Skip to main content

মুক্তি

- আসুন।

- সময় কম।

- গুড। আই লাইক দোজ হু ভ্যালু দেয়ার টাইম।

- আমায় এখনই বেরোতে হবে।

- তাই বলে অপ্রয়োজনে হুড়োহুড়িটা ভালো নয়।

- কাজের কথায় আসুন।

- চা না নেসক্যাফে?

- কাজের কথা।

- হুইস্কি?

- প্লীজ অর্জুন ভাই। কাজের কথাটা আগে।

- কাজ তো আপনার। আমি তো সার্ভিস প্রোভাইডার।

- কাজটা কাল হয়ে যাওয়া জরুরী।

- হয়ে যাবে।

- অযথা যেন...।

- কোন ইশারা আপনার দিকে যাবে না সাধনবাবু। রিল্যাক্স। কেউ টেরও পাবে না খুন হয়েছে। অ্যান্ড ইউ উইল বি আ ফ্রী বার্ড।

- হ্যাঁ, ইট শুড লুক লাইক আ সুইসাইড। 

- চিন্তা করবেন না। কুড়ি লাখটা ভুলবেন না। দশ অ্যাডভান্স। 

- আমি কুড়িই দেব আগাম।

- দরকার ছিল না।

- দরকার আছে।

- কাইন্ড অফ ইউ। নিশ্চিন্তে থাকুন। কাল বিকেলের মধ্যে আপনার মিসেস খালাস আর আপনি ফ্রী।

- আমার বউ খালাস মানে?

- মার্ডার। খালাস।

- আমার বউকে খুন করবেন কেন?

- আপনার মিসেসের থেকে আপনার মুক্তি চাই। তাই আমায় দিয়ে খুন করাচ্ছেন। কুড়ি লাখ দেবেন কথা হল। আর এখন জিজ্ঞেস করছেন আপনার বউকে খুন করব কেন?

- এ বুদ্ধি নিয়ে আপনি গ্যাং চালান?

- হোয়াট ডু ইউ মিন।

- স্পেসিফিক ইন্সট্রাকশন না শুনে অপ্রয়োজনে তাড়াহুড়ো ভালো নয়।

- খুন কে হবে?

- আমি। দ্যাট উইল বি মুক্তি ফর মি।

- মাথা ঠিক আছে?

- কম্পলিটলি।

- এখনই খেল খতম করে দিচ্ছি তাহলে।

- নট নাউ। কাল। বিকেল চারটেয়। 

- কালই কেন?

- আজকের দিনটা বেঁচে থাকার বড় ইচ্ছে। বৌ আগামীকাল দুপুরে মাটন রাঁধছে। 

- সেই বৌয়ের থেকে মুক্তি চাইছেন?

- হেহ! হুঁ। 

- নান অফ মাই বিজনেস সাধনবাবু। বাট হোয়াই?

- ওই মাটনে বিষ থাকবে। আমি কেমিস্ট অর্জুন ভাই। আমার ল্যাবেরই কম্পাউন্ড সরিয়েছে। ঘণ্টা দশেক লাগবে নার্ভ সিস্টেম অকেজো হয়ে মারা যেতে। 

- মাটনে বিষ মিশিয়ে আপনার বৌ আপনাকে মারার প্ল্যান করছে? 

- সেন্টিমেন্টে বলে ফেললাম। পাঁচ কান করবেন না যেন। 

- নান অফ মাই বিজনেস। কিন্তু তাহলে আমায় বিশ লাখ দিচ্ছেন কেন আপনাকে খুন করতে? আর আপনার ওয়াইফই বা আপনাকে খুন করছে কেন? 

- পরকীয়া। আমার মৃত্যুটা ওর জন্য নেসেসারি। কিন্তু এত কাঁচা প্ল্যান করেছে যে ফাঁসবেই। তাই। মেয়েটা বড় স্ট্রাগল করে বড় হয়েছে। বিয়েটা বড় অল্প বয়েসে করে ফেলেছিল। এখন ওর দম বন্ধ হয়ে আসছে। বুঝতে পারি। কিন্তু কিছু করতে পারি না। অমিতকে ভীষণ ভালোবেসেছে।

- অমিত?

- ফেসবুকে আলাপ ওদের। সবই জানি। শুধু ওকে টের পেতে দিই না। মেয়েটা বড় হেল্পলেস। অমিত ছেলেটা ওকে বোকা বানাচ্ছে। ওকে সুখেও রাখবে না। তবু আমার প্রতি ঘৃণাই ওকে ওর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ও ডেস্পারেট হয়ে উঠেছে; মাথা ঠিক রাখতে পারছে না।

- এত খবর রাখেন?

- রাখি।

- সুইসাইড করছেন না কেন?

- স্ট্যামিনা নেই।

- বউয়ের হাতের বিষ মাটন খাবেন জাস্ট সো দ্যাট হার ভেনজেন্স ইজ টেকেন কেয়ার অফ। আর মরার আগে আমার লাগানো লোকের হাতে খুন হবেন যাতে আপনার বৌকে পুলিশ না টাচ করে।

- জলবৎ।

- এই বিশ লাখ দিয়ে বরং আপনার ওয়াইফের ইলিগাল আশিককে খতম করুন।দ্যাট ইজ মাই সাজেশন।

- সে ব্যবস্থা আমি নিজেই করছি। ডোন্ট ওরি। 

- আপনি গুলিয়ে দিচ্ছেন মাথা। আত্মহত্যার স্ট্যামিনা নেই আর খুন করবেন?
- গুলি গোলা চালিয়ে দিন কাটাতে হয় আপনাকে অর্জুন ভাই। মগজে অত চাপ দেবেন না। শুধু জেনে রাখুন শাহরুখ খানের রব নে বনাদি জোড়ি দেখে ইন্সপায়ারড হয়ে একটা জালি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলেছিলাম বৌকে আবডালে থেকে ম্যানেজ দিতে। সংসারে বাঁধতে। কিন্তু যতক্ষণে টের পেলাম যে যশবাবুর স্ক্রিপ্ট আসলে জীবন থেকে হাজার মাইল দূরের গ্যাঁজা গ্যালাক্সি, ততক্ষণে বড় দেরী হয়ে গেছে। মাটনে বিষ মেশার ফিকির হয়ে গেছে। নিতু আরও দূরে চলে গেছে। কাল রাত আটটার মধ্যে আমার মারা যাওয়ার কথা। রাত এগারোটায় অমিতের ট্যাক্সি নিয়ে মোড়ের সামনে দাঁড়ানোর কথা। অমিত আসবে না। আপনি শুধু নিজের কাজটা গুলিয়ে ফেলবেন না। এই ব্যাগে বিশ লাখ আছে।

- থ্যাঙ্কস।

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু