Skip to main content

টেকনোলজিক

-   টেকনোলজির নিরিখে; ভাবতে পারছেন মশাই ঠিক কোন জায়গায় আমরা পৌঁছে গেছি ? এই যে হাতের তালুতে মোবাইল। তাতে সম্পূর্ণ মহাজগৎ লুকিয়ে আছে। ভাইব্রেশনটা ফিল করুন গুপ্তবাবু। ফিল করুন।
-   ফিল করবো ?
-   আলবাত করবেন। এই বারুইপুরে বসে আপনি জেনে নিতে পারেন প্যারিসের বাজারে টমেটোর কি দাম চলছে। কিনসাসায় কাল দু এক পশলা নেমেছিল কি না। বাদুরের ঝোলের রেসিপি।
-   বেশ চমৎকার।
-   শুধু চমৎকার ? অভাবনীয় বলুন মশায়।
-   না অভাবনীয় ঠিক বলতে পারছি না।
-   বটে ? এর চেয়ে তাবড় টেকনোলজি কিছু আপনি ব্যবহার করেছেন ? হ্যাঁ ?
-   নিশ্চয়ই করেছি। নয়তো বলছি কেন! জ্যৈষ্ঠের গরমে, ভেজা গামছায় গা মুছে, মেঝেতে মাদুর বিছিয়ে শুয়ে থাকার টেকনোলজি। ট্রাই করেছেন না কি ?
-   হোয়াট দ্য...
-   ফ্যাক্ট। ইট ইজ। হাজার এয়ার কন্ডিশনার কচলে যাবে সে শান্তির কাছে। বুঝলেন ?

**
-   আচ্ছা গুপ্তবাবু, স্পেস-ট্র্যাভেল সম্বন্ধে আপনার কি ওপিনিয়ন? মানে এই যে এতো স্পেসক্র্যাফট...
-   মহাকাশ ভ্রমণ...হুম...
-   ম্যাগনিচিউড টা বুঝুন। আজ পৌঁছে যাচ্ছি মঙ্গলে। কাল হয়তো অন্য কেন গ্যালাক্সি। পরশু হয়তো...
-   আরে মশাই স্পেসক্র্যাফট বাদ দিন। সকালের টুয়েল্ভ সি বাই ওয়ান ধরে শিয়ালদা যেতেই স্পাইন টস্‌কে যাচ্ছে। সোজা হিসেব। প্লুটোয় বারোয়ারী দুর্গাপুজো করার চেয়ে বেশি কঠিন হচ্ছে অফিস টাইমে রানিং বাস ধরে জানালার ধারে সিট পাওয়া। এন্ড অফ ডিসকাশন।

**
-   বুঝলেন গুপ্তবাবু, মেডিকেল সায়েন্স যে ভাবে প্রোগ্রেস করছে...অভাবনীয়
-   টোটালি এগ্রি করছি। স্ট্রবেরী ফ্লেভারের ইসবগুল, ক্যান ইউ ইম্যাজিন ?

**
-   আচ্ছা গুপ্তবাবু, ট্যুয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরির এই সায়েন্স-চমক সমৃদ্ধ সুপার-যুগে দাঁড়িয়ে আপনি কি নিশ্চিত বুঝতে পারছেন না যে আগামী একশো বছরে এ দুনিয়া কি সাঙ্ঘাতিক ভাবে পাল্টে যাবে ?
-   তাই তো।
-   সিরিয়াসলি গুপ্তবাবু। ভাবুন। আপনার কাছে যদি একটা টাইম মেশিন থাকতো, আপনার ইচ্ছে করতো না জানতে যে আজ থেকে একশো বছর পরে পৃথিবীর ভোল ঠিক কতটা পাল্টে যাবে ? ইচ্ছে করে না গুপ্তবাবু ?
-   ফ্র্যাঙ্কলি বলবো ?
-   অফ কোর্স।
-   টাইম মেশিন পেলে আমি আগামীকাল সকালে গিয়ে দেখে আসতাম যে গিন্নী আমার লুচির আর্জি মঞ্জুর করলে কি না।
-   ধুর কাঁচকলা!  

Comments

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু