Skip to main content

ম্যাজিক

- ম্যাজিক দেখবেন ?

- রিয়েলি ?

- অফ কোর্স। দেখবেন ?

- আপনি মশাই জব্বর কিন্তু...কই দেখান দেখি...

- এই রেস্তরাঁয় যা বসে আছি, এটা কোথায় ?

- দেশপ্রিয়...তো ?

- দেশপ্রিয় পার্ক কোথায় ?

- ক্যালক্যাটা। 

- ক্যালক্যাটা কোথায়? 

- ধুর মশাই। 

- পেশেন্স। ম্যাজিক আসছে। কোথায় ক্যালক্যাটা ?

- পশ্চিম বাংলায়। অ্যান্ড বিফোর ইউ আস্ক...পশ্চিম বাংলা রয়েছে ভারতে।

- ওকে। ভারত কোথায় ?

- যাচ্চলে। ভারত ? পৃথিবীতে!

- আর পৃথিবী ? 

- খেয়েছে। কি কুক্ষণেই যে ম্যাজিক দেখতে চাইলাম...

- আহ! ফোকাস করুন। পৃথিবী কোথায় আছে ?

- সোলার সিস্টেমে। 

-নাইস। সোলার সিস্টেম ?  সেটা কোথায়!

-সোলার সিস্টেম রয়েছে মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সিতে! তাই তো ?

- আর মিল্কি ওয়ে কোথায় আছে বলুন তো ? সুপার ক্লাস্টারে। 

- সুপার ক্লা...?

-ক্লাস্টার!। অনেকগুলো গ্যালাক্সি মিলে এক একটা সুপার ক্লাস্টার তৈরি হয়..

-দাঁড়ান মশায়...এক ঢোক জল খেয়ে নি...

- আর এই সুপার ক্লাস্টার রয়েছে কোথায় ? 

- ইউনিভার্সে ?

- সমগ্র ইউনিভার্সে নয়। অবজারভেব্‌ল ইউনিভার্সে। অর্থাৎ যেটুকু মহাবিশ্ব আপনার গোচরে রয়েছে। 

- অগোচরে কিছু আছে নাকি ?


- এবার বলুন দেখি, এই অবজারভেব্‌ল ইউনিভার্সটি কোথায় আছে ? 

- হু?

- কোথায় আছে ?

- লে হালুয়া। মহাবিশ্বই তো ফাইনাল ইউনিট। 

- তাই বুঝি ?

- তাই নয় বুঝি ?

- ধরুন মাল্টিপ্‌ল মহাবিশ্ব...

- মাল্টিপ্‌ল ?

- ইয়েস স্যার...

- অনেকগুলো মহাবিশ্ব মিলে মাল্টিভার্স...এক একটি বুদ্বুদের ভেতর অনেক গুলো ইউনিভার্স...যাকে আমরা বলছি মাল্টিভার্স...

- শরীর কেমন করছে...

- এবার ধরুন সেই কয়েকটা বুদ্বুদ মিলে যদি হয় একটা মলিকিউল... 

- যা! কি হচ্ছে কি...

- এই যে আপনি..আপনার ভেতরের অক্সিজেন... দেহের কার্বন...হাড়ের ক্যালসিয়াম...রক্তে আয়রন...আরও কত কিছু! সে মলিকিউলদের স্রোত আঁচ করতে পারছেন না আপনি ? অথচ সে অগুনতি মলিকিউলদের সাথে...কত অগুনতি মাল্টিভার্স...কত অগুনতি গ্যালাক্সি...কত অগুনতি সূর্য... কত অগুনতি পৃথিবী...কত অগুনতি কলকাতা...আপনার মধ্যে বয়ে চলেছে...সম্ভবত কত অগুনতি আপনি আপনার নিজের ভেতর খাবি খাচ্ছেন...ম্যাজিক নয় বলুন ?

- আ...আ...আমার মধ্যে...আ...আ...আমি... ?

- ম্যাজিক নয়...?

- আ...আ...আলবাত। নিজেকে ভীষণ ইনকন্সপিকুয়াস মনে হচ্ছে বুঝলেন...মানে মলিকিউল তো সব জায়গাতেই...

- নিশ্চয়ই...যেমন ধরুন আপনার কাটলেটে...কত অসংখ্য মলিকিউল...কত অসংখ্য দুনিয়া...কত অসংখ্য...

- মানে কত অসংখ্য ক্যালকাটা আর কত অসংখ্য আমি...তাই তো? এই কাটলেটের মধ্যে ? উফ! সাঙ্ঘাতিক। অ্যাপেটাইট চলে গেছে বুঝলেন। টাচ করতে মন চাইছে না...খাবেন নাকি আমার পাতের কাটলেট! এঁটো হয়নি...

-দামুর কেবিনের এই কাটলেট আপনি আমায় আধ খাওয়া অবস্থায় দিলেও হ্যাপিলি অ্যাক্সেপ্ট করতাম। থ্যাঙ্ক ইউ...আর ইয়ে ম্যাজিকটা টের পেলেন তো ?

- ওই ম্যাজিক অফ দ্য মাল্টিভার্স তো ? 

- না। আদত ম্যাজিকটা...যে জাদুর বলে আপনি আপনার পাতের এ মহার্ঘ কাটলেট নির্দ্বিধায় আমায় সঁপে দিলেন...

- যা! 

Comments

Ha ha ha ha shushwaadu ending! :)
Anonymous said…
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের একটা দারুণ গল্প আছে একই রকমের।
মিঠু

Popular posts from this blog

গোয়েন্দা গল্প

- কিছু মনে করবেন না মিস্টার দত্ত...আপনার কথাবার্তাগুলো আর কিছুতেই সিরিয়াসলি নেওয়া যাচ্ছে না।  - কেন? কেন বলুন তো ইন্সপেক্টর? - ভোররাতে এই থানা থেকে একশো ফুট দূরত্বে ফুটপাথে আপনাকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।  - আপনার কনস্টেবল নিজের চোখে দেখেছে তো।  - না না, সে'টাকে আমি কোশ্চেন করছি না। আমি শুধু সামারাইজ করছি। আপনার গায়ে দামী চিকনের পাঞ্জাবী, ঘড়িটার ডায়ালও সোনার হলে অবাক হব না। এ'রকম কাউকে বড় একটা ফুটপাথে পড়ে থাকতে দেখা যায় না। যা হোক। হরিমোহন কনস্টেবলের কাঁধে ভর দিয়ে আপনি থানায় এলেন। জলটল খেয়ে সামান্য সুস্থ বোধ করলেন। অল ইজ ওয়েল। নিঃশ্বাসে অ্যালকোহলের সামান্যতম ট্রেসও নেই। শরীরে নেই কোনও চোট আঘাত।  - আমার কথা আমায় বলে কী লাভ হচ্ছে? আমি যে জরুরী ব্যাপারটা জানাতে মাঝরাতে ছুটে এসেছিলাম...সেই ব্যাপারটা দেখুন...। ব্যাপারটা আর্জেন্ট ইন্সপেক্টর মিশ্র।  - আর্জেন্সিতে পরে আসছি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ আপনি থানায় ছুটে এসেছিলেন। ওয়েল অ্যান্ড গুড। কিন্তু...ফুটপাথে পড়ে রইলেন কেন...।  - এ'টাই, এ'টাই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। মাথাটাথা ঘুরে গেছিল হয়ত। আফটার অল বা

পকেটমার রবীন্দ্রনাথ

১ । চাপা উত্তেজনায় রবীন্দ্রনাথের ভিতরটা এক্কেবারে ছটফট করছিল । তার হাতে ঝোলানো কালো পলিথিনের প্যাকেটে যে ' টা আছে , সে ' টা ভেবেই নোলা ছুকছাক আর বুক ধড়ফড় । এমনিতে আলুথালু গতিতে সে হেঁটে অভ্যস্ত । তাড়াহুড়ো তার ধাতে সয় না মোটে । কিন্তু আজ ব্যাপারটা আলাদা । সে মাংস নিয়ে ফিরছে । হোক না মোটে আড়াই ' শ গ্রাম , তবু , কচি পাঁঠা বলে কথা । সহৃদয় আলম মিয়াঁ উপরি এক টুকরো মেটেও দিয়ে দিয়েছে । তোফা ! নিজের লম্বা দাড়ি দুলিয়ে ডবল গতিতে পা চালিয়ে সে এগোচ্ছিল ।   গলির মোড়ের দিকে এসে পৌঁছতে রবীন্দ্রনাথের কেমন যেন একটু সন্দেহ হল । ঠিক যেন কেউ পিছু নিয়েছে । দু ' একবার ঘাড় ঘুরিয়েও অবশ্য কাউকে দেখা গেলনা । ভাবনা ঝেড়ে ফেলে মাংসের পাকেটটায় মন ফিরিয়ে আনলেন রবীন্দ্রনাথ । বৌ নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে আজ । খোকাটাকে যে কদ্দিন মাংসের ঝোল খাওয়ানো হয়নি ।   খাসির রান্নার গন্ধ ভেবে বড় গান পাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথের । সে বাধ্য হয়েই একটা কুমার শানুর গাওয়া আশিকি সিনেমার গান ধরলে ।

চ্যাটার্জীবাবুর শেষ ইচ্ছে

- মিস্টার চ্যাটার্জী...। - কে? - আমার নাম বিনোদ। - আমি তো আপনাকে ঠিক...। - আমায় বস পাঠিয়েছেন। - ওহ, মিস্টার চৌধুরী আপনাকে...। - বসের নামটাম নেওয়ার তো কোনও দরকার নেই। কাজ নিয়ে এসেছি। কাজ করে চলে যাব। - আসুন, ভিতরে আসুন। - আমি ভিতরে গিয়ে কী করব বলুন। সৌজন্যের তো আর তেমন প্রয়োজন নেই। আপনি চলুন আমার সঙ্গে। চটপট কাজ মিটে গেলে পৌনে এগারোটার লোকালটা পেয়ে যাব। আমায় আবার সেই সোনারপুর ফিরতে হবে। - যা করার তা কি এ'খানেই সেরে ফেলা যায়না? - এমন কনজেস্টেড এলাকায় ও'সব কাজ করা চলেনা। চুপচাপ ব্যাপারটা সেরে ফেলতে হবে। - প্লীজ দু'মিনিটের জন্য ভিতরে আসুন বিনোদবাবু। জামাটা অন্তত পালটে নিই। - কী দরকার বলুন জামা পালটে। - দরকার তেমন নেই। তবু। ওই, লাস্ট উইশ ধরে নিন। - ক্যুইক প্লীজ। ট্রেন ধরার তাড়াটা ভুলে যাবেন না। আর ইয়ে, পিছন দিক দিয়ে পালাতে চেষ্টা করে লাভ নেই। বসের লোকজন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। - ও মা, ছি ছি। তা নয়। আসলে মিতুলের দেওয়া একটা জামা এখনও ভাঙা হয়নি। বাটিক প্রিন্টের হাফশার্ট। একটু ব্রাইট কালার কিন্তু বেশ একটা ইয়ে আছে। ও চলে যাওয়ার পর ও জামার ভাজ ভাঙতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু...আজ না হয়...। - মিতু