Skip to main content

প্রফেট

১। গান 


- ঈশ্বর!!


- অবাক হচ্ছ? 


- ভাবতে পারছি না।


- আমার জন্যেই তো এত তোড়জোড় তোমার, তাই না?


- আমি তো নিমিত্ত।


- যুদ্ধে চললে?


- সংগ্রাম। ধর্মের হয়ে। আপনার হয়ে। এ শুধু যুদ্ধ নয়। আপনার পুজোও বটে। আশীর্বাদ করুন। 


- বন্দুক কেন সাথে?


- পুষ্পাঞ্জলির সময় আসবে ইশ্বর, এ সংগ্রামের অন্যদিকে। সমস্ত পাপের শেষে। ততদিন যে বন্দুকই যে আপনার চরণকমলে নিবেদিত। আশীর্বাদ করুন হে শ্রেষ্ঠ। 


- বেশ। আশীর্বাদ করি তোমার বন্দুককে স্পর্শ করে। এসো কাছে, ও বন্দুক এগিয়ে দাও।


- আমি ধন্য।

বন্দুক ছুঁয়ে ইশ্বর গাইলেন - 

" ...তুমি হও আমার মেয়ের ঘুমিয়ে পড়া মুখ
তাকিয়ে থাকি,এটাও আমার বেঁচে থাকার সুখ"।


পুচকে কবরের বুকে লুটিয়ে পড়লেন ভক্ত। বৃষ্টি নেমে ধুইয়ে দিল কবরের উপরের ধুলো, ভিজিয়ে দিলে পিঠের আলগা হওয়া বন্দুক।

ভক্তের বুকে রয়ে গেল হাপুস কান্নার সুর - 


"তুমি হও বেঁচে থাকার রসদ সবার কাছে", তার গালে স্মৃতির ধুলো, কাঁধে ট্রিগারের ভার, পিঠে ঈশ্বরের হাত।


২। উত্তর 

- তুমি শেষ পর্যন্ত ওই দিবাকর জানার ছেলেকে বিয়ে করবে? শেষে ওই গোয়ালার ছেলেকে পছন্দ করলে তুমি? ছিঃ।

- তোমার চিন্তাগুলো এত ছোট বাবা? দিবাকরকাকু গোয়ালা তো কী হয়েছে? অনেস্ট বিজনেস্‌ করে এসেছেন গোটা জীবন। ওর ছেলে ইঞ্জিনিয়ার। 

- থাম! বড় বড় কথা শিখেছ। তুমি ওই গোয়ালা দিবাকর জানার ছেলেকে বিয়ে করতে পারবে না। 

- আমি তোমার কথা শুনতে পারব না। 

- আমার কথা শুনবে না?

- না।

- বটে? খুব লায়েক হয়েছ না? প্রেম করে বিয়ে করবে? ওই ছেলেকেই বিয়ে করবে? ও তোমার স্টেটাস মেইন্টেইন করতে পারবে? ডাক্তার সান্যালের ছেলের সম্বন্ধ এসেছে। তাকে ছেড়ে তুমি ওই জানা গোয়ালাকে কনসিডার করতে পারলে কী করে? তুমি আমার ডিসিশন কিছুতেই শুনবে না? চুপ থেক না, উত্তর দাও। 

- প্রশ্নগুলো সহজ, আর উত্তরতো জানা।



৩। চেনা 





- আপনি বুদ্ধ?

- ইয়াপ্‌।

- গৌতম বুদ্ধ?

- ইয়াপ্‌।

- রিবার্থ?

- ইয়াপ্‌।

- হোয়াট দ্য হেল? 

- হেল? ওই ব্যাপারে কিন্তু আমি সাইলেন্ট।

- ধুর।

- রিয়েলি। বাই দি বাই, আপনি?

- আপনি যখন বুদ্ধ, তাহলে আমি চে গুয়েভেরা। 

- ওকে চে।

- বেশ, আপনি যখন বুদ্ধ; তখন ফিলোসফি কিছু ঝাড়ুন।

- ফিলসফি? ফিলোসফি একটাই। ওই গিটারটা দিন। শুনিয়ে দিচ্ছি।

- গিটার চাই? কেন?

- সে জন্মে নির্বাণ এ জন্মের গিটার। দিন না দিন। ফিলোসফি গেয়ে শোনাই। 

- এই নিন। শুরু করুন।

- চে না দুঃখ,চে না সুখ...

Comments

Rohon said…
আচ্ছা ডাক্তার সান্যাল মানে কি ডক্টরেট করা সান্যাল? Just asking.

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু