউ।

- একটা কথা বলি?

- বলুন।

- গতকাল লালুর তেলেভাজার দোকানে একটা আলুর চপ আমায় দেখে বিশ্রী খ্যাঙোর খ্যাঙোর শব্দ করে হাসছিলে। রাস্কেল কোথাকার। নেহাত কোলেস্টেরল লেভেলটা বিট্রে করছে। নেহাত।

- অপমান। অপমান। বিটনুন অন ইঞ্জুরি। এ আপনি সহ্য করবেন?

- সহ্য করব না?

- সহ্য করলে আপনি দেশের কলঙ্ক। দশের কলঙ্ক।

- মানুষ আমি, নহি তো মেষ। বদলা নেব।

- আলবাত নেবেন।

- কোলেস্টেরলের ক্যাঁথায় আগুন, ল্যাজে ভেসলিন। চলুন, নেক্সট বদলা; কালু দাসের স্পেশ্যাল আলুর চপ।

- জয় হিন্দ।

এক জোড়া বিরাশি বছর জিলিপিস্তান জয় করে চপনগরের দিকে রওনা হলেন।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু