Monday, January 15, 2018

বসত করে কয়'জনা


ব্যালকনিতে কনকনে হাওয়া। গায়ে মাথায় শাল জড়িয়েও ঠকঠক করে কাঁপতে হচ্ছে। মনোহরবাবু সিগারেট ধরিয়ে মোড়াটা টেনে বসলেন। তবে দু'টানের মাথাতেই টের পেলেন যে এই ঠাণ্ডায় বসে থাকা যাবে  না। বাধ্য হয়ে উঠতে হল।


ঘুম না এলে বিছানায় এ পাশ ও পাশ করাটা বেশ অস্বস্তিকর। তাছাড়া বিধাতা ব্যালকনি সৃষ্টিই করেছেন নির্ঘুম রাত্রিগুলোর জন্য। বালিশের পাশে রাখা গোল্ডফ্লেকের প্যাকেট আর দেশলাই পকেটে নিয়ে উঠলেন মনোহরবাবু। বারান্দায় যাওয়ার আগে গায়ে শালটা ভালোভাবে পেঁচিয়ে নিতে হল, এ'বছর ঠাণ্ডাটা মোক্ষম পড়েছে।


শোওয়ার ঘরের উত্তরে ব্যালকনির দরজা। সে'খানেই মুখোমুখি ধাক্কা। কী মুশকিল। ঘরে একা থেকেও ঝামেলার শেষ নেই। মাঝেমধ্যেই ঝুটঝামেলা। এই যেমন এই মাত্র বারান্দা থেকে উঠে আসা মনোহরবাবুর সঙ্গে শোওয়ার ঘর থেকে ব্যালকনির দিকে যেতে চাওয়া মনোহরবাবুর মুখোমুখি ধাক্কা। ব্যালকনি মুখো মনোহরবাবু গজরগজর করতে করতে ব্যালকনির মোড়ায় এসে বসলেন।


ব্যালকনি ফেরতা মনোহরবাবু তিতিবিরক্ত মেজাজে বাথরুমের দিকে এগিয়ে গেলেন। ঘুম না আসার সমস্যা অতি বিশ্রী। বাথরুমের সামনে গিয়ে তিনি দেখলেন বাথরুমের দরজা বন্ধ, ভিতরে আলো জ্বলছে। আর বাইরে একজন ইতিমধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। মেজাজ সপ্তমে চড়ে গেল মনোহরবাবুর, তিনি বলেই ফেললেন "এত রাত্রেও বাথরুমের সামনে লাইন, পাবলিক ইউরিনালের মত অবস্থা হল দেখছি"।


বাথরুমের দরজা বন্ধ, ভিতরে বলাই বাহুল্য কেউ আছে। মনোহরবাবু বাথরুমের দরজায় দু'বার নক্ করে বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন। এমন সময় পিছন দিক থেকে আওয়াজ এলো "এত রাত্রেও বাথরুমের সামনে লাইন, পাবলিক ইউরিনালের মত অবস্থা হল দেখছি"।


মনোহরবাবুর রাতের ঘুম না আসার সমস্যাটা নতুন নয়। আর বাথরুমের দিকেও মাঝেমধ্যেই ছুটতে হয়। কিন্তু তাতেও কি সোয়াস্তি আছে? বাথরুমে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই দরজায় টোকা আর বাইরে থেকে আওয়াজ। অসহ্য।

No comments: