অফিসের বিপিনদা ঢাকনা হারাতে অভ্যস্ত। সুনিপুন ভাবে একের পর এক হারিয়ে যান কলমের ঢাকনা, পেন-ড্রাইভের ঢাকনা, ইন্টারনেট ডঙ্গেলের ঢাকনা; এমনকি নিজের টিফিন বক্সের
ঢাকনা পর্যন্ত। বিপিনদা অফিসে ঢাকনার ব্ল্যাক-হোল
বলে পরিচিত। অবাঙ্গালি কিউবিকেল সঙ্গী অমরনাথ
তার এই ঢাকনা হারানোর গুণের জন্যেই তাকে ঢক্কন-কুমার বলে সম্বোধন করে থাকেন।
বিপিনদা সিধে-সরল মানুষ; ভীষণ বিব্রত
হয়ে পড়েন। নিজে এখন ঢাকনা বিহীন ডট পেন, পেন ড্রাইভ ব্যবহার করেন; টিফিনের ঢাকনা হারানোর ভয়ে টিফিন আনেন না, এমনকি জলের
বোতলও রাখেন না নিজের আওতায়; ঢাকনা হারানোর ভয়ে। তবু যখনই অন্য কারোর ঢাকনা-বিশিষ্ট কোনও বস্তু বিপিনদার
আশেপাশে এসে পড়ে; তারা চট করে স্কন্ধকাটা হয়ে পড়ে।
অফিসে নতুন সহকর্মীনী এসেছেন তন্বী তনুশ্রীদেবী।
আদ্যোপান্ত ঝকঝকে; কিউবিকেল আলো করে রাখা শিফনে অফিস আসেন। তনুশ্রী দেবীর মখমলে কণ্ঠ-স্বর, ফিনফিনে শব্দে খসে পড়া শাড়ির আঁচল; সব মিলে অফিসে ত্রাহি-ত্রাহি রব। তনুশ্রী বিপিনবাবুর ঢাকনা-পনা সবে জেনেছেন, আত্মস্থ করতে পারেননি। কী প্রয়োজনে ঢাকনা সহ পেন ড্রাইভ বিপিনদা কে দিয়েছিলেন। দু মিনিটের ব্যাপার। পি সি সরকারের ক্ষিপ্রতায় বিপিনদা হারিয়ে দিলে পেন-ড্রাইভের ঢাকনা।
আদ্যোপান্ত ঝকঝকে; কিউবিকেল আলো করে রাখা শিফনে অফিস আসেন। তনুশ্রী দেবীর মখমলে কণ্ঠ-স্বর, ফিনফিনে শব্দে খসে পড়া শাড়ির আঁচল; সব মিলে অফিসে ত্রাহি-ত্রাহি রব। তনুশ্রী বিপিনবাবুর ঢাকনা-পনা সবে জেনেছেন, আত্মস্থ করতে পারেননি। কী প্রয়োজনে ঢাকনা সহ পেন ড্রাইভ বিপিনদা কে দিয়েছিলেন। দু মিনিটের ব্যাপার। পি সি সরকারের ক্ষিপ্রতায় বিপিনদা হারিয়ে দিলে পেন-ড্রাইভের ঢাকনা।
তনুশ্রীদেবী বুকের ফস্কে যাওয়া শিফন-আঁচল সামলানোর অলস চেষ্টা করতে করতে রাগত স্বরে
বলে ফেললেন –“আপনি একটা ফালতু মশাই, একটা
পেন-ড্রাইভের ঢাকনা সামলে রাখতে পারেন না?”
অমনি বিপিনদার কিউবিকেলের চার দিক থেকে প্রবল অট্টহাস্য।
আচমকা কী যে হলো বিপিনদার। ইস্ট বেঙ্গল গ্যালারির আহত বাঙাল জেগে উঠলো বিপিনদার
বুকে। সামান্য ঢাকনা হারানোর জন্যে
সুন্দরী স্খলিত আঁচলা নারী বেমক্কা “ফালতু” বলে গাল পাড়বে, এইটা বোধ হয় হজম করতে
পারেননি ঢক্কন-কুমার। রাগের চোটে বিপিনদার ভিতরের ইস্ট বেঙ্গল গ্যালারিও
বদ-মেজাজী বাঙালটি জেগে উঠলো :
“ দ্যাখেন ম্যাডাম, আগে নিজের বুক জোড়ের ঢাকনা সামাল দ্যান,
আঁচলখান ম্যানেজ করেন! তাইর পর আমার পেন ড্রাইভের মুণ্ডু লইয়া
কাউনসেল করতে আইবেন। ফালতু কইলেন কারে শুনি?”
এর পর অমরনাথ আর ভুলেও কোনওদিন বিপিনদাকে ঢক্কন-কুমার বলে খেউর করেন নি।
No comments:
Post a Comment